আশরাফুলদের নিয়ে সিদ্ধান্তে এক দিনের অপেক্ষা
টোয়েন্টি টোয়েন্টি দিয়ে শুরু বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ। প্রধান নির্বাচক আকরাম খানের দৃঢ় বিশ্বাস সে ম্যাচের বিপর্যয়ের ধাক্কাতেই টলে ওঠে বাংলাদেশের দলীয় আত্মবিশ্বাস। পরের তিন ওয়ানডেতে তা একেবারে চুরমার। তারই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রামে টেস্টেও নাকি ইনিংস ব্যবধানে হার। এরপর না জানি শুক্রবার ঢাকায় শুরু হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টে কী দুর্দশা হয় মুশফিকুর রহিমদের! অনেকটা প্রার্থনার সুরে আকরাম খানের
প্রতিবাদ, 'না না, ছেলেরা খুব কষ্ট করছে। আশা করছি ঢাকায় ভালো কিছু হবে।' ঢাকায় ভালো কিছু করার প্রতিশ্রুতি চট্টগ্রাম টেস্টের পরই দিয়ে রেখেছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে দুজন ব্যাটসম্যানের ফিফটিতে দুই শ পেরুনোই বাংলাদেশ অধিনায়কের এ উচ্চাভিলাষের অনুপ্রেরণা। ঢাকায় ভালো করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বটে, কিন্তু নির্দিষ্ট করে সে 'ভালো'র সীমারেখা টানেননি তিনি। বোধগম্য কারণে গতকাল আকরাম খানও এ প্রশ্নের উত্তরে বিমূর্ত, 'ভালো খেলা মানে জয়ের কথা বলছি না। আমি চাই দল যেন উন্নতির গ্রাফটা ঊর্ধ্বমুখী রাখতে সক্ষম হয়।' সেই উন্নতিটা কোথায় বেশি জরুরি জানাতে গিয়ে অবশ্য দুটি আঙুল তুলেছেন, 'ব্যাটিং ও ফিল্ডিং।'
ফিল্ডিংটা ফিটনেস এবং ক্রিকেটীয় বোধবুদ্ধির সম্মিলন। পরেরটি নিয়ে প্রশ্ন তুললে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা অপমানিতবোধ করতে পারেন। আর ফিটনেস প্রসঙ্গে দল থেকে শুরু করে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির লুকোছাপাও অনেকের জন্য স্বস্তিকর নয়। তবে বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ দলের তিন-চারজনের ফিল্ডিংসংক্রান্ত বুদ্ধি এবং স্কিল তো বটেই, ফিটনেসেও ঘাটতি আছে। বোলার কিংবা সময়ের দাবি মেনে ফিল্ডিং সাজানোর সময় সে রকম কয়েকজন ফিল্ডারকে আড়াল দেওয়ার কথাও ভাবতে হয় বাংলাদেশ অধিনায়ককে। এ গোত্রের ফিল্ডাররা কখনো কখনো দু-একটা দর্শনীয় ক্যাচ নেবেন আর সারা বছর বাজে ফিল্ডিং করবেন_বাংলাদেশ দলের এ সমস্যা দীর্ঘদিনের।
ব্যাটিংয়ের সমস্যা আরো গভীর। এ সিরিজে ব্যাটিং-ব্যর্থতার মূলে আত্মবিশ্বাসের অভাবকে দায়ী করেছেন কোচ স্টুয়ার্ট ল থেকে শুরু করে প্রধান নির্বাচকও। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্ট চলাকালে ইলিয়াস সানি কিংবা মুশফিকুরের মন্তব্য শুনে কে বলবে যে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসে সামান্যতম ঘাটতিও আছে! টেস্ট ম্যাচে ওয়ানডে, কেউ কেউ আবার টোয়েন্টি টোয়েন্টির ব্যাটিং করে উইকেট দিয়ে আসছেন। দলের নেতা বলেই কি না কে জানে, এ অভিযোগে টিমমেটদের জন্য ঢাল এগিয়ে দেন মুশফিক, 'এটা ওদের ন্যাচারাল খেলা। এভাবেই ওরা রান করে।'
এ জায়গাটায় দায়িত্ববোধকে অগ্রাধিকার দিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন আকরাম খান, 'ন্যাচারাল ক্রিকেট খেলে যদি রান না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানের উচিত নতুন করে ভাবা।' সেই ভাবনা থেকে একজনকে আবার 'মুক্তি' দিচ্ছেন প্রধান নির্বাচক, 'তামিমের (ইকবাল) কথা ভিন্ন। এভাবেই ও রান করে আসছে। ওর টেস্ট গড় ৪০। তাই বলে ন্যাচারাল ক্রিকেট খেলে যে রান পাচ্ছে না, সে কেন বেশি বেশি স্ট্রোক খেলবে?' তামিম ইকবালকে লাইসেন্স দেওয়ার কারণও আছে। স্ট্রোক প্লেতেই লর্ডস এবং ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সেঞ্চুরি করতে পারেন তামিম। বরং রয়ে-সয়ে খেলতে গিয়ে উল্টো ফলই হয়েছে তাঁর ক্ষেত্রে। তা ছাড়া সব দলেই একজন আক্রমণাত্মক ক্রিকেটারের কদর আছে। তাই বলে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হয়েও ক্রিজে গিয়েই কেন ব্যাট চালাতে থাকবেন ২০ টেস্টে ২৫ গড়ের শাহরিয়ার নাফীস? অতিরিক্ত শট খেলার অভিযোগ সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধেও আছে। তবে ধুমধাম মেরেও ফিফটি করে ফেলছেন সাবেক এ অধিনায়ক। তাই 'সাকিব ওভাবেই খেলে' বলে সমর্থন জানানো ছাড়া উপায় নেই টিম ম্যানেজমেন্টের।
বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে শাহরিয়ার এবং সাকিবের মাঝখানে যিনি চট্টগ্রামে ব্যাট করেছেন, সেই মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে বিপাকে আছেন নির্বাচকরা। জিম্বাবুয়ে সফরে একমাত্র টেস্টে রান করেও ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাঁকে দলে রাখেননি নির্বাচকরা। যত দূর জানা গেছে, অন্তত একটা বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে রাখার পরিকল্পনাও হয়েছিল বাদ দেওয়ার সময়। কিন্তু মিডল অর্ডারের মহাশূন্যতা এক সিরিজ পরই টেস্ট দলে ফিরিয়ে আনে আশরাফুলকে। চট্টগ্রাম টেস্টে দ্রুততম সময়ে দুবারই আউট হয়েছেন তিনি (১ ও ০)! তাই এক ম্যাচ পরই প্রশ্ন, ঢাকায় কি খেলাচ্ছেন আশরাফুলকে? 'টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। চার নম্বরে আর কেউ নেই বলেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করা আশরাফুলকে সুযোগ দিয়েছিলাম। এখন দেখি ক্যাপ্টেন-কোচের ভাবনা কী!'
সে ভাবনাতেও সীমাবদ্ধতা আছে। টেস্ট দলে চার নম্বরে আশরাফুলের প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন_রকিবুল হাসান এবং জুনায়েদ সিদ্দিক। কিন্তু দুজনই ওয়েস্ট ইন্ডিজে 'এ' দলের সফরে ব্যর্থ। জাতীয় লিগের একটি ম্যাচে উভয় ইনিংসে ফিফটি ছাড়া বলার মতো কোনো স্কোর নেই জুনায়েদের। আবার একাডেমীর মমিনুল হক কিংবা আসিফ আহমেদ রাতুলকে এখনই টেস্টে ঠেলে দিয়ে আত্মবিশ্বাসের পরীক্ষা নেওয়াটা ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন নির্বাচকরা।
তবে কি ঢাকায় আরেকটি সুযোগ পাচ্ছেন আশরাফুল? সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। স্কোয়াডের বাইরে থেকে কাউকে এনে খেলিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাও কম। সে ক্ষেত্রে মুশফিক নিজে উঠে আসতে পারেন চার নম্বরে। সেটি হলে আবার চট্টগ্রাম টেস্টের চেয়ে একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়ে ঢাকায় নামতে হবে বাংলাদেশ দলকে। ব্যাটিংয়ে চরম ব্যর্থ একটি দল কি সে ঝুঁকি নেবে? নাকি সুস্থ হয়ে ওঠা নাঈম ইসলাম মিডল অর্ডারে আশরাফুলের জায়গা নেবেন? এসব প্রশ্নের উত্তরের জন্য একটি দিন সময় নিয়েছেন আকরাম খান, 'দল এখনো চট্টগ্রামে। কাল (আজ) সকালে আসবে। নাঈম এবং রুবেলের ফিটনেস সম্পর্কেও চূড়ান্ত ধারণা পাওয়া যাবে। তখন বলতে পারব।'
ঢাকায় 'ভালো কিছু'র লক্ষ্যেই একসময় সেরাদের নিয়ে চূড়ান্ত হবে একাদশ। এরপর প্রার্থনায় বসে পড়া, অন্তত বছরের শেষটা যেন 'ভালো কিছু' দিয়ে করেন মুশফিকরা!
ফিল্ডিংটা ফিটনেস এবং ক্রিকেটীয় বোধবুদ্ধির সম্মিলন। পরেরটি নিয়ে প্রশ্ন তুললে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা অপমানিতবোধ করতে পারেন। আর ফিটনেস প্রসঙ্গে দল থেকে শুরু করে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির লুকোছাপাও অনেকের জন্য স্বস্তিকর নয়। তবে বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ দলের তিন-চারজনের ফিল্ডিংসংক্রান্ত বুদ্ধি এবং স্কিল তো বটেই, ফিটনেসেও ঘাটতি আছে। বোলার কিংবা সময়ের দাবি মেনে ফিল্ডিং সাজানোর সময় সে রকম কয়েকজন ফিল্ডারকে আড়াল দেওয়ার কথাও ভাবতে হয় বাংলাদেশ অধিনায়ককে। এ গোত্রের ফিল্ডাররা কখনো কখনো দু-একটা দর্শনীয় ক্যাচ নেবেন আর সারা বছর বাজে ফিল্ডিং করবেন_বাংলাদেশ দলের এ সমস্যা দীর্ঘদিনের।
ব্যাটিংয়ের সমস্যা আরো গভীর। এ সিরিজে ব্যাটিং-ব্যর্থতার মূলে আত্মবিশ্বাসের অভাবকে দায়ী করেছেন কোচ স্টুয়ার্ট ল থেকে শুরু করে প্রধান নির্বাচকও। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্ট চলাকালে ইলিয়াস সানি কিংবা মুশফিকুরের মন্তব্য শুনে কে বলবে যে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসে সামান্যতম ঘাটতিও আছে! টেস্ট ম্যাচে ওয়ানডে, কেউ কেউ আবার টোয়েন্টি টোয়েন্টির ব্যাটিং করে উইকেট দিয়ে আসছেন। দলের নেতা বলেই কি না কে জানে, এ অভিযোগে টিমমেটদের জন্য ঢাল এগিয়ে দেন মুশফিক, 'এটা ওদের ন্যাচারাল খেলা। এভাবেই ওরা রান করে।'
এ জায়গাটায় দায়িত্ববোধকে অগ্রাধিকার দিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন আকরাম খান, 'ন্যাচারাল ক্রিকেট খেলে যদি রান না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানের উচিত নতুন করে ভাবা।' সেই ভাবনা থেকে একজনকে আবার 'মুক্তি' দিচ্ছেন প্রধান নির্বাচক, 'তামিমের (ইকবাল) কথা ভিন্ন। এভাবেই ও রান করে আসছে। ওর টেস্ট গড় ৪০। তাই বলে ন্যাচারাল ক্রিকেট খেলে যে রান পাচ্ছে না, সে কেন বেশি বেশি স্ট্রোক খেলবে?' তামিম ইকবালকে লাইসেন্স দেওয়ার কারণও আছে। স্ট্রোক প্লেতেই লর্ডস এবং ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সেঞ্চুরি করতে পারেন তামিম। বরং রয়ে-সয়ে খেলতে গিয়ে উল্টো ফলই হয়েছে তাঁর ক্ষেত্রে। তা ছাড়া সব দলেই একজন আক্রমণাত্মক ক্রিকেটারের কদর আছে। তাই বলে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হয়েও ক্রিজে গিয়েই কেন ব্যাট চালাতে থাকবেন ২০ টেস্টে ২৫ গড়ের শাহরিয়ার নাফীস? অতিরিক্ত শট খেলার অভিযোগ সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধেও আছে। তবে ধুমধাম মেরেও ফিফটি করে ফেলছেন সাবেক এ অধিনায়ক। তাই 'সাকিব ওভাবেই খেলে' বলে সমর্থন জানানো ছাড়া উপায় নেই টিম ম্যানেজমেন্টের।
বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে শাহরিয়ার এবং সাকিবের মাঝখানে যিনি চট্টগ্রামে ব্যাট করেছেন, সেই মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে বিপাকে আছেন নির্বাচকরা। জিম্বাবুয়ে সফরে একমাত্র টেস্টে রান করেও ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাঁকে দলে রাখেননি নির্বাচকরা। যত দূর জানা গেছে, অন্তত একটা বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে রাখার পরিকল্পনাও হয়েছিল বাদ দেওয়ার সময়। কিন্তু মিডল অর্ডারের মহাশূন্যতা এক সিরিজ পরই টেস্ট দলে ফিরিয়ে আনে আশরাফুলকে। চট্টগ্রাম টেস্টে দ্রুততম সময়ে দুবারই আউট হয়েছেন তিনি (১ ও ০)! তাই এক ম্যাচ পরই প্রশ্ন, ঢাকায় কি খেলাচ্ছেন আশরাফুলকে? 'টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। চার নম্বরে আর কেউ নেই বলেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করা আশরাফুলকে সুযোগ দিয়েছিলাম। এখন দেখি ক্যাপ্টেন-কোচের ভাবনা কী!'
সে ভাবনাতেও সীমাবদ্ধতা আছে। টেস্ট দলে চার নম্বরে আশরাফুলের প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন_রকিবুল হাসান এবং জুনায়েদ সিদ্দিক। কিন্তু দুজনই ওয়েস্ট ইন্ডিজে 'এ' দলের সফরে ব্যর্থ। জাতীয় লিগের একটি ম্যাচে উভয় ইনিংসে ফিফটি ছাড়া বলার মতো কোনো স্কোর নেই জুনায়েদের। আবার একাডেমীর মমিনুল হক কিংবা আসিফ আহমেদ রাতুলকে এখনই টেস্টে ঠেলে দিয়ে আত্মবিশ্বাসের পরীক্ষা নেওয়াটা ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন নির্বাচকরা।
তবে কি ঢাকায় আরেকটি সুযোগ পাচ্ছেন আশরাফুল? সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। স্কোয়াডের বাইরে থেকে কাউকে এনে খেলিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাও কম। সে ক্ষেত্রে মুশফিক নিজে উঠে আসতে পারেন চার নম্বরে। সেটি হলে আবার চট্টগ্রাম টেস্টের চেয়ে একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়ে ঢাকায় নামতে হবে বাংলাদেশ দলকে। ব্যাটিংয়ে চরম ব্যর্থ একটি দল কি সে ঝুঁকি নেবে? নাকি সুস্থ হয়ে ওঠা নাঈম ইসলাম মিডল অর্ডারে আশরাফুলের জায়গা নেবেন? এসব প্রশ্নের উত্তরের জন্য একটি দিন সময় নিয়েছেন আকরাম খান, 'দল এখনো চট্টগ্রামে। কাল (আজ) সকালে আসবে। নাঈম এবং রুবেলের ফিটনেস সম্পর্কেও চূড়ান্ত ধারণা পাওয়া যাবে। তখন বলতে পারব।'
ঢাকায় 'ভালো কিছু'র লক্ষ্যেই একসময় সেরাদের নিয়ে চূড়ান্ত হবে একাদশ। এরপর প্রার্থনায় বসে পড়া, অন্তত বছরের শেষটা যেন 'ভালো কিছু' দিয়ে করেন মুশফিকরা!
No comments