ইভেন্ট অব দ্য উইক-অন্য এক দক্ষিণ এশিয়ার স্বপ্নে-১৮ থেকে ২২ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়ে গেল 'দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাল ফোরাম'। উৎসবমুখর পরিবেশে জমজমাট ছিল পাঁচদিনের এ আয়োজন

ক্ষিণ এশিয়ায় সামাজিক পরিবর্তনের জন্য গণতন্ত্র : অংশগ্রহণ, সাম্য ও শান্তি'_এই স্লোগান নিয়েই আয়োজিত হলো সম্মেলন। যেখানে হাজির হয়েছিলেন ৪০টি দেশের ৭২৪ প্রতিনিধিসহ ১০ হাজার সামাজিক আন্দোলনকর্মী। চার দিনের এই সম্মেলন শুরু হয় ১৮ নভেম্বর। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফোরামের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ফোরামের অন্যতম সংগঠক চিকো টাঙ্গুয়া জানান, ২০০৭


সালে অনুষ্ঠিত বালি জলবায়ু সম্মেলনে বিভিন্ন আলোচনার সূত্র ধরে প্রথম দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাল ফোরাম গঠনের চিন্তাভাবনা শুরু হয়। সে চিন্তার ফলাফলই এবারের আয়োজন।
পাঁচ দিনের কর্মযজ্ঞ : বিষয়ভিত্তিক কর্মশালা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, যুব সম্মেলন, শোভাযাত্রা, চিত্রপ্রদর্শনী, ছাত্র-যুব-ফোরাম, বর্ধিত ফোরাম, কারুপণ্য মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজনে পাঁচ দিন যেন উৎসবের আঙ্গিনা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
২৫ নভেম্বর সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় সোশ্যাল ফোরামের আন্তর্জাতিক কাউন্সিল। দেশ-বিদেশের শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন এতে। ইরাকের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইসমাইল দাউদ বললেন, 'এখানে এসে বুঝেছি ইরাকিরা যে জন্য লড়ছে, এখানকার মানুষও লড়ছে সে জন্যই। তবে ধরনটা ভিন্ন। একঙ্গে হয়েছি?একসঙ্গে থাকব বলে।'
দম ফেলার ফুরসত নেই : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট এবং বিএনসিসির সদস্যরা পাঁচ দিন নানাভাবে সহায়তা করেছেন আয়োজকদের। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গঠন করা হয় স্বেচ্ছাসেবক দল। টিএসসির মুনীর চৌধুরী সম্মেলনকক্ষে স্থাপন করা হয় দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাল ফোরামের অস্থায়ী সচিবালয়।
এমন একটি বড় আয়োজনে কাজ করতে পেরে ছাত্রছাত্রীরা খুশি। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী এবং বুলেটিন টিমের সদস্য নাজমা সুলতানা জানালেন, 'পাঁচটি দিন যে কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারিনি। সারাক্ষণ কোথায় কী হচ্ছে সেই খবরের পেছনে ছুটতে হতো আমাদের।' অনলাইনে ফোরামের খবর সরাসরি জানানোর দায়িত্বে ছিলেন প্রমা। তিনি বলেন, 'হয়তো দুপুরে খেতে বসেছি, এমন সময় কিছু একটা খবর এলো। দেরী করার উপায় নেই, লিখতে বসে গেছি।'
মেলায় যাই রে : ফোরামের অংশ হিসেবে মুহসীন হল মাঠে আয়োজন করা হয় 'সামাজিক মেলা'র। হাতে তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছে সেখানে। দেশ-বিদেশের ৮৮টি স্টল অংশ নেয় এই মেলায়। 'হোমনেট পাকিস্তান' নামের একটি স্টলে গয়না এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের বিশেষ পোশাক বিক্রি করছিলেন পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের ছাত্রী জুলকা। তিনি জানান, বাংলাদেশের লোকজন খুবই আন্তরিক। তারা আমাদের হাতের তৈরি গয়না এবং সালোয়ার-কুর্তা বেশ পছন্দ করেছে।
ভিড় ছিল বাংলাদেশি খাবারের স্টলেও। আমাদের এখানে ভাত, তিন ধরনের ভর্তা, শর্ষে ইলিশ, চাটনি ও ডাল মাত্র ১৬০ টাকায় খাওয়ার সুযোগ পেয়ে নানা দেশের অতিথিরা খুবই মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানালেন চাঁদপুরের ইলিশ স্টলের বিক্রয়কর্মী সোহানুল।

No comments

Powered by Blogger.