তদারকির পরও দরপতন ডিএসইতে-দিনশেষে সূচক কমেছে ৭০ পয়েন্ট সূচকের পতন

বারবার ওঠানামার পর ৭০ পয়েন্ট সূচক পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) গতকালের লেনদেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশন (এসইসি) ও ডিএসইর তদারকির পরও গতকাল এই দরপতন ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কম্পানির ৩০ শতাংশের কম শেয়ার ধারণ করা পরিচালকদের মাধ্যমে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না, তা তদারকিতে নেমেছে এই দুই সংস্থা। এর ফলে সোমবার পতনমুখী শেয়ারবাজার নাটকীয়ভাবে ঘুরে


দাঁড়ায়। কিন্তু গতকাল তদারকি সত্ত্বেও ৭০ পয়েন্ট সূচক পতন ঘটে ডিএসইতে। তবে এই পতনকে স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ। তিনি বলেন, যেহেতু স্পট মার্কেটে লেনদেন হলে পরের দিনই শেয়ার বিক্রি করা যায় সেহেতু আগের দিন যারা শেয়ার কিনেছেন, গতকাল সামান্য ওঠানামার কারণে তাঁদের অনেকেই শেয়ার বিক্রি করেছেন। আর নগদ টাকায় স্পট মার্কেটে লেনদেন করতে হয় বিধায় বাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমে গেছে। উল্লেখ্য, অভিন্ন অভিহিত মূল্য পরিবর্তনের জন্য রেকর্ড ডেটকে সামনে রেখে এই ১৩৭টি কম্পানির স্পট মার্কেটে লেনদেন হচ্ছে। আগামীকাল এর রেকর্ড ডেট।
এদিকে বিনিয়োগকারী বি এম কামাল হোসেন বলেন, বাজারে দিনভর প্রচার ছিল ৩০ শতাংশের নিচে শেয়ারধারী কম্পানির পরিচালকরা হাইকোর্টে এসইসির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। এর প্রভাবে বাজারে আস্থাহীনতা দেখা দেয়।
বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছিল ডিএসইতে। শুরুর আধঘণ্টার মধ্যে ডিএসইর সাধারণ মূল্য সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ৫২২৭ পয়েন্টে ওঠে। এ সময় ১৮৮টি কম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৯১টির, কমে যায় ৮৭টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ১০টির দাম। লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ কোটি ১২ লাখ টাকায়।
দুপুর ১২টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ৫২২৩ পয়েন্টে নামে। এ সময়ে মোট ২০৫টি কম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৮০টির, কমে যায় ১১৫টির দাম। তখনো অপরিবর্তিত থাকে ১০টির দাম। এ সময় পর্যন্ত লেনদেন হয় ৭৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
দুপুর সাড়ে ১২টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫২২০ পয়েন্টে। এ সময় ২৩০টি কম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৮৪টির, কমে ১৩১টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ১৫টি কম্পানির শেয়ারের। টাকার পরিমাণে মোট লেনদেন হয় ১০১ কোটি ২৬ লাখ টাকার।
দুপুর ১টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫২১২ পয়েন্টে। দুপুর দেড়টায় ডিএসইর সাধারণ মূল্য সূচক ২২ পয়েন্ট কমে ৫২০২ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ সময়ে মোট ২৪৭টি কম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৫২টির, কমে ১৮২টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ১৩টি কম্পানির শেয়ারের। টাকার পরিমাণে মোট লেনদেন হয় ১৫০ কোটি ৮১ লাখ টাকার।
দুপুর ২টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ৪৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫১৮১ পয়েন্টে। দুপুর আড়াইটায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ৬৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫১৫৫ পয়েন্টে। এ সময়ে মোট ২৫১টি কম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৪১টির, কমে ১৯৩টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ১৭টি কম্পানির শেয়ারের। টাকার পরিমাণে মোট লেনদেন হয় ২০৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার।
দিনশেষে সূচক আগের দিনের চেয়ে ৭০.৬৩ পয়েন্ট কমে ৫১৫৪.৬৮ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ২৫৭টি কম্পানির তিন কোটি ৭৪ লাখ এক০ হাজার ৭১২টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন সম্পন্ন হয়। এতে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫৫ কোটি ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫২৫ টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৭৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা কম। লেনদেন হওয়া ২৫৭টি কম্পানির মধ্যে দাম বাড়ে ৫০টির, কমে যায় ২০০টির এবং অপরিবর্তিত থাকে সাতটি কম্পানির শেয়ারের।
আগের দিন সোমবার ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জে সাধারণ মূল্যসূচক ১৬০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছিল ৫২২৫ পয়েন্টে। এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ৩৩১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সপ্তাহের প্রথম দিন সূচকের পতন ঘটে ৩০৮ পয়েন্ট।

No comments

Powered by Blogger.