সংখ্যা নয়, মানবিকতাই মুখ্য-প্রতিবন্ধী by মোঃ মোতাহের হোসেন
কথা হচ্ছে_ দেশের বা বিদেশের প্রতিবন্ধীরা হোটেল বা পর্যটন হোটেলে ক'জন থাকবে না থাকবে_ সেটা পরের কথা। প্রতিটি হোটেলে প্রতিবন্ধীদের জন্য দু'একটা রুমের ব্যবস্থা থাকা দরকার। যে রুমে একজন সুস্থ লোকও থাকতে পারেন
গত এক দশক ধরে জাপানে আমি একটা এনপিওতে (নন-প্রফিটেবল অর্গানাইজেশন) কাজ করছি। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আমার কাজ। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজটি এমনই, যেখানে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন হয় এবং ভালো
গত এক দশক ধরে জাপানে আমি একটা এনপিওতে (নন-প্রফিটেবল অর্গানাইজেশন) কাজ করছি। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আমার কাজ। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজটি এমনই, যেখানে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন হয় এবং ভালো
সময় কাটে। যেমন_ প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে গত নভেম্বরে টোকিওর সেনাগাওয়াতে একটি আলোচনা সভায় অংশ নিই। সভাটা ছিল মূলত টোকিও শহরের মধ্য দিয়ে চলাচল করে এমন ৮টি রেলওয়ে কোম্পানির ১৬ জন প্রতিনিধির সঙ্গে নানারকম শারীরিক প্রতিবন্ধী ২৫ জন, যাদের সবাই হুইল চেয়ারে করে এসেছিলেন। সেখানে প্রতিবন্ধীরা ট্রেনে চলাচল করতে গিয়ে যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হন তার ওপর ভিত্তি করে দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এ সময় প্রতিবন্ধীরা নির্দিষ্টভাবে স্টেশন ও ট্রেনের কিছু দোষ-ত্রুটি তুলে ধরেন। ৩ ঘণ্টাব্যাপী এ সভার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিবন্ধীরা যেভাবে আক্রমণাত্মক এবং রাগান্বিত হয়ে কথা বলছিল তা চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। এ সময় রেল কোম্পানির লোকজন অপরাধীর মতো তাদের নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা বলার চেষ্টা করে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয়।
টোকিও শহরে অথবা জাপানে প্রতিবন্ধীদের জন্য সহজভাবে চলাফেরা, ওঠাবসা, বাজারঘাট করা, টয়লেটসহ সব জায়গাতেই বিশেষ ধরনের সুন্দর ও আধুনিক ব্যবস্থা আছে। এ দেশের সাধারণ লোকজনের দৃষ্টিভঙ্গিও যথেষ্ট সংবেদনশীল। তারপরও প্রতিবন্ধীদের কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন। বলা যায় তাৎক্ষণিকভাবে তার সমাধান হয়। জাপান খুব ব্যয়বহুল দেশ। বাড়ি ভাড়াও খুব বেশি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যাদের জাপানে বাড়ি বাড়া করে দূতাবাস খোলার সামর্থ্য নেই। সে ক্ষেত্রে কিছু দেশ একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে তাদের দূতাবাসের কাজ চালায়। আমাদের বাংলাদেশ টোকিওর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দোতলাবিশিষ্ট দুটি বাড়ি ভাড়া করে দূতাবাস গড়ে তুলছে। এ নিয়েও একটা সরকারের সময় অনেক কথা শোনা গিয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো, টোকিওতে বাংলাদেশের আগের এক প্রতিবন্ধী রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের একতলা থেকে দোতলায় তার অফিস কক্ষে ওঠার জন্য অনেক টাকা খরচ করে সিঁড়ির হাতলের সঙ্গে বিশেষ ধরনের লিফ্ট লাগিয়ে নিয়েছিলেন। উপরে ওঠার জন্য ওভাবে কসরত বা লাখ লাখ টাকা খরচ না করে তিনি নিচতলাতেই অফিস করার ব্যবস্থা করতে পারতেন। অথচ আমাদের দূতাবাসে হুইল চেয়ার নিয়ে ভেতরে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। আশা করছি আগামী দু'এক বছরের মধ্যে টোকিওতে বাংলাদেশ সরকারের কেনা জায়গায় নিজস্ব অর্থায়নে দূতাবাস গড়ে উঠবে। আশা করি, এ নতুন দূতাবাস ভবনে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ করা ও চলাফেরার ভালো ব্যবস্থা থাকবে।
মাসতিনেক আগে ঢাকা শহরে হোটেল বা গেস্ট হাউসে প্রতিবন্ধীদের থাকা-খাওয়ার সুযোগ-সুবিধা কেমন আছে না আছে সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় এক ভদ্রলোকের বক্তব্য ছিল ভালো মানুষই থাকার জায়গা পায় না, আবার প্রতিবন্ধী? শেষে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করি এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য কী ব্যবস্থা আছে জানতে চাই। কিন্তু বাংলাদেশে পর্যটনের কোনো হোটেল, রেস্টুুরেন্টে বা স্থানে এদের জন্য সামান্যতম কোনো ব্যবস্থা নেই। শেষে চেয়ারম্যান যেটা বললেন তা হলো_ প্রতিবন্ধীদের জন্য হোটেলে রুম তিনি করে দিতে পারবেন, সমস্যা নেই। তবে কোন ধরনের রুম হবে (?), অন্তত এক মাস আগে তার একটা নমুনা ছবি দেখতে চান। বাইরের দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী পর্যটক যাওয়ার নিশ্চয়তা কতখানি সে ব্যাপারেও তিনি কিছুটা নিশ্চিত হতে চান। অর্থাৎ তিনি হয়তো বলতে চাইছেন, টাকা খরচ করে রুম করার পর যদি প্রতিবন্ধী গেস্ট না আসেন তখন কী হবে। কথা হচ্ছে_ দেশের বা বিদেশের প্রতিবন্ধীরা হোটেল বা পর্যটন হোটেলে ক'জন থাকবে না থাকবে_ সেটা পরের কথা। প্রতিটি হোটেলে প্রতিবন্ধীদের জন্য দু'একটা রুমের ব্যবস্থা থাকা দরকার। যে রুমে একজন সুস্থ লোকও থাকতে পারেন।
মোঃ মোতাহের হোসেন : জাপান প্রবাসী
hossainbj786@yahoo.com
টোকিও শহরে অথবা জাপানে প্রতিবন্ধীদের জন্য সহজভাবে চলাফেরা, ওঠাবসা, বাজারঘাট করা, টয়লেটসহ সব জায়গাতেই বিশেষ ধরনের সুন্দর ও আধুনিক ব্যবস্থা আছে। এ দেশের সাধারণ লোকজনের দৃষ্টিভঙ্গিও যথেষ্ট সংবেদনশীল। তারপরও প্রতিবন্ধীদের কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন। বলা যায় তাৎক্ষণিকভাবে তার সমাধান হয়। জাপান খুব ব্যয়বহুল দেশ। বাড়ি ভাড়াও খুব বেশি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যাদের জাপানে বাড়ি বাড়া করে দূতাবাস খোলার সামর্থ্য নেই। সে ক্ষেত্রে কিছু দেশ একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে তাদের দূতাবাসের কাজ চালায়। আমাদের বাংলাদেশ টোকিওর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দোতলাবিশিষ্ট দুটি বাড়ি ভাড়া করে দূতাবাস গড়ে তুলছে। এ নিয়েও একটা সরকারের সময় অনেক কথা শোনা গিয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো, টোকিওতে বাংলাদেশের আগের এক প্রতিবন্ধী রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের একতলা থেকে দোতলায় তার অফিস কক্ষে ওঠার জন্য অনেক টাকা খরচ করে সিঁড়ির হাতলের সঙ্গে বিশেষ ধরনের লিফ্ট লাগিয়ে নিয়েছিলেন। উপরে ওঠার জন্য ওভাবে কসরত বা লাখ লাখ টাকা খরচ না করে তিনি নিচতলাতেই অফিস করার ব্যবস্থা করতে পারতেন। অথচ আমাদের দূতাবাসে হুইল চেয়ার নিয়ে ভেতরে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। আশা করছি আগামী দু'এক বছরের মধ্যে টোকিওতে বাংলাদেশ সরকারের কেনা জায়গায় নিজস্ব অর্থায়নে দূতাবাস গড়ে উঠবে। আশা করি, এ নতুন দূতাবাস ভবনে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ করা ও চলাফেরার ভালো ব্যবস্থা থাকবে।
মাসতিনেক আগে ঢাকা শহরে হোটেল বা গেস্ট হাউসে প্রতিবন্ধীদের থাকা-খাওয়ার সুযোগ-সুবিধা কেমন আছে না আছে সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় এক ভদ্রলোকের বক্তব্য ছিল ভালো মানুষই থাকার জায়গা পায় না, আবার প্রতিবন্ধী? শেষে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করি এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য কী ব্যবস্থা আছে জানতে চাই। কিন্তু বাংলাদেশে পর্যটনের কোনো হোটেল, রেস্টুুরেন্টে বা স্থানে এদের জন্য সামান্যতম কোনো ব্যবস্থা নেই। শেষে চেয়ারম্যান যেটা বললেন তা হলো_ প্রতিবন্ধীদের জন্য হোটেলে রুম তিনি করে দিতে পারবেন, সমস্যা নেই। তবে কোন ধরনের রুম হবে (?), অন্তত এক মাস আগে তার একটা নমুনা ছবি দেখতে চান। বাইরের দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী পর্যটক যাওয়ার নিশ্চয়তা কতখানি সে ব্যাপারেও তিনি কিছুটা নিশ্চিত হতে চান। অর্থাৎ তিনি হয়তো বলতে চাইছেন, টাকা খরচ করে রুম করার পর যদি প্রতিবন্ধী গেস্ট না আসেন তখন কী হবে। কথা হচ্ছে_ দেশের বা বিদেশের প্রতিবন্ধীরা হোটেল বা পর্যটন হোটেলে ক'জন থাকবে না থাকবে_ সেটা পরের কথা। প্রতিটি হোটেলে প্রতিবন্ধীদের জন্য দু'একটা রুমের ব্যবস্থা থাকা দরকার। যে রুমে একজন সুস্থ লোকও থাকতে পারেন।
মোঃ মোতাহের হোসেন : জাপান প্রবাসী
hossainbj786@yahoo.com
No comments