পতাকা যারে দাও, বহিবারে দাও শকতি by অজয় দাশগুপ্ত
অনলাইন কাগজ বা মিডিয়ার পাঠক-পাঠিকারা মূলত: তরুণ-তরুণী। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নামে পরিচিত এই তারুণ্যের কথা মনে রেখেই কলম সচল রাখা উচিৎ। ক্লান্ত, স্মৃতিকাতর, অথবা সোডার বোতল খোলার মতো ভস ভসিয়ে উঠে আসা এক গাদা অতীতের কথা এদের টানে না। আমাদের সমাজ বড় অদ্ভূত। মিডিয়াও তার বাইরের কিছু নয়। পত্র-পত্রিকা বা ইলেকট্রনিক মিডিয়া জুড়ে অভিজ্ঞতার দাপটে তারুণ্য কোণঠাসা।
ধরুন, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, অথবা বদরুদ্দীন ওমর। দু’শিবিরের দুই লেখক, মাঝে মধ্যে ঝলসে ওঠা ব্যতীত এক কাহিনী, একই প্যাঁচাল। একজনের মতে, আওয়ামী দাওয়াই সর্বরোগের মহৌষধ। অন্যজন এখনো স্তালিন আর মাও দেজ দং এর লাশ টানাটানিতে ব্যস্ত।
পৃথিবীর চেহারা, মানচিত্র, বাস্তবতা এমন কি ভূগোল পাল্টে যাবার পরও আমাদের অগ্রজেরা পাল্টাতে পারেননি। একটা সহজ কথা আমরা বুঝি না, টগবগে তারুণ্য, বুদ্ধিদীপ্ত চোখ কেন ঝাঁপসা কাচে অথবা ভারী চশমায় দুনিয়া দেখবে? দ্বাদশ অবলোকনের জন্যও তার চাই ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন দৃষ্টি।
ওয়েব কাগজ বা আকাশবাহী মিডিয়ার লেখাগুলোও হওয়া উচিৎ অতীতহীন ভবিষ্যৎমুখী। এ কথা বলি না, অকৃতজ্ঞ বা অভিজ্ঞতাহীন হতে হবে। যেটুকু শক্তি বা নির্যাস ঐকুই, বাকি প্যাঁচাল নিরর্থক।
এই যে ডিসেম্বর, বিজয়ের মাস, লাল সবুজে উদ্বেল ফেসবুক, টুইটার অথবা অন্য বাহন, তারুণ্যকে কি পথ দেখাচ্ছেন কেউ? কেউ কি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জাতি হিসেবে আমাদেও অনেক দায় চুকাতে হবে?
অমীমাংসিত ইতিহাস মানে কেবল বঙ্গবন্ধু আর জিয়ার দ্বন্দ্ব নয়। মুক্তিযুদ্ধ ছিল সর্বতোভাবে আন্তর্জাতিক। কত বিদেশীর শ্রম, মেধা, সংগ্রাম ও সাহস ছিল তাতে।
মার্ক টালি, বিবিসি খ্যাত সাংবাদিক, জান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গ দিয়েছেন, প্রচার দিয়েছেন। অপার উৎস মার্ক টালিকে জীবদ্দশায় কি দিয়েছি আমরা? ভারত তাঁকে পদ্মশ্রী দিয়েছে, পদ্মভূষণও, আমরা?
সাইমন ড্রিং ব্রিস্বেনবাসী অস্ট্রেলিয়ান, তাঁকে তো রাজনীতি দেশ ত্যাগ করিয়ে ছেড়েছে।
যে দেশ থেকে লিখছি অর্থাৎ ক্যাঙ্গারুর স্বর্গভূমি অস্ট্রেলিয়ায় ঘুমিয়ে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওভারল্যান্ড, গেরিলা সংগ্রামের পথিকৃত। একমাত্র বিদেশী বীর প্রতীক। তাঁকেও জীবদ্দশায় সম্মানজনক নাগরিকত্ব দেওয়া যায়নি। নিজের জীবন তুচ্ছ করে লড়াই করা এই বিদেশীর নাম জানেন কতো জন?
অন্ধ রাজনীতি তার মুকুট সামলাতে ব্যস্ত। ওভারল্যান্ডের চেয়ে অনেক জরুরি জয় বা তারেক। তাজউদ্দিনের চেয়ে জরুরি মোশতাকের মু-ুপাত। কতো বীর, কতো আত্মত্যাগ, কতো অশ্রুজল, তার দায় না চুকালে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। যে সব জাতি শৌর্য-বীর্যে আগুয়ান তাঁরা তাই করেছেন।
তারুণ্যকে আরো একটি পথ খুলে দেয়া প্রয়োজন। হানাহানি হীন, অন্ধ রাজনীতির বাইরে মুক্ত পথ খুলেছে কম্বোডিয়া, খুলেছে পূর্ব ইউরোপ, এমন কি এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো।
আজকাল প্রগতিশীল সাজার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় দুধ-পানি একাকার, চল্লিশ বছর পূর্বের ক্রোধ আর আজকের উত্তাপ এক নয়। ক্ষির হয়ে আসা ইতিহাসের পূর্বে চোখ রাখুন। যতোটা সর, ততোটাই আমাদের, যতোটায় অন্যকিছু তাকে দ্রবীভূত করে নিতে হবে।
ক্ষমা হীন ইতিহাসে আস্ফালন আর জোর থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদী বিজয় থাকে না। কেউ যদি ভুল বোঝেনও বলবো, গাঁধির ভারতকে যতোই গাল পাড়ুন সে এগিয়েছে, এগুতে পেরেছে। কেন না তার রাজনীতি জাতির জনকের হত্যা থেকে তরুণ রাজীবের মৃত্যুতেও হিংসাকে চিরসঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়নি। শত্রুকে সহায়তা আর চিরকালীন প্রতিশোধ স্পৃহা দুটো ভিন্ন বিষয়।
আমাদের রাজনীতি তা বোঝে না। তাই তারুণ্য যদি একদিন এই রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থার বিপরীতে নতুন কিছু চায় খুব কি অবাক হবো?
বিজয় মানেই তো নতুন পতাকা আর পুরনো সঙ্গীতের নতুন আহ্বান।
ওয়েব কাগজ বা আকাশবাহী মিডিয়ার লেখাগুলোও হওয়া উচিৎ অতীতহীন ভবিষ্যৎমুখী। এ কথা বলি না, অকৃতজ্ঞ বা অভিজ্ঞতাহীন হতে হবে। যেটুকু শক্তি বা নির্যাস ঐকুই, বাকি প্যাঁচাল নিরর্থক।
এই যে ডিসেম্বর, বিজয়ের মাস, লাল সবুজে উদ্বেল ফেসবুক, টুইটার অথবা অন্য বাহন, তারুণ্যকে কি পথ দেখাচ্ছেন কেউ? কেউ কি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জাতি হিসেবে আমাদেও অনেক দায় চুকাতে হবে?
অমীমাংসিত ইতিহাস মানে কেবল বঙ্গবন্ধু আর জিয়ার দ্বন্দ্ব নয়। মুক্তিযুদ্ধ ছিল সর্বতোভাবে আন্তর্জাতিক। কত বিদেশীর শ্রম, মেধা, সংগ্রাম ও সাহস ছিল তাতে।
মার্ক টালি, বিবিসি খ্যাত সাংবাদিক, জান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গ দিয়েছেন, প্রচার দিয়েছেন। অপার উৎস মার্ক টালিকে জীবদ্দশায় কি দিয়েছি আমরা? ভারত তাঁকে পদ্মশ্রী দিয়েছে, পদ্মভূষণও, আমরা?
সাইমন ড্রিং ব্রিস্বেনবাসী অস্ট্রেলিয়ান, তাঁকে তো রাজনীতি দেশ ত্যাগ করিয়ে ছেড়েছে।
যে দেশ থেকে লিখছি অর্থাৎ ক্যাঙ্গারুর স্বর্গভূমি অস্ট্রেলিয়ায় ঘুমিয়ে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওভারল্যান্ড, গেরিলা সংগ্রামের পথিকৃত। একমাত্র বিদেশী বীর প্রতীক। তাঁকেও জীবদ্দশায় সম্মানজনক নাগরিকত্ব দেওয়া যায়নি। নিজের জীবন তুচ্ছ করে লড়াই করা এই বিদেশীর নাম জানেন কতো জন?
অন্ধ রাজনীতি তার মুকুট সামলাতে ব্যস্ত। ওভারল্যান্ডের চেয়ে অনেক জরুরি জয় বা তারেক। তাজউদ্দিনের চেয়ে জরুরি মোশতাকের মু-ুপাত। কতো বীর, কতো আত্মত্যাগ, কতো অশ্রুজল, তার দায় না চুকালে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। যে সব জাতি শৌর্য-বীর্যে আগুয়ান তাঁরা তাই করেছেন।
তারুণ্যকে আরো একটি পথ খুলে দেয়া প্রয়োজন। হানাহানি হীন, অন্ধ রাজনীতির বাইরে মুক্ত পথ খুলেছে কম্বোডিয়া, খুলেছে পূর্ব ইউরোপ, এমন কি এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো।
আজকাল প্রগতিশীল সাজার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় দুধ-পানি একাকার, চল্লিশ বছর পূর্বের ক্রোধ আর আজকের উত্তাপ এক নয়। ক্ষির হয়ে আসা ইতিহাসের পূর্বে চোখ রাখুন। যতোটা সর, ততোটাই আমাদের, যতোটায় অন্যকিছু তাকে দ্রবীভূত করে নিতে হবে।
ক্ষমা হীন ইতিহাসে আস্ফালন আর জোর থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদী বিজয় থাকে না। কেউ যদি ভুল বোঝেনও বলবো, গাঁধির ভারতকে যতোই গাল পাড়ুন সে এগিয়েছে, এগুতে পেরেছে। কেন না তার রাজনীতি জাতির জনকের হত্যা থেকে তরুণ রাজীবের মৃত্যুতেও হিংসাকে চিরসঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়নি। শত্রুকে সহায়তা আর চিরকালীন প্রতিশোধ স্পৃহা দুটো ভিন্ন বিষয়।
আমাদের রাজনীতি তা বোঝে না। তাই তারুণ্য যদি একদিন এই রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থার বিপরীতে নতুন কিছু চায় খুব কি অবাক হবো?
বিজয় মানেই তো নতুন পতাকা আর পুরনো সঙ্গীতের নতুন আহ্বান।
No comments