দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ইরান-এটি ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম

রোববার মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর এক দিন পর গতকাল সোমবার দূরপাল্লার দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ইরান। হরমুজ প্রণালিতে সামরিক মহড়ার শেষ দিনে এ ক্ষেপণাস্ত্র দুটির পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা। ইরানি নৌবাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার মাহমুদ মোসার উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থ্থাটি জানায়, উপকূল থেকে সমুদ্রে নিক্ষেপণযোগ্য 'কাদের' নামের একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা


চালিয়েছি আমরা। ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলের যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এ ক্ষেপণাস্ত্রটি যে কোনো ধরনের রাডার ফাঁকি দিতেও সক্ষম। এ ছাড়া এটি ইসরায়েল এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটিতে আঘাত হানতে সক্ষম। খবর এএফপি, রয়টার্স, সিএনএন।
একই দিন এর আগে 'নুর' নামে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়। উপসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের সামরিক শক্তির প্রকাশ ঘটাতেই ইরান এ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। মহড়ার শেষ দিন পর্যবেক্ষক হিসেবে সিরীয় সামরিক কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। এদিকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার স্বাক্ষরের পর এক প্রতিক্রিয়ায় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেন, তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক শত্রুদের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী। তিনি বলেন, ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশটির মেরুদণ্ড এবং শত্রুদের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করার মতো সামর্থ্য তাদের রয়েছে। সম্প্রতি ইরান হুমকি দেয়, তেহরানের ওপর তেল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ প্রতিহত করা হবে বলে পাল্টা হুমকি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পারমাণবিক জ্বালানি ধাতব রড তৈরি : এদিকে ইরানের বিজ্ঞানীরা পরমাণু জ্বালানির ধাতব রড (ফুয়েল রড) তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স। এক দিন আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বে আলোচনায় ফেরার প্রস্তাব দেওয়ার পর পারমাণবিক জ্বালানি রড তৈরির ঘোষণা দিল ইরান।
ইরানের বিজ্ঞানীদের এ সাফল্য দেশটির পরমাণু সক্ষমতাকে নতুন করে প্রমাণ করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর আগে পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ইরানের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পরমাণু জ্বালানির ধাতব রড কিনতে ব্যর্থ হওয়ার পর নিজেদের প্রযুক্তি দিয়ে এটি তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছিল তেহরান। এ ধাতব রড ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ করার পর তা পরমাণু চুলি্ল চালানোর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পারমাণবিক দণ্ডটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন পরমাণু গবেষণাগারের চুলি্লতে স্থাপন করা হয়েছে। পশ্চিমারা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, ইরান পরমাণু কর্মসূচির আড়ালে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ইরান বরাবরই তা অস্বীকার করে বলছে, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য তারা পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

No comments

Powered by Blogger.