অভিমত ভিন্নমত

লাঠিপেটাতেই কি জ্বরমুক্তি? ৫ আগস্ট প্রথম আলোয় ফারুক ওয়াসিফের ‘শিক্ষার সংকট প্রশ্নটা বেতন-ফির নয়, বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচানোর’ শীর্ষক লেখাটি আমাদের দৃষ্টিবিদ্ধ হয়েছে। লেখকের উদ্বেগের সঙ্গে আমরাও একমত: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণজোয়ারের পেছনে বাণিজ্যিকায়ন ও প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচার বন্ধ করার চেতনাই কাজ করেছিল। এ বিষয়ে কয়েকটি কথা তুলে ধরতে চাই।
রসিদ ছাড়া ৯০ লাখ টাকা আদায়ের অবাধ বাণিজ্য: ‘নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি রাহমান নাসির উদ্দিন বলেন, “বিভাগগুলো রসিদ ছাড়া অর্থ আদায় করছে। আমার বিভাগে এক হাজার ৪০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।...আমি দায়িত্বভার নেওয়ার আগে এই অর্থ দিয়ে বিভাগের অনেকে চা-নাশতা খেতেন। এখন শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ব্যয় করা হচ্ছে’ (প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১০)। বেতন ও ভর্তি-ফির বাইরেও নানা অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রসিদ ছাড়া অর্থ আদায় হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারির দৈনিক কালের কণ্ঠের ‘রসিদ ছাড়াই ৯০ লাখ টাকা!’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চলতি বছর চবিতে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে সাড়ে তিন হাজার। হিসাব করে দেখা গেছে, এরই মধ্যে রসিদ ছাড়াই বিভিন্ন বিভাগের আদায়ের পরিমাণ প্রায় ৯০ লাখ টাকা।’ সুতরাং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক আন্দোলন ১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা না করার নয়; শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ব্যবসায়িক মনোবৃত্তির বিরুদ্ধেও।
টেলিফোন বিলে ৪০ লাখ গবেষণায় মাত্র ৮ লাখ: ২০০৯-১০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫ কোটি ১২ লাখ টাকার বাজেট পেশ হয়। এতে উপাচার্যের আপ্যায়ন-ব্যয় বরাদ্দ তিন লাখ টাকা এবং উপ-উপাচার্যের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। টেলিফোন বিল বাবদ বরাদ্দ ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু গবেষণা খাতের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র আট লাখ টাকা। শিক্ষা-গবেষণার কী গুরুত্ব এই বিশ্ববিদ্যালয়ে! (সূত্র: ২০০৯-১০ সালে সিনেট কর্তৃক পেশকৃত বাজেটের ১০-১২ নম্বর পৃষ্ঠার ‘ব্যয়ের প্রধান খাতসমূহ’)।
স্বেচ্ছাচারী শিক্ষা প্রশাসন: কথিত শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগে আন্দোলনের কর্মীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। চবি প্রশাসন স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খলতা প্রদর্শনের অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ২৬ জুলাই বেলা ১১টায় ছাত্রছাত্রীরা যখন প্রক্টর অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, সম্মানিত প্রক্টররাই সেখানে তাঁদের বাধা দেন, ব্যানার কেড়ে নেন। তার পরও ছাত্রছাত্রীরা মানববন্ধন চালিয়ে যেতে থাকলে একপর্যায়ে একজন শিক্ষক দুই শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। অথচ লোকপ্রশাসন বিভাগের এক ছাত্রকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও হুমকি দিয়ে বলেছে: ‘নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে উচ্ছৃঙ্খল মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের (ভিডিও চিত্র দ্বারা চিহ্নিত) পিতামাতা অভিভাবকদের কাছে তাদের সন্তানদের সতর্ক করার জন্য চিঠি দেওয়া হচ্ছে।’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি দারুণ ব্ল্যাকমেইলের শিক্ষাই না দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
একটি প্রশ্ন: প্রশাসন বলেছে আন্দোলনকারীদের দায়দায়িত্ব আমাদের নয়। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। আমাদের বিনীত প্রশ্ন: আন্দোলন শুরুতে শান্তিপূর্ণ ছিল। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে টিয়ার শেল, লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার, শোকজ এবং বহিষ্কারের মাধ্যমে সহিংস আন্দোলনে পরিণত করেছে কারা? এই দায়িত্ব সাধারণ ছাত্ররা কেন নেবে?
জ্বরমুক্তির পথ: জ্বরের ঘোরে রোগী যখন দিবানিদ্রা যায়, তখন কারও কথা শুনতে পায় না। ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সত্যিই এখন গভীরতর অসুখেরই লক্ষণ।’ হ্যাঁ, অসুখটা গভীরে বলেই আন্দোলনকারীদের স্মারকলিপি গ্রহণ করার ন্যূনতম সহনশীলতার পরিচয় প্রশাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসনের ভাবা উচিত লাঠিপেটায় ক্যাম্পাস বন্ধ করে এই জ্বর থেকে মুক্তি মিলবে না। জলকামান আর পুলিশের অস্থায়ী ফাঁড়ি বহাল রেখে প্রশাসন কীভাবে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের চিরন্তন মেলবন্ধন আশা করে? ছাত্রদের টনক নড়েছে, প্রশাসনের টনক কি নড়বে না?
আমীর আব্বাস, রাজীব বড়ুয়া, মাহমুদ আলম সিদ্দীক, ধ্রুবজ্যোতি হোড় ও বিশুময় দেব
চট্টগ্রামের তরুণ সংস্কৃতিকর্মী, আইনজীবী, সংগঠক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।

প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন ধারা
প্রাথমিক শিক্ষাকে অনেক বেশি মানসম্মত করতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিচ্ছেন। যেমন বিদ্যালয়ের সময়সীমা নির্ধারণ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ল্যাপটপ বিতরণ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এ সবগুলো উদ্যোগই নিঃসন্দেহে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে এসব উদ্যোগের পাশাপাশি যে বিষয়টি করা প্রয়োজন, তা হলো শিক্ষার মূলমন্ত্রটি শিশুমনে সুনির্দিষ্টভাবে বপন করা। শিক্ষার সঙ্গে নৈতিকতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শিক্ষার পথে এগিয়ে যাওয়া তো স্বীয় চরিত্রকে নৈতিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই। শিক্ষিত হওয়া মানে কিছু আদর্শকে ধারণ করা। আবশ্যিক কিছু মূল্যবোধকে নিজের মধ্যে লালন করতে শেখা। তাই তো শিক্ষার আরেক নাম আলো, যে আলো আমাদের দেখা, জানা, শোনা আর উপলব্ধিকে দেয় একটি উন্মুক্ত আঙিনা, উন্মুক্ত দরজা। কিন্তু শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য কি আজ যথাযথ? আজ শিক্ষিত হওয়ার মূলমন্ত্র হচ্ছে একটি হচ্ছে সনদপত্র অর্জন করা শিক্ষার মূল আদর্শ থেকে আমরা আজ এক কথায় বহুদূরে। আর তাই তো আজ প্রাথমিক শিক্ষায় যে বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করা দরকার তা হলো নৈতিকতা বিষয়ে শিক্ষাদান। এ জন্য আদর্শলিপির কোনো তুলনা নেই। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত হাতের লেখা চর্চাবিষয়ক একটি ক্লাস বাধ্যতামূলক রাখা উচিত; সেই হাতের লেখার বিষয়গুলো নেওয়া উচিত আদর্শলিপি থেকে। এই চর্চা যদি নিয়মিত করা যায়, শিশুমনে মূল্যবোধ আর নৈতিকতার বিকাশ ঘটবেই! আমাদের স্বপ্ন অনেক, স্বপ্নপূরণের জন্য আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এগিয়ে যাওয়ার পথ হতে হবে সঠিক আর শুদ্ধ।
বন্দনা আমির, উত্তরা, ঢাকা।

যানজট নিরসনের আশু উদ্যোগ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রী, অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি: ঢাকা মহানগরের প্রকট যানজট সমস্যার আশু সমাধানকল্পে নিচে প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করা হোক।
জয়দেবপুর রেলস্টেশন থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন হয়ে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন পর্যন্ত ভোর ছয়টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ও বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় এবং সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত প্রতি দুই ঘণ্টায় উভয় দিক থেকে একটি যাত্রীবাহী শাটল ট্রেন চালু করা হোক। প্রতি স্টেশনে ট্রেনটি সর্বোচ্চ দুই মিনিট যাত্রা বিরতি করবে। এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইঞ্জিন ও প্যাসেঞ্জার ওয়াগন সর্বোচ্চ জরুরি ভিত্তিতে আমদানি করা হোক। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের বড় বড় নগরে এ ধরনের শাটল ট্রেন সার্ভিস চালু আছে। এতে আশা করা যায় যে ঢাকা মহানগরের প্রকট যানজট সমস্যা অনেকখানি কমে আসবে। বিপুল শ্রমঘণ্টা অপচয় রোধ, কাজের গতিশীলতা নিশ্চিত করা, স্থবিরতা দূরীকরণ, অর্থের অপচয় রোধ করা এবং পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। ঢাকা মহানগরে প্রস্তাবিত পাতার রেল, উড়াল সেতু নির্মাণ করতে দীর্ঘ সময় ও বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে। ততদিনে যানজট আরও বেড়ে যাবে। এই সমস্যা লাঘব করার লক্ষ্যে স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা-উদ্যোগও প্রয়োজন। শাটল ট্রেন সার্ভিস তার একটি হতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করলে যানজট সমস্যা নিরসনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ঢাকা মহানগরের অভ্যন্তরে কুড়িল বিশ্বরোড, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, মগবাজার এবং মৌচাক পয়েন্টে রেল গেটের ওপর টেকসই ইস্পাতের তৈরি হালকা সেতু জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণ করা, যার ওপর দিয়ে কেবল হালকা যানবাহন চলাচল করবে।
মোহাম্মদ শফিকুর রহমান
সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন।

হাতিরঝিল প্রকল্পের জমি-বিরোধ
জমি নিয়ে বিচারাধীন মামলায় আদালতের নির্দেশনার কারণে হাতিরঝিল প্রকল্প সম্পন্ন করতে দেরি হচ্ছে বলে রাজউক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। রাজউকের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘শক্তিমান ও অসাধু লোকেরা’, ‘আদালতের লোকজনের যোগসাজশে’ নিষেধাজ্ঞা ‘আদায় করে নিয়েছে’।
এ রকম ঢালাও মন্তব্য অনভিপ্রেত, আদালত অবমাননার শামিল। এসব মামলার উদ্ভব কেন ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে হবে এবং বিবেচনায় নিতে হবে। এসব জমি ১৯৬১ সালে নগর উন্নয়নের প্রয়োজনে হুকুম দখল করা হয়েছে বলে রাজউক দাবি করছে। কিন্তু হুকুম দখল করা জমি সঠিকভাবে চিহ্নিত করে আইনানুগ ক্ষতিপূরণ দিয়ে যথারীতি দখলে নেওয়া, সিএস, আরএস ও মহানগর জরিপে রাজউকের নামে নামজারি করা, রাজউকের পক্ষ থেকে খাজনা পরিশোধ করা, ভূমি জরিপ অধিদপ্তরে রাজউকের মালিকানা নথিবদ্ধ করা ইত্যাদি কিছুই করা হয়নি। ফলে এসব জমি মূল মালিক রেজিস্ট্রি করে অন্য কারও কাছে বিক্রি করেছে, অতঃপর পর্যায়ক্রমে আইনানুগভাবেই হাতবদল হয়ে এসেছে।
একজন ক্রেতা যদি দলিলপত্রাদি পরীক্ষা করে আইনানুগভাবে বাজারমূল্যে কোনো জমি ক্রয় করে থাকেন এবং দীর্ঘকাল ভোগ-দখল করেন, সরকার তাঁর কাছ থেকে খাজনা নিচ্ছে, পৌর করপোরেশন পৌরকর নিচ্ছে, সরকারি জরিপে তাঁর নামে নামজারি হয়েছে, তাহলে ওই ক্রেতাকে কোন অপরাধে এখন ওই জমি থেকে খালি হাতে উচ্ছেদ হয়ে সর্বস্বান্ত হতে হবে?
হাতিরঝিল এলাকায় এ ধরনের জমির অধিকাংশই নিম্ন আয়ের লোকেরা তাঁদের সর্বস্ব দিয়ে ক্রয় করেছেন। জমি ক্রয়, তার উন্নয়ন ও স্থাপনা নির্মাণে অনেকে এই জমি বন্ধক দিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণও নিয়েছেন।
এমতাবস্থায় সাধারণ নাগরিকের শেষ ভরসাস্থল আদালত। তাঁরা অবশ্যই আদালতের দ্বারস্থ হবেন এবং আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে স্থগিতাদেশ দিয়ে প্রকৃত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। এ জন্য যে সময় প্রয়োজন হবে, তা দিতে হবে। এখানে সরকারি ক্ষমতা প্রয়োগ করে জোর-জবরদস্তি করে কাউকে উচ্ছেদ করা বা কারও স্থাপনা ভেঙে দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না।
কোনো জমি কাগজ-কলমে অধিগ্রহণ করার পর ৫০ বছরেও যদি সংশ্লিষ্ট সংস্থা সে জমি নিজ দখলে নেওয়া এবং স্বীয় নামে নামজারি, খাজনা পরিশোধসহ মালিকানা-সম্পর্কিত অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পন্ন না করে থাকে, তাহলে ওই অধিগ্রহণ কার্যকর থাকে না এবং ওই সব জমি সংশ্লিষ্ট সংস্থার জমি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।
এ ধরনের জমি যথাসম্ভব প্রকল্পের বাইরে রাখলে সমস্যা কমে যায়। হাতিরঝিল প্রকল্পের নকশা প্রণয়নের সময় এবং পরবর্তীকালে রাজউক এভাবে অনেক জমি ছাড় দিয়ে বিরোধ নিষ্পন্ন করেছে। বিজেএমইএ ভবনসহ তার অনেক দৃষ্টান্ত সামনেই রয়েছে। অন্য যেসব জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও একই মনোভাব নেওয়া উচিত।
প্রকল্পের জন্য নিতান্তই অত্যাবশ্যক জমি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে বিকল্প জমি বা ন্যায়সংগত ক্ষতিপূরণ দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবে। সরকারের প্রতি সে দিকে লক্ষ রাখার আবেদন জানাচ্ছি।
সাইদুর রহমান, মেরুল বাড্ডা, ঢাকা।

বাল্যবিয়ে যেভাবে কমানো যায়
ইউনিসেফের জরিপ বলছে, বাংলাদেশে ৬৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগেই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলোর মধ্যে বাল্যবিবাহ অন্যতম। প্রসবকালে মায়ের মৃত্যু বাড়ছে, শিশুমৃত্যুর হারও বাড়ছে বাল্যবিয়ে হার বাড়ার কারণে।
অভিভাবকের অজ্ঞতা বা স্বেচ্ছাচারিতায় কিশোরীদের বাল্যবিয়ে হয়। কিন্তু এর দায়ভার ওই কিশোরীর অভিভাবকের—এমনটি ভেবে নির্বিকার থাকলে অবস্থার পরিবর্তন হবে না। সমাজের অংশ হিসেবে আমাদের সবার এ ক্ষেত্রে কিছু করার আছে। বাল্যবিয়ের প্রচলন নিরক্ষর ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার, শহরাঞ্চলের মেয়র ও কাউন্সিলররা এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। তাঁরা বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়ালে এই প্রবণতা অবশ্যই কমে আসবে। ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান বা মেম্বার নিজ এলাকায় বেশ ক্ষমতাধর। লোকজন তাঁদের মেনেও চলে, বিশেষত নিরক্ষণ গরিব মানুষেরা। কোনো মেম্বার যদি ঘোষণা করেন, তাঁর এলাকায় ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়ের বিয়ে তিনি সহ্য করবেন না, এটা দেশের আইন অনুযায়ী অপরাধ; তাহলে তাঁর কথা অমান্য করে এবং আইন ভঙ্গ করে মেয়ের বাল্যবিয়ে দেওয়ার ঘটনা হয়তো ঘটবে না।
প্রধান যে কাজটি করা দরকার তা হলো নারীকে শিক্ষিত করে তোলা। মা শিক্ষিত হবে, মেয়ে শিক্ষিত হবে, তবেই সবাই বুঝতে পারবে বাল্যবিয়ের কত ক্ষতিকর। তা ছাড়া স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পর্যায়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (নাটক, গান ইত্যাদি) মাধ্যমে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করতে হবে। মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ইমাম, পুরোহিত, ধর্মযাজকদের ভূমিকাও বাল্যবিয়ের প্রবণতা কমাতে সহায়ক হতে পারে। ইমাম, পুরোহিত এবং কাজি, অর্থাৎ যাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন, তাঁরা যদি বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, তাহলেও বাল্যবিয়ের হার অনেক কমে যেতে পারে। সুতরাং তাঁদের ভূমিকাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের মধ্যে বিয়েশাদি সম্পর্কিত আইনকানুন সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
আব্দুদ দাইন, সভাপতি, সুজন, সাঁথিয়া, পাবনা।

দেশি ধান ও জিএম ধান
স্থানীয় বিভিন্ন জাতের ধানের ব্যাপারে সচেতন হয়ে ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ইরি) বিভিন্ন দেশের এক লাখ ধরনের জাত সংরক্ষণ করে রেখেছে। শুধু মনসান্টো বা সিনজেন্টা নয়, পৃথিবীর যে কেউ ওই জাতের বীজ চাইলে ইরির কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারবে। আমরা নিজেরা যে কাজটা পারি না, সেটা করতে ইরি আমাদের সহায়তা করেছে; এ জন্য আমরা ইরির কাছে ঋণী। আমাদের স্থানীয় ধান এবং আমাদের জীববৈচিত্র্য জনসংখ্যার চাপের কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে। ফরিদা আখতার কি এটা অস্বীকার করবেন যে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আমরা সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ? ২০ বছর আগে শুনেছিলাম যে বাংলাদেশ আর মানুষের চাপ ধারণ করতে পারবে না। কিন্তু আমরা তো এখনো বেঁচে আছি। এই বিপুল জনসংখ্যার খাদ্য জোগানে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত উফশী ধানের অবদান অস্বীকার করা উচিত নয়।
একজন কৃষক ধানের জাত উৎপাদন করার জন্য মূলত ধানের ফলন দেখে থাকেন। উৎপাদন ভালো হলে অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের দিকে নজর দেন, যেমন ধানের আকার, স্বাদ ইত্যাদি। ধরা যাক, একজন কৃষককে চার রকমের ধান দেওয়া হলো, যার মধ্যে একটি স্থানীয়, একটি উচ্চফলনশীল, একটি হাইব্রিড এবং একটি জিএম ধান। তিনি কিন্তু এমন একটা জাতই বেছে নেবেন, যেটা ফলন ভালো দেবে এবং সহজে চাষযোগ্য। তাঁর জন্য বীজের মূল বংশ কোনো ব্যাপার নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর ধানের উৎপাদনের খরচ উঠে আসছে আর বাড়তি কিছু আয় হচ্ছে। তাই একটি ধানের জাত সর্বোপরি তার নিজের বৈশিষ্ট্যের জন্যই টিকে থাকবে, হাইব্রিড বা জিএম বলে নয়।
আমাদের বিজ্ঞানীরা অবশ্যই জানেন যে আমাদের স্থানীয় ধানের জাতের মধ্যে অনেক জাত লবণ সহনশীল বা পানিতে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। সেই সঙ্গে এটাও জানেন যে স্থানীয় জাতগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম, যা ফরিদা আখতার তাঁর লেখায় উল্লেখ করেননি। উচ্চফলনশীল ধানের উৎপাদন যেখানে হেক্টরপ্রতি চার টন, সেখানে স্থানীয় জাতের উৎপাদন মাত্র এক থেকে দেড় টন। সে কারণে ইরি এমনই একটি স্থানীয় জাত ঋজ১৩অ থেকে ডিএনএ মার্কারের সাহায্যে পানিতে ডুবে থাকার বৈশিষ্ট্য ক্রসিংয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয় এবং উচ্চফলনশীল বিআর ১১-এর মধ্যে স্থানান্তর করে ব্রি ধান ৫১ উদ্ভাবন করেছে, যা একই সঙ্গে বন্যা সহনশীল আবার উচ্চফলনশীল। এ কাজটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরির বিজ্ঞানীদের অনেক বছরের গবেষণারই সুফল। অনেক কৃষকের জীবিকাই এ ধানটি ফিরিয়ে দিয়েছে। ব্রি ধান ৫১-এর এই সফলতাকে ফরিদা আখতার কি অস্বীকার করতে চান? বেশ কিছু দেশ এখন জিএম শস্য উৎপাদন করছে, যেমন আফ্রিকা মহাদেশে উগান্ডা ও নাইজেরিয়া এবং এশিয়ায় ফিলিপাইন ও চীন। বাংলাদেশ করবে কি না তা সেই জিএম শস্যের বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করবে। আমার মনে হয়, সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট মনোযোগী।
জেবা ইসলাম সেরাজ
অধ্যাপক, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্য
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একের পর এক নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে ছাত্রলীগ। সর্বশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হলো। সংঘর্ষের কারণ আধিপত্য বিস্তার। কয়েক মাস আগে ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কিছুদিন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর তেমন কোনো সংঘর্ষ ঘটেনি। একটা শান্ত অবস্থা ফিরে এসেছিল। এখন ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে নেই। সব ক্ষমতা, প্রভাব, আধিপত্য এককভাবে ছাত্রলীগের হাতেই। এখন তারা নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সংঘর্ষের সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেসব অস্ত্রসহ হাতে ছবি পত্রপত্রিকায় ছাপাও হয়েছে। অথচ পুলিশ হলে হলে তল্লাশি চালিয়ে কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। এমনকি কোনো সন্ত্রাসীকেও না। অথচ ঘটনায় লিপ্ত অনেকেই বিভিন্ন হলে থাকে। পুলিশের এ অদূরদর্শিতা আমাদের হতাশ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর। সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যায়। মাসের পর মাস পড়াশোনা হয় না। সেশনজট বাড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ ছাত্রছাত্রী। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
সরকার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার ব্যাপারে অনেকবার অনেক কঠোর ব্যবস্থার কথা বলেছে। তাদের সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। আবার কখনো বলা হচ্ছে, ছাত্রলীগ নাকি আওয়ামী লীগের কেউ নয়। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব আওয়ামী লীগ নেবে না। এ ধরনের কথা আমাদের ভীষণভাবে হতাশ করে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের ছাত্রসমাজের অনুরোধ, তিনি যেন এ ব্যাপারে সজাগ হন এবং দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে তার ব্যবস্থা নেন।
মো. শামীম আখতার, রাজশাহী।
shamim_rajbd@yahoo.com

‘আমাড় সোনাড় বাংলা আমি...’
বেশ কয়েক মাস আগে প্রথম আলো এবং ‘এইচএসবিসি’ আয়োজিত ‘ভাষা প্রতিযোগ’-এর আঞ্চলিক উৎসব হয়ে গেল। গুণীজনধন্য সেই অনুষ্ঠানে আমার উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে সমবেত শিক্ষার্থীরা শপথগ্রহণের পাশাপাশি জাতীয় সংগীতও পরিবেশন করে। জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় তা এমন অদ্ভুত উচ্চারণে কেন যে গাইল, ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি।
লক্ষ করে আসছি যে শহীদের রক্তমূল্যে কেনা বাংলা ভাষা একটু একটু করে বিকৃতির দিকে এগিয়ে চলেছে। বাংলা উচ্চারণের এই বিকৃতি রোধকল্পে এক যুগ ধরে আমি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও অনেক ধরনা দিয়েছি। কিন্তু আমার মতো এক নগণ্য শিক্ষকের কথায় কে আর কান দেবে।
বাংলা ভাষার উচ্চারণ বিকৃতিকে মোটামুটি দুভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, গ্রামীণ বা আঞ্চলিক ভাষার সংমিশ্রণে সৃষ্ট উপভাষা। দ্বিতীয়টি পাশ্চাত্য টানে, উচ্চারণে বাংলা বলা। শেষেরটি করে সাধারণত শিক্ষিত শ্রেণী, বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থরা। বেসরকারি বেতার-টিভিতে এ ভাষার চল লক্ষনীয় হয়ে উঠেছে। এই শ্রেণীটি বাংলা বর্ণমালাকে অলিখিতভাবে নতুন করে বিন্যাস করেছে। যেমন, সম্প্রতি তারা ‘র’ বর্ণটি বাদ দিয়ে সেখানে ‘ড়’ ব্যবহার করছে। ‘ ঁ’ (চন্দ্রবিন্দু)-এর ব্যবহার তো অনেক আগেই বাদ দেওয়া হয়েছে। যেমন ‘সোনার’ হয়ে যায় ‘সোনাড়’, ‘আর’ হয়ে যায় ‘আড়’। অন্যদিকে কাঁদা (পৎু) হয়ে যায় কাদা (পষধু), চাঁদ, পাঁচ, বাঁশ হয়ে যায় যথাক্রমে ‘চাদ’, ‘পাচ’, বাশ ইত্যাদি। ফলে শিশুরা উচ্চারণ অনুযায়ী বানান লিখে পরীক্ষার খাতায় কম নম্বর পায়।
সম্প্রতি নতুন শিক্ষানীতির আওতায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোয় বাংলাকে আবশ্যিক করা হয়েছে। উদ্যোগটি ভালো। কিন্তু উদ্যোগটির বাস্তবায়ন ও সাফল্য নিয়ে সংশয় থেকে যায়। কারণ, ইংরেজি মাধ্যমের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বাংলা ভাষা শিক্ষাকে কীভাবে গ্রহণ করবে, এবং শিখলেও তাদের শেখাটা কতটা সঠিক হবে, তা নিয়ে অবশ্যই সন্দেহের অবকাশ থাকে। এ রকম জগাখিচুড়ি পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কিছু দায়িত্ব নিতে পারে। যেমন, প্রাথমিকভাবে সরকার মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এবং বাংলা একাডেমীর যৌথ উদ্যোগে বিজ্ঞ ভাষাবিশারদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে পারে। এই কমিটির ওপর দায়িত্ব থাকবে, বিভিন্ন বাংলা ও ইংরেজি স্কুলের প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের শুদ্ধ বাংলা শেখানোর জন্য স্কুলের শিক্ষকদের শুদ্ধ ও সঠিক বাংলা উচ্চারণের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ইংরেজি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ওপর বছরে এক বা একাধিক পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থাও তাঁরা করতে পারেন।
এভাবে বিভিন্ন গঠনমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে হয়তো আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভাষার সঠিক অবয়ব ও ভাবমূর্তি বজায় রাখতে পারব।
শামীম আরা বেগম, শিক্ষক, ঢাকা।

স্মৃতিতে রাজিয়া বেগম
কে ভেবেছিল এত অল্প সময়ে বিদায় নেবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব রাজিয়া বেগম। আমরা যখন মেডিকেল শিক্ষায় সংশ্লিষ্ট অভিভাবক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কোনো সহযোগিতাই পাচ্ছিলাম না, ভিন্ন ক্ষেত্রের একজন নিঃস্বার্থভাবে বলিষ্ঠ অভিভাবকের মতো আমাদের পথ দেখাতে থাকলেন। রাজিয়া বেগমকে যেকোনো ক্ষেত্রেই উপযোগী একজন মানুষ বলে মনে হয়েছে। ব্যক্তিজীবনে যেমন সফল ছিলেন, কর্মেও তাই। নিজের সুচিন্তিত ধারণা এবং পরিকল্পনা থেকে অনেক যুগোপযোগী কাজের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছিলেন। সজীব করে তুলেছিলেন নিজের পরিমণ্ডলকে।
আর কত মূল্যবান জীবন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ দেশের ট্রাফিক-ব্যবস্থা মানুষের চলাচলের উপযোগী হবে তা প্রশ্নই রয়ে গেল। কবেই বা সচেতন হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রাজিয়া বেগম সৎ, নির্ভীক ও ঋজু চরিত্রের একজন কিংবদন্তির নাম। তাঁর ব্যক্তিজীবন আমাদের সবার কাছে অনুসরণযোগ্য।
সাহেদ ইমরান
খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ, এনায়েতপুর, সিরাজগঞ্জ।

No comments

Powered by Blogger.