তত্ত্বাবধায়ক সমস্যার সমাধান করুন- প্রেসিডেন্টের প্রতি খালেদা
স্টাফ রিপোর্টার: প্রেসিডেন্টের সংলাপকে ফলপ্রসূ করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি আলোচনার এজেন্ডাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সবকিছুর ঊর্ধ্বে তাই তার সংলাপের আমন্ত্রণকে পৃষ্ঠা ২০ কলাম ৪
সম্মান জানিয়েছি। কিন্তু ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দিয়ে কোন লাভ নেই। সংলাপকে ফলপ্রসূ করতে চাইলে আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমস্যা সমাধান করুন। সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়টি এজেন্ডায় রাখুন। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে এ আহ্বান জানান। সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধকে বাণিজ্যে পরিণত করেছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা নিয়েই অনেক প্রশ্ন আছে। জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে থাকায় তারা যুদ্ধাপরাধীর দল হয়ে গেছে, কিন্তু ১৯৮৬ সালে এ জামায়াতকে সঙ্গে নিয়েই এরশাদের পাতানো নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেদিন তাদের পাশে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও। এমনকি ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির আন্দোলনেও জামায়াতকে পাশে বসিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন জামায়াতে ইসলামী ছিল তাদের বন্ধু আর এখন যুদ্ধাপরাধী। তিনি বলেন, এখন স্বৈরাচারী এরশাদকে নিয়ে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে আওয়ামী লীগ। এ এরশাদকে স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। ১৯৭১ সালে তার ভূমিকা খুঁজে দেখুন। দেখা যাবে তিনি স্বাধীনতার পক্ষের লোক নন। তাই তাকে বিরোধী দল বানিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতিকে রাজপ্রাসাদ থেকে গ্রামের কুঁড়েঘর পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম দুর্নীতি হয়েছে বিদ্যুৎখাতে। তিনি বলেন, বাকশালের গভর্নরদের মতো সারা দেশে দলীয় জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচিত এমপি থেকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পর্যন্ত কাউকে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের মাথার ওপর বসিয়ে দেয়া হচ্ছে দলীয় প্রশাসক। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই শেয়ারবাজার লুট হয়। এমন লুটের তদন্ত শেষে এমন ক্ষমতাবানদের নাম এসেছে যে অর্থমন্ত্রী তা প্রকাশেরই সাহস পাননি। খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, ঘরে ও বাইরে এখন দেশে কারও নিরাপত্তা নেই। সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে খুন-গুমের রাজনীতি চালাচ্ছে। বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের গুম-গুপ্তহত্যা করা হচ্ছে। এমনকি চৌধুরী আলমের মতো একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিও রক্ষা পাননি। তিনি বলেন, যে র্যাবকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী ধরতে গঠন করা হয়েছিল এখন তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধী দল দমনে। এ সরকার তাদের অকার্যকর ও বিতর্কিত করে ফেলেছে। আমরা সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সাহস পায়নি। তারা ভয় পেয়ে উল্টো গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সকল পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। বাতিল করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি। এখন তারা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড খেলছে। তবে আমি সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা এ আত্মবিনাশী গণতন্ত্র হত্যার পথ থেকে বেরিয়ে আসুন। খালেদা জিয়া বলেন, সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ আজ সারা দেশে আতঙ্কের নাম। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করছে, শিক্ষকরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। ছাত্রলীগ বোমা আর চাপাতি লীগে পরিণত হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগের সময়ে চাঁদাবাজি, লুটপাট, নারী নির্যাতনে তাদের বাধা দেয়া হয় না। তাদের কাছে পুলিশ প্রশাসনও অসহায়। তারা থানায় হামলা করছে, আসামি ছিনিয়ে নিচ্ছে- কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। এ ছাত্রলীগই নেতাদের মনোরঞ্জনে ইডেন কলেজের মেয়েদের বাধ্য করছে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন পুলিশ ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ছাত্রদলসহ বিরোধী মতের সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সেখানে নিষিদ্ধ। ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থকদের একাডেমিক ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা ক্লাসে যেতে পারছে না, পরীক্ষা দিতে পারছে না। আর ভিসি নির্বিকার। ভিসির এ এজেন্ডা বাস্তবায়নের মানসিকতা দুঃখজনক। তাকেই পদক্ষেপ নিতে হবে যেন সবগুলো ছাত্র সংগঠন সেখানে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা চালাতে পারে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বিদেশী চলচ্চিত্র আনার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। প্রতিবেশী দেশের চিন্তা-চেতনায় এ দেশের নতুন প্রজন্ম বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতেই বিদেশী চলচ্চিত্র আমদানির সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে এটা বেশি দিন চলবে না। তিনি ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন- তোমরা আমার সন্তানের মতোই প্রিয়। তোমাদের আমি কখনও ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করিনি। তোমাদের কাছে আমি রক্ত চাই না, লাশ চাই না। পড়ালেখার পাশাপাশি তোমরা সাংগঠনিক তৎপরতা চালাবে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ভূমিকা রাখবে। শুধু মিছিল-মিটিং করলে হবে না, সৃজনশীল ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের চর্চা করতে হবে। তিনি বলেন, পদের জন্য রাজনীতি করলে হবে না। অনেক যোগ্য ও মেধাবীকেও পদের অভাবে পদায়ন সম্ভব হবে না। তখন কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না। পদ নিয়ে কোন কোটারি স্বার্থও চরিতার্থ করতে দেয়া হবে না। মেধাবী-যোগ্য-সৎ এবং দলের প্রতি আনুগত্যকে নতুন কমিটি গঠনে প্রাধান্য দেয়া হবে। কারণ, সৎ না হলে বস্তা বস্তা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যারা লোভ আর ভয়কে এড়িয়ে এগিয়ে যেতে পারবে তারাই পাবে নেতৃত্ব। খালেদা জিয়া বলেন, ছাত্রদলকে সাবধান থাকতে হবে। যাতে ষড়যন্ত্রকারীদের কেউ নিজেদের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে না পারে। তবে যারা অতীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল তারা মূলধারায় থাকতে পারেনি। ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটিসহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েক জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টায় পায়রা উড়িয়ে এবং পতাকা উত্তোলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী পালন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর বেলুন উড়িয়ে, জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন। তিনি বলেন, গত বছর ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির ৬টি পূর্ণাঙ্গ সভা ও ২০টি জরুরি সভাসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় সারা দেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে জেলা ইউনিটকে ১২টি সাংগঠনিক টিমে বিভক্ত করা হয়। এ সময় ২৭টি জেলায় ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও গত এক বছরে সংগঠন কর্মিসভা, কর্মশালা ও বছরের শেষদিকে ধামরাইয়ে একটি ছাত্র গণজমায়েত করে। এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রদলের পদবিধারী ও পদবঞ্চিত দু’পক্ষই শোডাউন করে। বিশেষ করে বঞ্চিত নেতা আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন ও তরুণ নেতার মধ্যে মামুনুর রশীদ মামুনের শোডাউন ছিল বড় আকারের। এছাড়াও ছাত্রদলের বিভিন্ন সারির নেতাদের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।
সম্মান জানিয়েছি। কিন্তু ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দিয়ে কোন লাভ নেই। সংলাপকে ফলপ্রসূ করতে চাইলে আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমস্যা সমাধান করুন। সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়টি এজেন্ডায় রাখুন। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে এ আহ্বান জানান। সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধকে বাণিজ্যে পরিণত করেছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা নিয়েই অনেক প্রশ্ন আছে। জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে থাকায় তারা যুদ্ধাপরাধীর দল হয়ে গেছে, কিন্তু ১৯৮৬ সালে এ জামায়াতকে সঙ্গে নিয়েই এরশাদের পাতানো নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেদিন তাদের পাশে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও। এমনকি ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির আন্দোলনেও জামায়াতকে পাশে বসিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন জামায়াতে ইসলামী ছিল তাদের বন্ধু আর এখন যুদ্ধাপরাধী। তিনি বলেন, এখন স্বৈরাচারী এরশাদকে নিয়ে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে আওয়ামী লীগ। এ এরশাদকে স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। ১৯৭১ সালে তার ভূমিকা খুঁজে দেখুন। দেখা যাবে তিনি স্বাধীনতার পক্ষের লোক নন। তাই তাকে বিরোধী দল বানিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতিকে রাজপ্রাসাদ থেকে গ্রামের কুঁড়েঘর পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম দুর্নীতি হয়েছে বিদ্যুৎখাতে। তিনি বলেন, বাকশালের গভর্নরদের মতো সারা দেশে দলীয় জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচিত এমপি থেকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পর্যন্ত কাউকে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের মাথার ওপর বসিয়ে দেয়া হচ্ছে দলীয় প্রশাসক। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই শেয়ারবাজার লুট হয়। এমন লুটের তদন্ত শেষে এমন ক্ষমতাবানদের নাম এসেছে যে অর্থমন্ত্রী তা প্রকাশেরই সাহস পাননি। খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, ঘরে ও বাইরে এখন দেশে কারও নিরাপত্তা নেই। সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে খুন-গুমের রাজনীতি চালাচ্ছে। বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের গুম-গুপ্তহত্যা করা হচ্ছে। এমনকি চৌধুরী আলমের মতো একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিও রক্ষা পাননি। তিনি বলেন, যে র্যাবকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী ধরতে গঠন করা হয়েছিল এখন তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধী দল দমনে। এ সরকার তাদের অকার্যকর ও বিতর্কিত করে ফেলেছে। আমরা সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সাহস পায়নি। তারা ভয় পেয়ে উল্টো গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সকল পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। বাতিল করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি। এখন তারা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড খেলছে। তবে আমি সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা এ আত্মবিনাশী গণতন্ত্র হত্যার পথ থেকে বেরিয়ে আসুন। খালেদা জিয়া বলেন, সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ আজ সারা দেশে আতঙ্কের নাম। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করছে, শিক্ষকরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। ছাত্রলীগ বোমা আর চাপাতি লীগে পরিণত হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগের সময়ে চাঁদাবাজি, লুটপাট, নারী নির্যাতনে তাদের বাধা দেয়া হয় না। তাদের কাছে পুলিশ প্রশাসনও অসহায়। তারা থানায় হামলা করছে, আসামি ছিনিয়ে নিচ্ছে- কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। এ ছাত্রলীগই নেতাদের মনোরঞ্জনে ইডেন কলেজের মেয়েদের বাধ্য করছে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন পুলিশ ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ছাত্রদলসহ বিরোধী মতের সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সেখানে নিষিদ্ধ। ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থকদের একাডেমিক ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা ক্লাসে যেতে পারছে না, পরীক্ষা দিতে পারছে না। আর ভিসি নির্বিকার। ভিসির এ এজেন্ডা বাস্তবায়নের মানসিকতা দুঃখজনক। তাকেই পদক্ষেপ নিতে হবে যেন সবগুলো ছাত্র সংগঠন সেখানে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা চালাতে পারে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বিদেশী চলচ্চিত্র আনার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। প্রতিবেশী দেশের চিন্তা-চেতনায় এ দেশের নতুন প্রজন্ম বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতেই বিদেশী চলচ্চিত্র আমদানির সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে এটা বেশি দিন চলবে না। তিনি ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন- তোমরা আমার সন্তানের মতোই প্রিয়। তোমাদের আমি কখনও ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করিনি। তোমাদের কাছে আমি রক্ত চাই না, লাশ চাই না। পড়ালেখার পাশাপাশি তোমরা সাংগঠনিক তৎপরতা চালাবে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ভূমিকা রাখবে। শুধু মিছিল-মিটিং করলে হবে না, সৃজনশীল ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের চর্চা করতে হবে। তিনি বলেন, পদের জন্য রাজনীতি করলে হবে না। অনেক যোগ্য ও মেধাবীকেও পদের অভাবে পদায়ন সম্ভব হবে না। তখন কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না। পদ নিয়ে কোন কোটারি স্বার্থও চরিতার্থ করতে দেয়া হবে না। মেধাবী-যোগ্য-সৎ এবং দলের প্রতি আনুগত্যকে নতুন কমিটি গঠনে প্রাধান্য দেয়া হবে। কারণ, সৎ না হলে বস্তা বস্তা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যারা লোভ আর ভয়কে এড়িয়ে এগিয়ে যেতে পারবে তারাই পাবে নেতৃত্ব। খালেদা জিয়া বলেন, ছাত্রদলকে সাবধান থাকতে হবে। যাতে ষড়যন্ত্রকারীদের কেউ নিজেদের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে না পারে। তবে যারা অতীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল তারা মূলধারায় থাকতে পারেনি। ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটিসহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েক জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টায় পায়রা উড়িয়ে এবং পতাকা উত্তোলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী পালন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর বেলুন উড়িয়ে, জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন। তিনি বলেন, গত বছর ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির ৬টি পূর্ণাঙ্গ সভা ও ২০টি জরুরি সভাসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় সারা দেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে জেলা ইউনিটকে ১২টি সাংগঠনিক টিমে বিভক্ত করা হয়। এ সময় ২৭টি জেলায় ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও গত এক বছরে সংগঠন কর্মিসভা, কর্মশালা ও বছরের শেষদিকে ধামরাইয়ে একটি ছাত্র গণজমায়েত করে। এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রদলের পদবিধারী ও পদবঞ্চিত দু’পক্ষই শোডাউন করে। বিশেষ করে বঞ্চিত নেতা আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন ও তরুণ নেতার মধ্যে মামুনুর রশীদ মামুনের শোডাউন ছিল বড় আকারের। এছাড়াও ছাত্রদলের বিভিন্ন সারির নেতাদের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।
No comments