উইকেটের ফাঁদে : পাকিস্তানকে ফাঁদে ফেলতে একটু স্লো উইকেট বানানো ছিল বাংলাদেশের পরিকল্পনা। কিন্তু বাংলাদেশে যা হয় গোলমালে সেটাই হয়ে গেল ভয়ংকর টার্নিং উইকেট। আর তাতে বাংলাদেশ একেবারে বিধ্বস্ত। পাকিস্তানের বৈচিত্র্যময় স্পিনশক্তিকে এমন উইকেট দিলে এটাই তো হওয়ার কথা।-অথচ বাংলাদেশ নিজেরাই... by নোমান মোহাম্মদ
ঠিক ৪৯ দিন আগে এই মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ১৩২ রান টপকে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেখানে পাকিস্তান কাল করল এর চেয়ে মাত্র তিন রান বেশি। এবারও তো জিততে পারে বাংলাদেশ!না, পারে না। কারণ সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে এই পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ অনেক বেশি ধারালো। এর চেয়েও বড় কথা, সেবার-এবারের উইকেটে চোখে পড়ার মতো পার্থক্য। ২২ গজের আয়তক্ষেত্রে বাংলাদেশের বোলাররাই বল ঘুরিয়েছেন লাটিমের
মতো। শহীদ আফ্রিদি, সাঈদ আজমল, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ হাফিজরা কি চড়কির মতো ঘোরাবেন না? অমন উইকেট পেয়ে তাঁদের নিশ্চয়ই চোখ চকচক করে উঠেছিল। আপাতদৃষ্টিতে মাঝারি গোছের সংগ্রহ নিয়েও অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক তাই ছিলেন স্বস্তিতে। এমন উইকেটে ১৩৫ রান যে নিরাপদের চেয়েও বেশি! পাকিস্তানের ব্যাটিং শেষে খোলা চোখে যতই বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা দেখাক, ম্যাচ আসলে শেষ ওই প্রথম ইনিংসেই। হয়েছেও তাই। ৯ উইকেটে ৮৫ রান তুলে ৫০ রানে হার মেনে নিয়ে ড্রেসিংরুমের আড়ালে বাংলাদেশ।
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিমের কাছে পাকিস্তান বোলিং আক্রমণ নিয়ে প্রশ্ন হয়েছিল। হোম কন্ডিশনের সুবিধা কিভাবে নেবে তাঁর দল, উত্তর দিতে হয়েছে এ নিয়েও। 'আসলে পাকিস্তানের পেস-স্পিন দুই বিভাগই ভারসাম্যপূর্ণ। আর নিজেদের সেরাটা যদি খেলতে না পারি, তাহলে হোম কন্ডিশনের সুবিধাটা নেব কিভাবে'_আত্মবিশ্বাসের সুরে বললেও একটা অসহায়ত্বের চোরাস্রোত ঠিকই ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের উচ্চারণে। কারণ সেরা খেলা খেললেও বা কেমন উইকেট বানালে স্বাগতিক হিসেবে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারবে বাংলাদেশ! পেস বোলিং কখনোই মুশফিকের দলের শক্তির জায়গা না, অতএব সেটি বাদ। ভরসা সেই স্পিন, কিন্তু সেখানেও তো প্রতিপক্ষ দলে মায়াবী ঘাতকের ছড়াছড়ি। এহেন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একমাত্র সমাধান হতে পারত, এমন উইকেট যেখানে বল খানিকটা ধীরগতিতে আসে। পাকিস্তান দলের ব্যাটসম্যানদের অনেকেই যেহেতু আড়াআড়ি খেলে অভ্যস্ত, সে ক্ষেত্রে উইকেট হারানোর ঝুঁকি। আবার এমন উইকেটে ঝুঁকিমুক্ত ব্যাটিং মানেই সোজা ব্যাটে খেলার বাধ্যবাধ্যকতা। সেটি করতে গেলে দ্রুতগতিতে রান তোলাটা যেকোনো দলের জন্যই কষ্টকর হতো।
অথচ কাল কিউরেটর বানিয়ে রাখলেন রীতিমতো টার্নিং উইকেট। বল কিছুটা ধীরে হয়তো এসেছে, তবে সেটি ছাপিয়ে ছিল যাকে বলে 'শার্প টার্ন'। সাপের ছোবলের মতো বল গেছে এদিক-ওদিক। সাকিব-রাজ্জাক-নাসিরদের কারো মূল অস্ত্রই টার্ন নয়। অথচ কালকের উইকেটে তারা রীতিমতো একেকজন ওয়ার্ন-মুরালি বনে গিয়েছিলেন। তাতে পাকিস্তানকে আটকে রাখা গেছে ১৩৫ রানে, হেমন্তের সন্ধ্যায় দিবাস্বপ্নের রেশে কেটেছে বিরতির সময়টুকুন। কিন্তু যেই না বল হাতে তুলে নিলেন পাকিস্তানি বোলাররা, স্বপ্নভঙ্গ হতে দেরি হলো না। বোঝা গেল বুমেরাং ফিরে আসছে নিজেদের দিকে। অমন উইকেট বানানোর অর্থ যে আসলে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ!
অথচ প্রথম ইনিংসের সময় স্টেডিয়ামের আকাশে-বাতাসে ছিল স্বপ্নঘুড়ির ওড়াউড়ি। এই সাকিব পুরো ওভার ঘোল খাইয়ে আউট করেন হাফিজকে, ওই অলক কাপালির টার্নে হার মেনে স্টাম্পিং হয়ে যান উমর আকমল। আশাবাদীরা তখন ভেবেছিলেন, আজই হয়তো সেই দিন! নর্দাম্পটন-মহাকাব্যের পর আরেকটি পাকিস্তান-বধের উপলক্ষ সমাগত। কিন্তু প্রথম ওভারেই যখন হাফিজের হাতে বল তুলে দেন মিসবাহ, যাঁরা বোঝার তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন সমাপ্তিটা। মরূদ্যান তখনই পরিণত মরীচিকায়। ওই অফস্পিনারকে সামলাতে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও নাঈম ইসলামের যে ওই হিম হিম সন্ধ্যায়ও ঘাম ছোটার জোগাড়।
হাফিজেই ওই অবস্থা হলে আফ্রিদি-আজমল-শোয়েবে কী হবে! হয়েছে যা হওয়ার, তাই। টুটাফাটা উইকেটে টেস্টের পঞ্চম দিনের আচরণ করেছে টোয়েন্টি টোয়েন্টির উইকেট। সেখানে পাকিস্তানি স্পিনাররা হেসে-খেলে জিতিয়েছেন দলকে। যদিও প্রথম উইকেট উমর গুলের, যদিও স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের নির্বুদ্ধিতায় দুটি অকারণ রান আউটের সাক্ষী হয়েছে টইটম্বুর স্টেডিয়াম_তার পরও কাল পাকিস্তানের আয়েশি জয়ের মূল সেনানী স্পিনাররা। তিন পেসার উমর গুল, আইজাজ চিমা ও সোহেল তানভিরকে মিলে করতে হয়নি ৬ ওভারের বেশি। তাও হয়তো প্রয়োজন ছিল না, ওয়ানডে-টেস্টের কথা ভেবেই হয়তো তাঁদের হাত ঘোরানোর সুযোগ দিলেন মিসবাহ!
তবে কে জানে, অতিথিপরায়ণ বাংলাদেশ যদি এমন আত্মঘাতী উইকেট সিরিজের বাকি অংশেও বানায়, তাহলে হয়তো ওই টুকটাক বোলিংয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে পাকিস্তানি পেসারদের। আর কাজের কাজি হওয়ার জন্য তো আছেনই আফ্রিদি-শোয়েব-আজমল-হাফিজরা!
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিমের কাছে পাকিস্তান বোলিং আক্রমণ নিয়ে প্রশ্ন হয়েছিল। হোম কন্ডিশনের সুবিধা কিভাবে নেবে তাঁর দল, উত্তর দিতে হয়েছে এ নিয়েও। 'আসলে পাকিস্তানের পেস-স্পিন দুই বিভাগই ভারসাম্যপূর্ণ। আর নিজেদের সেরাটা যদি খেলতে না পারি, তাহলে হোম কন্ডিশনের সুবিধাটা নেব কিভাবে'_আত্মবিশ্বাসের সুরে বললেও একটা অসহায়ত্বের চোরাস্রোত ঠিকই ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের উচ্চারণে। কারণ সেরা খেলা খেললেও বা কেমন উইকেট বানালে স্বাগতিক হিসেবে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারবে বাংলাদেশ! পেস বোলিং কখনোই মুশফিকের দলের শক্তির জায়গা না, অতএব সেটি বাদ। ভরসা সেই স্পিন, কিন্তু সেখানেও তো প্রতিপক্ষ দলে মায়াবী ঘাতকের ছড়াছড়ি। এহেন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একমাত্র সমাধান হতে পারত, এমন উইকেট যেখানে বল খানিকটা ধীরগতিতে আসে। পাকিস্তান দলের ব্যাটসম্যানদের অনেকেই যেহেতু আড়াআড়ি খেলে অভ্যস্ত, সে ক্ষেত্রে উইকেট হারানোর ঝুঁকি। আবার এমন উইকেটে ঝুঁকিমুক্ত ব্যাটিং মানেই সোজা ব্যাটে খেলার বাধ্যবাধ্যকতা। সেটি করতে গেলে দ্রুতগতিতে রান তোলাটা যেকোনো দলের জন্যই কষ্টকর হতো।
অথচ কাল কিউরেটর বানিয়ে রাখলেন রীতিমতো টার্নিং উইকেট। বল কিছুটা ধীরে হয়তো এসেছে, তবে সেটি ছাপিয়ে ছিল যাকে বলে 'শার্প টার্ন'। সাপের ছোবলের মতো বল গেছে এদিক-ওদিক। সাকিব-রাজ্জাক-নাসিরদের কারো মূল অস্ত্রই টার্ন নয়। অথচ কালকের উইকেটে তারা রীতিমতো একেকজন ওয়ার্ন-মুরালি বনে গিয়েছিলেন। তাতে পাকিস্তানকে আটকে রাখা গেছে ১৩৫ রানে, হেমন্তের সন্ধ্যায় দিবাস্বপ্নের রেশে কেটেছে বিরতির সময়টুকুন। কিন্তু যেই না বল হাতে তুলে নিলেন পাকিস্তানি বোলাররা, স্বপ্নভঙ্গ হতে দেরি হলো না। বোঝা গেল বুমেরাং ফিরে আসছে নিজেদের দিকে। অমন উইকেট বানানোর অর্থ যে আসলে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ!
অথচ প্রথম ইনিংসের সময় স্টেডিয়ামের আকাশে-বাতাসে ছিল স্বপ্নঘুড়ির ওড়াউড়ি। এই সাকিব পুরো ওভার ঘোল খাইয়ে আউট করেন হাফিজকে, ওই অলক কাপালির টার্নে হার মেনে স্টাম্পিং হয়ে যান উমর আকমল। আশাবাদীরা তখন ভেবেছিলেন, আজই হয়তো সেই দিন! নর্দাম্পটন-মহাকাব্যের পর আরেকটি পাকিস্তান-বধের উপলক্ষ সমাগত। কিন্তু প্রথম ওভারেই যখন হাফিজের হাতে বল তুলে দেন মিসবাহ, যাঁরা বোঝার তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন সমাপ্তিটা। মরূদ্যান তখনই পরিণত মরীচিকায়। ওই অফস্পিনারকে সামলাতে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও নাঈম ইসলামের যে ওই হিম হিম সন্ধ্যায়ও ঘাম ছোটার জোগাড়।
হাফিজেই ওই অবস্থা হলে আফ্রিদি-আজমল-শোয়েবে কী হবে! হয়েছে যা হওয়ার, তাই। টুটাফাটা উইকেটে টেস্টের পঞ্চম দিনের আচরণ করেছে টোয়েন্টি টোয়েন্টির উইকেট। সেখানে পাকিস্তানি স্পিনাররা হেসে-খেলে জিতিয়েছেন দলকে। যদিও প্রথম উইকেট উমর গুলের, যদিও স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের নির্বুদ্ধিতায় দুটি অকারণ রান আউটের সাক্ষী হয়েছে টইটম্বুর স্টেডিয়াম_তার পরও কাল পাকিস্তানের আয়েশি জয়ের মূল সেনানী স্পিনাররা। তিন পেসার উমর গুল, আইজাজ চিমা ও সোহেল তানভিরকে মিলে করতে হয়নি ৬ ওভারের বেশি। তাও হয়তো প্রয়োজন ছিল না, ওয়ানডে-টেস্টের কথা ভেবেই হয়তো তাঁদের হাত ঘোরানোর সুযোগ দিলেন মিসবাহ!
তবে কে জানে, অতিথিপরায়ণ বাংলাদেশ যদি এমন আত্মঘাতী উইকেট সিরিজের বাকি অংশেও বানায়, তাহলে হয়তো ওই টুকটাক বোলিংয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে পাকিস্তানি পেসারদের। আর কাজের কাজি হওয়ার জন্য তো আছেনই আফ্রিদি-শোয়েব-আজমল-হাফিজরা!
No comments