বিএইচবিএফসির অনুমোদিত তহবিল বাড়ছে by কিসমত খন্দকার

গৃহনির্মাণ খাতে ঋণের আওতা বাড়াতে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) প্রচলিত আইনের পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে সংস্থাটির অনুমোদিত তহবিলের পরিমাণ ১১০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ছয়শ' কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে শাস্তির বিধানসহ ও খেলাপি ঋণ আদায় বিষয়েও আইনের কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সংশোধনীতে ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়েও ঋণ


সুবিধা রাখা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, দেশের গৃহনির্মাণ খাতে গ্রাহকদের ঋণ জোগান দেওয়ার জন্য বিএইচবিএফসি ১৯৭৩ সালের প্রেসিডেন্ট অর্ডার নং ৭-এর অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। এর পর গৃহায়ন ঋণ খাতে অনেক পরিবর্তন হলেও বিএইচবিএফসির বিধিবিধানে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। ফলে সংস্থাটির স্বাভাবিক কাজকর্ম অনেকটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংস্থাটির মূলধনের অভাবে গৃহায়ন খাতে নতুন ঋণ বিতরণও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যমান আইনটি সময়োপযোগী করতে বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সংশোধনী বিষয়ে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো ঠিক করে আবার তাদের কাছে পাঠানো হবে। তাদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেলে সংশোধনীসহ আইনটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সূত্র জানায়, সম্প্র্রতি সচিবালয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে সংস্থাটির বিদ্যমান আইনটি সময়োপযোগী করার জন্য সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকেও সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশে ক্রমবর্ধমান গৃহায়ন চাহিদা এবং শহরাঞ্চলে আবাসিক জমির স্বল্পতার কারণে হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন কর্তৃক প্রচলিত পদ্ধতিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য ঋণ দিয়ে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি নির্মিত বা নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে ঋণ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধনের প্রস্তাব আনা হয়েছে। আগে শুধু বাড়ি নির্মাণের জন্য সংস্থাটি ঋণ দিত। আইনের সংশোধনীতে ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ের জন্যও ঋণ সহায়তার সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ ছাড়া করপোরেশনের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো প্রসপেক্টাস বা বিজ্ঞপ্তিতে যদি করপোরেশনের নাম ব্যবহার করে সে ক্ষেত্রেও জরিমানা ও শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে এ ধরনের অপরাধের জন্য ছয় মাসের জেল বা এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। সংশোধনীতে তা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা দুই বছরের জেল অথবা উভয় দণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রেও আইনটি সংশোধনে প্রস্তাব করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.