পাটসুতা রপ্তানিতে ভারতের শুল্ক প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেই-অন্ধকারে পাট মন্ত্রণালয় by আবুল কাশেম

বাংলাদেশের ৬১টি পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিলেও বাংলাদেশ থেকে পাটসুতা রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন করে শুল্কারোপ করেছে ভারত। বাংলাদেশ থেকে পাটসুতা রপ্তানির ক্ষেত্রে দেড় মাস আগে ৪ শতাংশ হারে কাউন্টারভেলিং শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি। কিন্তু পাট মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে রয়েছে অন্ধকারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাবি্লউটিও) নীতিমালাবিরোধী ওই শুল্ক প্রত্যাহারের কোনো সুপারিশ বা উদ্যোগও নেয়নি মন্ত্রণালয়।


অবশ্য বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, 'এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।'
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পাটজাত পণ্যের উপকরণ কাঁচাপাটের ক্ষেত্রে ভারতে কোনো এঙ্াইজ ডিউটি নেই। তাই সমতার ভিত্তিতে আমদানি পর্যায়ে পাটজাত পণ্যের ওপর কোনো কাউন্টারভেলিং ডিউটি (সিভিটি) আরোপ করা যায় না। দেশটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাবি্লউটিও) নীতিমালাবিরোধী কাজ করেছে।
কর্মকর্তারা বলেন, সম্প্রতি ভারতের বাজারে বাংলাদেশের আরো ১৫টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে। সে সময় বাংলাদেশের অন্য আরেকটি পণ্যের ওপর এ ধরনের শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি আরো বাড়বে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ভারত যাতে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করে, সে ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (সাফটা) আওতায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ৬১টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারও দিল দেশটি। এ অবস্থায় নতুন করে পাটসুতার ওপর শুল্ক আরোপ করায় এটি অকার্যকর চুক্তিতে পরিণত হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওই চিঠির একটি কপি অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ তারেকের কাছে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফুল মকবুল জানান, পাটসুতা রপ্তানির ওপর ভারতের কাউন্টারভেলিং শুল্কারোপের ব্যাপারে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তাই শুল্ক প্রত্যাহারের ব্যাপারেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন সংকটের কারণে আমাদের পাটের বাজার সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এখন বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাটসুতা রপ্তানির ক্ষেত্রে কাউন্টারভেলিং শুল্ক আরোপ করলে তা রপ্তানিতে আরো বিরূপ প্রভাব ফেলবে।'
গত ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাটজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৪ শতাংশ হারে কাউন্টারভেলিং ডিউটি ও অতিরিক্ত কাউন্টারভেলিং শুল্ক আরোপ করেছিল ভারত। ওই সময় ভারতের ওই সিদ্ধান্তের জোরালো প্রতিবাদ করে বাংলাদেশ। ফলে শেষ পর্যন্ত পাটজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ওই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ভারত।

No comments

Powered by Blogger.