ভিকারুন নিসা স্কুলের ছাত্রী ধর্ষণ-অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদনেও হোসনে আরা ও লুৎফরের বিরুদ্ধে অভিযোগ টেকেনি

ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখার দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।এর আগে সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাহবুবে খোদা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে


আরা ও ওই স্কুলের বসুন্ধরা শাখাপ্রধান লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে গতকালের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত ১৪ আগস্ট এ মামলায় ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম শাহাদাত হোসেন অভিযোগপত্র দেন। একই সঙ্গে অভিযোগ থেকে ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম ও ওই স্কুলের বসুন্ধরা শাখাপ্রধান লুৎফর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন। এরপর ওই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষিতার বাবা গত ২৫ আগস্ট নারাজি আবেদন জানান।
বাদী নারাজি আবেদনে বলেন, স্কুলের বসুন্ধরা শাখাপ্রধান লুৎফর রহমান ও অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমকে পরিমলের অনৈতিক কাজের কথা জানালেও তাঁরা এ-সংক্রান্ত কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট করার কাজে লিপ্ত হন। তাঁরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সাক্ষী তাঁদের ১৬১ ধারার জবানবন্দিতেও ওই দুই আসামিকে অবহিত করার কথা বলা হলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তা আমলে না নিয়ে মনগড়া একটি অভিযোগপত্র দেন। নারাজি আবেদন শুনানি শেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল ঘটনার অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে।
অধিকতর তদন্তে উল্লেখ করা হয়, ভিকারুন নিসা নূন সু্কল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম ও ওই স্কুলের বসুন্ধরা শাখাপ্রধান লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে পরিমলের ধর্ষণে সহায়তা কিংবা আলামত নষ্ট করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়নি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ঘটনার পর ছাত্রী ধর্ষণের বিষয়টি গোপন করে পরিমল কর্তৃক ছাত্রীদের প্রতি অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ আচরণের অভিযোগ এনে দশম শ্রেণীর ছাত্রীদের স্বাক্ষর সংবলিত একটি দরখাস্ত শাখাপ্রধান লুৎফুর রহমানের কাছে দাখিল করা হয়। তিনি বিষয়টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ হোসনে আরার কাছে পাঠিয়ে দেন। অন্যদিকে ধর্ষিতা ছাত্রীর পরিবার অধ্যক্ষ হোসনে আরার কাছে আরেকটি দরখাস্ত দাখিল করলে শিক্ষক পরিমলকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর ছাত্রীদের লিখিত অভিযোগও হোসনে আরা বেগম থানায় পাঠান। তাঁর আগেই ধর্ষিতা ছাত্রীর পরিবার থানায় মামলা করেন। কাজেই অধ্যক্ষ ও বসুন্ধরা শাখাপ্রধানের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তা কিংবা আলামত নষ্ট করার অভিযোগটি সত্য নয়।
এ বছর মে মাসে ভিকারুন নিসা স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে পরিমল জয়ধর তার কোচিং সেন্টারের একটি কক্ষে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ৪ জুলাই ধর্ষিতার পরিবার বাড্ডা থানায় মামলা করে।
৬ জুলাই পরিমল জয়ধরকে কেরানীগঞ্জের পরিমলের স্ত্রীর বড় বোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে পরিমল কারাগারে আছে।

No comments

Powered by Blogger.