পাকিস্তানে ৭০ কোটি আমেরিকান ডলারের সাহায্য বন্ধের সিদ্ধান্ত

মার্কিন হাউস-সিনেটের একটি প্যানেল পাকিস্তানকে দেওয়া ৭০ কোটি ডলারের সাহায্য আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তান হাতে তৈরি বোমার বিস্তার রোধের নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সাহায্য দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। প্যানেলের সদস্যরা গত সোমবার এ কথা জানিয়েছেন। আফগানিস্তানে মার্কিন ও জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে জঙ্গিদের ব্যবহৃত অস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে সফলগুলোর অন্যতম হচ্ছে হাতে তৈরি বোমা বা আইইডি।


হাত বোমার বেশির ভাগই তৈরি হয় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট দিয়ে। যা পাকিস্তানে কৃষি জমির সার হিসেবে ব্যাপক হারে উৎপাদন ও ব্যবহার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এই সার খুব সহজেই সীমান্ত অতিক্রম করে আফগানিস্তানে পাচার হয়ে যায়। সেখানে এ সার দিয়েই আইইডি তৈরি করা হয়।
পাকিস্তানের সিনেটররা যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে 'অবিবেচক' হিসেবে অভিহিত করেছেন। এ সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই তলানিতে এসে ঠেকা যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কে আরো অবনতি ঘটাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তান সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান সালিম সাইফুল্লাহ।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিলের একটি অংশ হিসেবে এ সপ্তাহেই সিনেটে এ প্রস্তাব পাস হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। হাউসের রিপাবলিকান সদস্য ম্যাককিয়ন সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় 'পাকিস্তান তাদের দেশে আইইডি প্রতিরোধ করবে। এগুলো আমাদের জোট বাহিনীকে লক্ষ্য করে ব্যবহার করা হচ্ছে।' সিনেটর জন ম্যাককেইন এর আগে গত সপ্তাহে সিনেটে বলেন, বেশিরভাগ আইইডি তৈরিতে যে উপকরণ ব্যবহার করা হয়, তা আসে পাকিস্তানের দুটি সার কারখানা থেকে।' মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অনেকেই বহু দিন থেকে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে হতাশ। ইতিমধ্যেই সাহায্য পাওয়ার জন্য পাকিস্তানকে বহু শর্ত বেঁধে দিয়েছে তারা। এর মধ্যে হাক্কানি নেটওয়ার্কের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই অন্যতম। ওয়াশিংটনের বিশ্বাস, পাকিস্তানভিত্তিক এই জঙ্গি সংগঠনটি আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
তবে পাকিস্তানের বেসামরিক নেতারা মনে করেন, সহায়তা আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জনমতকে আরো বিরূপ করে তুলবে। সালিম সাইফুল্লাহ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, 'আমি মনে করি, এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বরং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত।'
পাকিস্তানের সাবেক জেনারেল এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক তালাত মাসুদ এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এবং এই সিদ্ধান্ত সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কারণ তারা জানে (সার) চোরাচালান বন্ধের সাধ্য পাকিস্তানের নেই।' সূত্র : পিটিআই, ডন।

No comments

Powered by Blogger.