ওসির স্বেচ্ছাচারিতা-এসপিকেও জিডি করতে হয়!
জেলার অধীন থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ কর্তারা এসপির নির্দেশকে আমলে নেবেন এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু রাজধানী সংলগ্ন টঙ্গী থানার পুলিশ কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে এসপির থানায় জিডি করা থেকে ধারণা করা যায়, প্রশাসনের সাধারণ নিয়ম কাজ করছে না। সোমবার সমকালে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত রিপোর্টে দেখা যায়, এসপি টঙ্গী থানা পরিদর্শনে এসে দেখতে পান সেখানে ৮ ব্যক্তিকে বিনা অপরাধে শুধু মোটা অঙ্কের উৎকোচ আদায়ের জন্য আটকে রেখে নির্যাতন চালানো
হয়েছে। আতঙ্কজনক হলো, যাদের ধরে আনা হয়েছে তাদের নাম পর্যন্ত থানায় নথিভুক্ত করা হয়নি। পুলিশি নির্যাতনের এক পর্যায়ে যদি কোনো মানুষ মারা যায়, তাহলে তাকে কি বেওয়ারিশ লাশ অথবা বেখবর হয়ে যেতে হবে? টঙ্গী থানার পুলিশ কর্মকর্তার মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার কোন বদউদ্দেশ্য ছিল আমরা তা বলতে চাচ্ছি না। তবে এ প্রশ্ন নিশ্চয়ই করা যায় যে, এভাবে সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে শুধু অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে থানায় এনে নির্যাতন করার জন্য তাকে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। পুলিশের দায়িত্ব হলো অপরাধীদের পাকড়াও করে আদালতের মাধ্যমে তার শাস্তি নিশ্চিত করা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের হেফাজত করা। অথচ টঙ্গী থানার ওসি ঠিক উল্টো কাজটাই করলেন। এতে অপরাধী আর আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিতদের মধ্যে ফারাক থাকে কি! টঙ্গী থানার ওসির বিরুদ্ধে থানায় জিডি করার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, এসপি ওই পুলিশ কর্মকর্তার ক্ষমতার বহর সম্পর্কে বেশ অবগত। ওসির মামুর জোর শক্তিশালী বলেই হয়তো এসপি তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলেও তা কার্যকর করতে পারবেন না বলেই থানায় জিডি করে হলেও ওসির অন্যায় কর্মকাণ্ডের একটা বিহিত করতে চেয়ে থাকবেন। এ ধরনের শক্তিশালী ওসির সংখ্যা বাংলাদেশে কম নেই। মন্ত্রী, এমপি, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের শক্তিশালী নেতার আজ্ঞাবহ হয়ে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ধরাকে সরা জ্ঞান করেন। আর এ কারণেই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সদিচ্ছা থাকার পরও দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নতি হয় না। আমরা টঙ্গী থানার ওসির বিরুদ্ধে ত্বরিত বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এতে প্রশাসনে অন্যায়ভাবে ক্ষমতা প্রদর্শনকারী ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা কিছুটা হলেও বিচলিত হবেন। সৎ সাহস দেখানোর জন্য এসপিকে ধন্যবাদ।
No comments