'গণতান্ত্রিক মিসরের প্রথম পরীক্ষা'

মোবারক-পরবর্তী মিসরের প্রথম নির্বাচনে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সে দেশের গণমাধ্যমগুলো এ নির্বাচন দেশটিকে গণতান্ত্রিক মিসরে পরিণত হওয়ার অন্যতম সফল পরীক্ষা বলে মন্তব্য করেছে। খবর এএফপি, আল জাজিরার।মিসরের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত আল আখবর পত্রিকা জানিয়েছে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে মূলত নতুন মিসরের সূচনা হলো। এ নির্বাচন স্বচ্ছ বলেও মন্তব্য করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো।


ইংরেজি দৈনিক ইজিপসিয়ান মেইল এ নির্বাচনকে গণতন্ত্রায়নের প্রথম পরীক্ষা উল্লেখ করে বলেছে, সফলভাবে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হচ্ছে মিসরের জনগণ। প্রথম দফায় সোম ও মঙ্গলবার কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়াসহ বেশ কিছু শহরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় তা সম্পন্ন করতে আগামী মার্চ নাগাদ সময় লেগে যাবে। ফলাফলও ওই মাসের আগে জানা সম্ভব হবে না। দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৪ ডিসেম্বর আর তৃতীয় ও শেষ দফার ভোটগ্রহণ ৩ জানুয়ারি। এরপর পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের ভোটগ্রহণ শুরু হবে ২৯ জানুয়ারি। নির্বাচনে ৫০টির বেশি রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
গতকাল প্রথম দফা নির্বাচনের দ্বিতীয় দিনে ভোটারদের কোনো বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। ভোটকেন্দ্রে বিপুল পরিমাণ ভোটারের উপস্থিতি নির্বাচন নিয়ে সব শঙ্কা দূর করে দেয়। নির্বাচনের দু'দিন আগ পর্যন্ত চলা এক সপ্তাহের সহিংসতায় ৪২ জন নিহত হওয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত ছিল পর্যবেক্ষক মহল। এ নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে ধারণা করছে পর্যবেক্ষক মহল। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সেনা পরিষদের হাত থেকে মিসরের ক্ষমতা ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে চলে যেতে পারে। মোবারকের গত ৩০ বছরের শাসনামলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ ছিল। ভোটকেন্দ্রগুলোতে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়নি বলে ভোটাররা অভিযোগ করেছেন। কোনো কোনো কেন্দ্রে সঠিক সময়ে কালি ও ব্যালট পেপার পেঁৗছেনি বলেও জানা গেছে। তবে এসব সীমাবদ্ধতা ডিঙিয়ে দেশটিতে প্রথমবারের মতো স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলেই অনেক পর্যবেক্ষক মত দিয়েছেন। এদিকে তাহরির স্কয়ারে এখনও সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। অনেক বিক্ষোভকারী এই নির্বাচন বর্জন করে একে 'কৌতুক' বলে অভিহিত করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.