তারুণ্যের উচ্ছ্বাস আর সুরে জেগেছে সিলেট by ইয়াহইয়া ফজল

মনিতে দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় সিলেট মহানগর জেগে ওঠে খানিকটা দেরিতে। এর ওপর কুয়াশায় ঢাকা শীতের সকাল। কিন্তু 'জীবনের আহবানে' সামনে এগিয়ে যাবেন যাঁরা তাঁদের কাছে এসব কোনো বাধাই নয়। তাই সাত কালেই নেসক্যাফে গেট সেট রক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে রক-পাগল তারুণ্যের পদভারে মুখর অডিশন ভেন্যু চত্বর। দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের অডিশন শেষে নেসক্যাফে গেট সেট রক অডিশন পর্ব গতকাল মঙ্গলবার থেকে


সিলেটে শুরু হয়েছে। প্রথম দিনের বাছাইকৃতদের মধ্য থেকে আজ চূড়ান্ত বাছাইয়ে ইয়েস কার্ড-প্রাপ্তরা যাবেন ঢাকায় পরবর্তী অডিশনে।
সকাল থেকেই সারি বেঁধে তরুণ-তরুণীরা অপেক্ষা করতে থাকেন নগরীর আম্বরখানার হোটেল পলাশের ভেন্যু গেটে। ৯টায় শুরু হয় রেজিস্ট্রেশন পর্ব। মিউজিক, রিদম আর আলোচনায় মুখর হয়ে ওঠে আড্ডাস্থল।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন বলে সুনামগঞ্জ জেলা থেকে এক দিন আগেই সিলেটে এসেছেন শামীম আহমেদ। সঙ্গে এসেছেন আরো ৯ জন গায়ক বন্ধু। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র শামীম অংশ নিচ্ছেন 'ভোকাল' প্রতিযোগিতায়। তিনি জানালেন, 'স্বপ্ন অনেক, তবে আপাতত প্রথম লক্ষ্য ইয়েস কার্ড পাওয়া।'
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী মো. শহীদুল কবীরও দীর্ঘদিন ধরে সংগীত সাধনা করেন। বিজয়ের মাসে প্রতিযোগিতা হচ্ছে বলে জেমসের 'বাংলাদেশ' গানটি বিচারকদের গেয়ে শোনানোর ইচ্ছা তাঁর। স্থানীয় ব্লু বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এম এম নেওয়াজ শরীফের সংগীত সাধনার বয়স মাত্র এক বছর! তিনি বললেন, 'আত্মবিশ্বাস আছে, তাই চলে এসেছি। ইয়েস কার্ড না পাই, অভিজ্ঞতা তো হবে।'
ঝলমলে তারুণ্যের ভিড়ে ব্যতিক্রমী একজন হলেন অসিত বরণ চৌধুরী। এসেছেন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে। ষাটোর্ধ্ব অসিত বললেন, 'একসময় গান গাইতাম। গলাও বেশ ছিল। কিন্তু বয়সের কারণে এখন আর গাইতে পারি না। তবে বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারি অনেকগুলো।' তিনি বললেন, 'বাঁশি, মেন্ডারিন এবং গিটার বিভাগে অডিশন দেওয়ার ইচ্ছা আছে তাঁর।'
অডিশন শুরুর আগে প্রতিযোগীদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের বেভারেজ ব্র্যান্ড ম্যানেজার গালীব বিন মোহাম্মদ। তিনি বলেন, তারুণ্যের প্রকাশ হচ্ছে মিউজিকে। এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমরা খুঁজে পাব সেই সব তরুণ মিউজিশিয়ানকে, যাঁদের নিয়ে তৈরি হবে আগামী দিনের ব্যান্ড দল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নেসলে বাংলাদেশের ম্যানেজার, অ্যাক্টিভেশন অ্যান্ড স্যাম্পলিং মীর এস্তাফিজুর রহমান, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার মো. হামিদুর রহমান, নেসলে বাংলাদেশ, মার্কেট অ্যাঙ্সে, ইউনিট্রেন্ড, চ্যানেল আই, কালের কণ্ঠ এবং রেডিও ফুর্তির প্রতিনিধিরা।
লিড গিটার, বেইজ গিটার, ড্রামস, কিবোর্ড, ভোকাল এবং অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র ক্যাটাগরিতে দিনভর চলে অডিশন পর্ব। সিলেট অঞ্চলের বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন স্বনামধন্য মিউজিশিয়ান লাবু রহমান, সোহেল আজিজ, এনাম এলাহী টন্টি, নাইমুল হাসান তানিম এবং জিয়াউল আহসান পিয়াল।
প্রতিযোগীদের মধ্যে প্রথম 'গো কার্ড' পান সিলেটের সাঞ্জু আহমদ। লিড গিটারে প্রতিযোগিতার প্রথম ধাপ পেরোতে পেরে উচ্ছ্বসিত সাঞ্জু বললেন, 'এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে বিরত রাখবে।' মেয়েদের মধ্যে প্রথম 'গো কার্ড' পেয়ে বীথি চৌধুরী রীতিমতো বাকরুদ্ধ। বীথি বললেন, 'সেই ছোটবেলা থেকেই বড় শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন আমার। আজকের এই প্রাপ্তি আমার স্বপ্নের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া।' প্রথম দিনের অডিশন শেষে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের 'গো' কার্ড দেওয়া হয়েছে। আজ তাঁদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত বাছাই অনুষ্ঠিত হবে। বাছাইকৃতরা ঢাকায় অংশগ্রহণ করবেন গ্যালারি রাউন্ডে।
নেসক্যাফের এই আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার হচ্ছে কালের কণ্ঠ, চ্যানেল আই এবং রেডিও ফুর্তি।

No comments

Powered by Blogger.