দরপত্র মূল্যায়নের আগেই সিদ্ধান্ত? by অনিকা ফারজানা
দরপত্র মূল্যায়নের প্রক্রিয়া শেষ না করেই আন্তর্জাতিক গেটওয়ে লাইসেন্স কাকে দেওয়া হবে, সরকার সে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র প্রথম আলোর কাছে এ কথা উল্লেখ করে বলেছে, এবারের লাইসেন্সগুলো মূলত ‘রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতার ভিত্তিতে’ দেওয়া হবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ডাকা দরপত্রে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে লাইসেন্সের দরপত্র জমা পড়েছে ১৫৩টি। এর মধ্যে আইজিডব্লিউ
(ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে) ৪৩টি, আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) ৫৯টি এবং আইসিএক্স (ইন্টারন্যাশনাল কানেকশন এক্সচেঞ্জ) ৫১টি।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সব মিলিয়ে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নাম লাইসেন্সের জন্য ইতিমধ্যে সুপারিশ করেছে বিটিআরসির কাছে। কারিগরি দক্ষতা নয়, মূলত রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতার ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠানের নাম সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বিভিন্ন ধরনের গেটওয়ে লাইসেন্স প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘যা কিছু হচ্ছে, তা সবই আইন মেনে হচ্ছে।’
জানা গেছে, বিটিআরসি আইআইজি লাইসেন্স নিয়ে দরপত্র আহ্বান করলেও মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে সুপারিশ করেছে আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রোরিয়েল কেবল) লাইসেন্স পাওয়া পাঁচ কোম্পানিকে আইআইজি লাইসেন্স দিতে। গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ, আইআইজি ও আইসিএক্স) লাইসেন্সের নীতিমালায় সর্বোচ্চ কতটি লাইসেন্স দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
এদিকে বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে আইটিসি লাইসেন্সপ্রাপ্তরা কেউই ওই লাইসেন্স নিতে রাজি হচ্ছে না। তারা আইটিসির পাশাপাশি আইআইজি লাইসেন্সও চাইছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, আইটিসি লাইসেন্সের মনোনয়নপ্রাপ্ত ম্যাংগো টেলিসার্ভিসের ইতিমধ্যেই আইআইজি লাইসেন্স ও অবকাঠামো রয়েছে। ম্যাংগোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে বাকিদেরও আইআইজি লাইসেন্স লাগবে।
বিষয়টি স্বীকার করে বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আইটিসি লাইসেন্সপ্রাপ্তরা ‘বিশেষ আবদার’ নিয়ে মন্ত্রণালয়েও গিয়েছে।
সম্প্রতি আইটিসি লাইসেন্সের নীতিমালার শর্ত ভেঙে সরকার তিনটির জায়গায় ছয়টি লাইসেন্স দেয়। বিটিআরসির অভিযোগ, এ ব্যাপারে তাদের কোনো যুক্তি শুনতে রাজি হয়নি মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতেও হইচই হয়েছে। বিটিআরসি সূত্র বলেছে, ‘মন্ত্রণালয়ের চাপে বাধ্য হয়ে’ তিনটির জায়গায় ছয়টি আইটিসি লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরির স্বার্থেই এতগুলো লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।’ আইটিসি নীতিমালার শর্ত ভঙ্গ করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘নীতিমালা তৈরি হয় জনগণের স্বার্থে, প্রয়োজনে তা সংশোধন করা হবে।’ মন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, লাইসেন্সের সংখ্যা বাড়ানোয় গ্রাহক সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা পাবে।
ভিএসপি লাইসেন্সের উদ্যোগ: আইজিডব্লিউ, আইআইজি ও আইসিএক্সের পাশাপাশি ভিওআইপি ব্যবসার জন্য ভিওআইপি সার্ভিস প্রোভাইডার (ভিএসপি) নামের আরও এক ধরনের লাইসেন্স দিতে যাচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক নেতাসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যবসা বৈধ করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
একজন টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ প্রথম আলোকে বলেন, ভিওআইপি প্রযুক্তিটি উন্মুক্ত বলে এ ধরনের লাইসেন্সের ব্যবস্থা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই।
টেলিযোগাযোগ-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এ বিষয়ে বলেন, ‘বিটিআরসি বা সরকার কোনো অনিয়ম করবে বলে আশা করি না। আশা করি, সরকার নতুন যেসব লাইসেন্স দেবে, তা স্বচ্ছতা, যোগ্যতা ও সক্ষমতার ভিত্তিতে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অস্বচ্ছতার প্রমাণ পাওয়া গেলে সংসদীয় কমিটি কঠোর অবস্থান নেবে।’
তবে সংসদীয় কমিটির সদস্য সরকারদলীয় হুইপ আ স ম ফিরোজ ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘বিটিআরসির ওপর কারও আস্থা নেই। তারা যেমন ইচ্ছা কাজ করছে। মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে ঝামেলা তৈরি করে রেখেছে। তিনটি লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলে ছয়টি দিচ্ছে। মূল্যায়নের নামে যাকে ইচ্ছা ১০০ নম্বর দিচ্ছে। অপছন্দ হলে ১০ নম্বর দিয়ে রাখছে।’ আ স ম ফিরোজ বলেন, এসব কারণে সংসদীয় কমিটি থেকে পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সব মিলিয়ে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নাম লাইসেন্সের জন্য ইতিমধ্যে সুপারিশ করেছে বিটিআরসির কাছে। কারিগরি দক্ষতা নয়, মূলত রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতার ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠানের নাম সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বিভিন্ন ধরনের গেটওয়ে লাইসেন্স প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘যা কিছু হচ্ছে, তা সবই আইন মেনে হচ্ছে।’
জানা গেছে, বিটিআরসি আইআইজি লাইসেন্স নিয়ে দরপত্র আহ্বান করলেও মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে সুপারিশ করেছে আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রোরিয়েল কেবল) লাইসেন্স পাওয়া পাঁচ কোম্পানিকে আইআইজি লাইসেন্স দিতে। গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ, আইআইজি ও আইসিএক্স) লাইসেন্সের নীতিমালায় সর্বোচ্চ কতটি লাইসেন্স দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
এদিকে বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে আইটিসি লাইসেন্সপ্রাপ্তরা কেউই ওই লাইসেন্স নিতে রাজি হচ্ছে না। তারা আইটিসির পাশাপাশি আইআইজি লাইসেন্সও চাইছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, আইটিসি লাইসেন্সের মনোনয়নপ্রাপ্ত ম্যাংগো টেলিসার্ভিসের ইতিমধ্যেই আইআইজি লাইসেন্স ও অবকাঠামো রয়েছে। ম্যাংগোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে বাকিদেরও আইআইজি লাইসেন্স লাগবে।
বিষয়টি স্বীকার করে বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আইটিসি লাইসেন্সপ্রাপ্তরা ‘বিশেষ আবদার’ নিয়ে মন্ত্রণালয়েও গিয়েছে।
সম্প্রতি আইটিসি লাইসেন্সের নীতিমালার শর্ত ভেঙে সরকার তিনটির জায়গায় ছয়টি লাইসেন্স দেয়। বিটিআরসির অভিযোগ, এ ব্যাপারে তাদের কোনো যুক্তি শুনতে রাজি হয়নি মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতেও হইচই হয়েছে। বিটিআরসি সূত্র বলেছে, ‘মন্ত্রণালয়ের চাপে বাধ্য হয়ে’ তিনটির জায়গায় ছয়টি আইটিসি লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরির স্বার্থেই এতগুলো লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।’ আইটিসি নীতিমালার শর্ত ভঙ্গ করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘নীতিমালা তৈরি হয় জনগণের স্বার্থে, প্রয়োজনে তা সংশোধন করা হবে।’ মন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, লাইসেন্সের সংখ্যা বাড়ানোয় গ্রাহক সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা পাবে।
ভিএসপি লাইসেন্সের উদ্যোগ: আইজিডব্লিউ, আইআইজি ও আইসিএক্সের পাশাপাশি ভিওআইপি ব্যবসার জন্য ভিওআইপি সার্ভিস প্রোভাইডার (ভিএসপি) নামের আরও এক ধরনের লাইসেন্স দিতে যাচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক নেতাসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যবসা বৈধ করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
একজন টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ প্রথম আলোকে বলেন, ভিওআইপি প্রযুক্তিটি উন্মুক্ত বলে এ ধরনের লাইসেন্সের ব্যবস্থা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই।
টেলিযোগাযোগ-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এ বিষয়ে বলেন, ‘বিটিআরসি বা সরকার কোনো অনিয়ম করবে বলে আশা করি না। আশা করি, সরকার নতুন যেসব লাইসেন্স দেবে, তা স্বচ্ছতা, যোগ্যতা ও সক্ষমতার ভিত্তিতে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অস্বচ্ছতার প্রমাণ পাওয়া গেলে সংসদীয় কমিটি কঠোর অবস্থান নেবে।’
তবে সংসদীয় কমিটির সদস্য সরকারদলীয় হুইপ আ স ম ফিরোজ ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘বিটিআরসির ওপর কারও আস্থা নেই। তারা যেমন ইচ্ছা কাজ করছে। মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে ঝামেলা তৈরি করে রেখেছে। তিনটি লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলে ছয়টি দিচ্ছে। মূল্যায়নের নামে যাকে ইচ্ছা ১০০ নম্বর দিচ্ছে। অপছন্দ হলে ১০ নম্বর দিয়ে রাখছে।’ আ স ম ফিরোজ বলেন, এসব কারণে সংসদীয় কমিটি থেকে পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
No comments