কিয়োটো প্রটোকল থেকে সরে আসার ঘোষণা কানাডার-সই করা দেশগুলোর মধ্যে কানাডাই প্রথম এ চুক্তি থেকে পিছিয়ে এল

কানাডা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত কিয়োটো প্রটোকল থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে। পরিবেশমন্ত্রী পিটার কেন্ট গত সোমবার এ কথা জানিয়েছেন। চুক্তিটি কানাডার অগ্রযাত্রায় তেমন একটা কাজে আসছে না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। চুক্তি থেকে সরে আসার বিষয়ে শিগগিরই তাঁরা জাতিসংঘের কাছে আবেদন করবেন। সই করা দেশগুলোর মধ্যে কানাডাই প্রথম এ চুক্তি থেকে পিছিয়ে এল।


জাতিসংঘের জলবায়ু-বিষয়ক সাম্প্রতিক ডারবান সম্মেলনের একেবারে শেষ পর্যায়ে গ্রিনহাউস গ্যাস বা কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত নতুন একটি চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। সম্মেলনের পূর্বনির্ধারিত সময়ের দুই দিন পর গত রবিবার ঐকমত্যে পেঁৗছায় তারা। কিন্তু এর মাত্র এক দিন পরেই কানাডা কার্বন নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত বিদ্যমান একমাত্র চুক্তি থেকে পিছেয়ে আসার ঘোষণা দিল। পিটার কেন্ট বলেন, 'কিয়োটো প্রটোকল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে আসার আইনি অধিকারের শরণাপন্ন হচ্ছি আমরা।' ২০১২ সালের শেষে কিয়োটো প্রটোকলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
১৯৯৭ সালে জাপানের কিয়োটো শহরে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিধি অনুযায়ী, কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে আর্থিক জরিমানা দেবে। কিন্তু কিয়োটো থেকে সরে আসার কারণে কানাডা এখন এক হাজার ৩৬০ কোটি ডলার জরিমানা দেওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবে। কিয়োটো চুক্তির কারণে কানাডার পরিবারপ্রতি প্রায় এক হাজার ৬০০ ডলার করে জরিমানা গুনতে হতো বলে জানান কেন্ট। এ ছাড়া কার্বন নিঃসরণকারী প্রধান দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কিয়োটো প্রটোকলের বাইরে থাকায় কার্বন নিঃসরণ অব্যাহত আছে বলেও যুক্তি দেন তিনি। কেন্ট বলেন, 'আশা করছি, নতুন জলবায়ু চুক্তির পর আমরা চাকরির সুযোগ তৈরি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে পারব।' ২০১৫ সালের মধ্যে নতুন জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষর এবং ২০২০ সালের মধ্যে তা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে বিশ্বের প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীন কানাডার কিয়োটো প্রটোকল থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তকে 'দুঃখজনক' বলে উল্লেখ করেছে। নিজেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র দাবি করে কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে চীন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিউ ওয়েইমিন বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'কানাডার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা চেষ্টার বিরোধী এবং দুঃখজনক। আমরা আশা করব, কানাডা নিজের দায়দায়িত্ব স্বীকার করবে, অঙ্গীকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অংশীদার হবে।' সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.