প্রকৃতি-বনের অধিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বন রক্ষা by মুশফিকুর রহমান
মধুপুরের বনে গিয়েছিলাম। ঢাকা থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার পথ। মধুপুরে পৌঁছে সড়কের ওপর আনারস আর কলার পাইকারি বাজার পেরোতে লেগে গেল আধা ঘণ্টারও বেশি। এককালে টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার প্রায় ৬৩ হাজার একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত ছিল মধুপুরের বন। এখন বড়জোর বন আছে সাত-আট হাজার একর।
প্রাচীন পত্রঝরা মধুপুরের বনাঞ্চল মূলত শালবন। তবে শাল ছাড়াও মধুপুরের বনে হরীতকী, বহেড়া, আমলকী, কড়ই, চাপালিশ, গামার, অশ্বত্থ সোনালু, গাদিলা, কাইকা, সিধা, বাজনা, সিন্দুরি, বিভিন্ন ধরনের বাঁশসহ দুই শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ, লতাগুল্ম পাওয়া যায়। মধুপুরের বনের মুখপোড়া হনুমান অনন্য। এ ছাড়া মেছোবাঘ, নানা প্রজাতির শেয়াল, বেজি, বনবিড়াল, গুইসাপ, বনমোরগসহ শতাধিক প্রজাতির বিভিন্ন পাখি, প্রাণী, পতঙ্গ মিলিয়ে এক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত জীববৈচিত্র্য এ বনের গর্ব ছিল। দুর্ভাগ্য, এখন মাত্র কয়েক প্রজাতির দেখা মেলে। এবার আমরা সৌভাগ্যক্রমে বানর, হনুমান, মেছোবাঘ, হরিণসহ কয়েক প্রজাতির পাখির দেখা পেয়েছি।
মধুপুরের বনে দুটি উঁচু টাওয়ার আছে। এর একটিতে প্রায় ১০ তলা সমান উঁচুতে উঠে চারপাশে বনের অবশেষ দেখার সুযোগ হলো। বর্ষায় সবুজ বনের সৌন্দর্য অসাধারণ। গাছের পাতার আড়ালে থাকা বিভিন্ন সতর্ক পাখির হঠাৎ দেখা মিললেও ফিঙ্গে, গো-শালিকেরা কারও পরোয়া করে বলে মনে হয় না। এই বনে বানরের দলও মানুষের কাছাকাছি আসতে অভ্যস্ত। নিয়মিত উচ্চ শব্দে বনে হাজির হওয়া পিকনিক পার্টি বোধহয় ওদের ভয় ভাঙিয়েছে। তবে হনুমানের পরিবারগুলো মানুষের কাছ থেকে দূরে উঁচু গাছে ঝুলে থাকা নিরাপদ মনে করে।
বনের বিস্তৃত অংশ পরিষ্কার করে চাষের খেত তৈরি করা হয়েছে। চাষিরা এখন ব্যস্ত ধান রোপণ করতে। প্রতিবছর বন কেটে জমির পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। আদা, হলুদ, কলা, পেঁপে, আনারসের বড় বড় বাগান গড়ে উঠেছে মধুপুরের বনে। সেসব খেত, বাগানে মজুরি খাটছে বনে বাস করা গরিব মানুষ। কিন্তু বনের জমিতে বেড়ে ওঠা আনারস, কলা বড় বড় ট্রাকে ছড়িয়ে যাচ্ছে সারা দেশে। সে সম্পদ যে বিত্তবানদের দখলে তারা অনেক ক্ষমতাবান। কেবল বনের জমি নয়, তাদের ইশারায় বনের গাছ কেটে আনা হয় নিয়মিত।
মধুপুরের বনে বাঙালি ও আদিবাসী মিলিয়ে এখন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস করে। প্রায় ৪০-৪৫ বছরে বন সংকুচিত করে এত মানুষের বসত গড়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে গড়ে উঠেছে বাজার, দোকান, বাড়ি, অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা, রাস্তা। ঢাকা-ময়মনসিংহ ব্যস্ত সড়ক এই বনের ভেতর দিয়ে নির্মিত হয়েছে। (প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে আগুনে মধুপুরের বনে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সে আগুনের উৎস প্রায়শ রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের ছুড়ে দেওয়া সিগারেটের আগুন)। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বোমাবর্ষণক্ষেত্র মধুপুরের বন। পরিকল্পিতভাবে বন কেটে আবাদি জমি তৈরি করা ছাড়াও বনে বসবাসকারী মানুষের নিত্যদিনের জ্বালানি কাঠের জোগানও আসছে এই বন থেকে। টাঙ্গাইল বন বিভাগের হিসাবে মাথাপ্রতি প্রতিদিন এক কেজি জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করলেও মধুপুর বনের আধিবাসীরা দিনে ৫০ টন বনের কাঠ ধ্বংস করছে। এর সঙ্গে বনের চারপাশে গড়ে ওঠা প্রায় ১০০ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর মৌসুমে প্রতিবছর প্রায় ছয় লাখ ৬০ হাজারটি গাছ পুড়িয়ে ফেলছে। অর্থাৎ প্রতিবছর ইটভাটা উজাড় করছে এক হাজার একর বন।
টাঙ্গাইল বন বিভাগের এখন মধুপুর বনের প্রায় ৪৫ হাজার ৫০০ একর বনভূমি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব। তাদের সুবিধার্থে চারটি রেঞ্জ ও ১০টি বিট অফিস গড়া হয়েছে। মোট জনবল প্রায় ৫০। বন বিভাগের কর্তারা বলছেন, এত বড় বনাঞ্চল সীমিত সামর্থ্য দিয়ে রক্ষা করা অসম্ভব। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অসিত রঞ্জন পাল বর্ণনা করলেন তাঁর দায়িত্বের বন সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জগুলো—বনাঞ্চলের ওপর স্থানীয় মানুষের পূর্ণ নির্ভরতা, গৃহস্থালি ও ইটভাটার জ্বালানির জন্য বনের কাঠের ব্যাপক ব্যবহার, গৃহনির্মাণসামগ্রীর জন্য বিকল্পের অভাব, বনভূমির অবৈধ দখল, ভূমি মালিকানা নিয়ে জটিলতা, রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের অসহযোগিতা এবং বন বিভাগের বাস্তবতাবিবর্জিত নীতি গ্রহণ ও তার লালন। বন বিভাগের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী মনে করেন, প্রাকৃতিক সম্পদভান্ডারকে স্থানীয় নির্ভরশীল মানুষ নিজেদের সম্পদ মনে করে সংরক্ষণে এগিয়ে না এলে বন রক্ষা করা দুরূহ।
দেশের ক্রমসংকুচিত বনাঞ্চল দেশের জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ বিপর্যয়, বন্যা, খরা, দুর্যোগ ইত্যাদি প্রশমনের সামর্থ্য হ্রাস করছে। তা ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও কার্বন হ্রাস, ভূপৃষ্ঠকে ছায়া দেওয়া, ভূমিক্ষয় রোধ, মাটিতে জৈব উপাদানের পরিমাণ ও পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বন খুবই প্রয়োজন। দেশের পরিবেশের সঙ্গে মানানসই গাছপালার বন প্রতিবেশব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ পটভূমিতে বন বিভাগের উদ্যোগে স্থানীয় নির্ভরশীল (বাঙালি ও আদিবাসী) মানুষের পুনর্বাসনের মাধ্যমে মধুপুরের পুনঃ বনায়ন কর্মসূচির এক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পে অর্থায়ন আসছে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে। নতুন বন সৃষ্টি, গাছ চুরি বন্ধ করা, বনে আগুন প্রতিরোধসহ বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ দেওয়া এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। সেই সঙ্গে বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবিকার সংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করতে প্রাথমিকভাবে ৫০০ জনের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণে অংশ নিতে আসা অনেকের পেশা ছিল বনের গাছ চুরি করা। এমনই প্রশিক্ষণার্থী সবাই আশাবাদী—প্রশিক্ষণ শেষে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, মৌমাছি পালন, কম্পোস্ট সার তৈরি, সবজি চাষ, ওষধি গাছ ও ফলের বাগান তৈরিকে পেশা হিসেবে বেছে নেবেন। বন বিভাগ প্রশিক্ষণকালে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে প্রশিক্ষণার্থীদেরও ভাতা দিচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে জীবিকা উন্নয়নে এককালীন অর্থ-সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বন বিভাগের নতুন বন সৃজন উদ্যোগ ও বনে আগুন নেভানোর কাজেও নিয়োজিত হবে। স্থানীয় সোনাপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী মধুপুর বন সংরক্ষণ ও নতুন বন সৃষ্টির জন্য স্থানীয় ও বনের ওপর নির্ভরশীল লোকজনকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন। তাঁর আশা, অতীতে বনের গাছ চুরি রোধ করতে দেয়াল তোলা, গুলি চালানোর পরও যা সম্ভব হয়নি, এবার হয়তো স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করে তা সম্ভব হবে।
ড. মুশফিকুর রহমান: পরিবেশ বিষয়ক লেখক।
মধুপুরের বনে দুটি উঁচু টাওয়ার আছে। এর একটিতে প্রায় ১০ তলা সমান উঁচুতে উঠে চারপাশে বনের অবশেষ দেখার সুযোগ হলো। বর্ষায় সবুজ বনের সৌন্দর্য অসাধারণ। গাছের পাতার আড়ালে থাকা বিভিন্ন সতর্ক পাখির হঠাৎ দেখা মিললেও ফিঙ্গে, গো-শালিকেরা কারও পরোয়া করে বলে মনে হয় না। এই বনে বানরের দলও মানুষের কাছাকাছি আসতে অভ্যস্ত। নিয়মিত উচ্চ শব্দে বনে হাজির হওয়া পিকনিক পার্টি বোধহয় ওদের ভয় ভাঙিয়েছে। তবে হনুমানের পরিবারগুলো মানুষের কাছ থেকে দূরে উঁচু গাছে ঝুলে থাকা নিরাপদ মনে করে।
বনের বিস্তৃত অংশ পরিষ্কার করে চাষের খেত তৈরি করা হয়েছে। চাষিরা এখন ব্যস্ত ধান রোপণ করতে। প্রতিবছর বন কেটে জমির পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। আদা, হলুদ, কলা, পেঁপে, আনারসের বড় বড় বাগান গড়ে উঠেছে মধুপুরের বনে। সেসব খেত, বাগানে মজুরি খাটছে বনে বাস করা গরিব মানুষ। কিন্তু বনের জমিতে বেড়ে ওঠা আনারস, কলা বড় বড় ট্রাকে ছড়িয়ে যাচ্ছে সারা দেশে। সে সম্পদ যে বিত্তবানদের দখলে তারা অনেক ক্ষমতাবান। কেবল বনের জমি নয়, তাদের ইশারায় বনের গাছ কেটে আনা হয় নিয়মিত।
মধুপুরের বনে বাঙালি ও আদিবাসী মিলিয়ে এখন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস করে। প্রায় ৪০-৪৫ বছরে বন সংকুচিত করে এত মানুষের বসত গড়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে গড়ে উঠেছে বাজার, দোকান, বাড়ি, অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা, রাস্তা। ঢাকা-ময়মনসিংহ ব্যস্ত সড়ক এই বনের ভেতর দিয়ে নির্মিত হয়েছে। (প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে আগুনে মধুপুরের বনে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সে আগুনের উৎস প্রায়শ রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের ছুড়ে দেওয়া সিগারেটের আগুন)। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বোমাবর্ষণক্ষেত্র মধুপুরের বন। পরিকল্পিতভাবে বন কেটে আবাদি জমি তৈরি করা ছাড়াও বনে বসবাসকারী মানুষের নিত্যদিনের জ্বালানি কাঠের জোগানও আসছে এই বন থেকে। টাঙ্গাইল বন বিভাগের হিসাবে মাথাপ্রতি প্রতিদিন এক কেজি জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করলেও মধুপুর বনের আধিবাসীরা দিনে ৫০ টন বনের কাঠ ধ্বংস করছে। এর সঙ্গে বনের চারপাশে গড়ে ওঠা প্রায় ১০০ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর মৌসুমে প্রতিবছর প্রায় ছয় লাখ ৬০ হাজারটি গাছ পুড়িয়ে ফেলছে। অর্থাৎ প্রতিবছর ইটভাটা উজাড় করছে এক হাজার একর বন।
টাঙ্গাইল বন বিভাগের এখন মধুপুর বনের প্রায় ৪৫ হাজার ৫০০ একর বনভূমি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব। তাদের সুবিধার্থে চারটি রেঞ্জ ও ১০টি বিট অফিস গড়া হয়েছে। মোট জনবল প্রায় ৫০। বন বিভাগের কর্তারা বলছেন, এত বড় বনাঞ্চল সীমিত সামর্থ্য দিয়ে রক্ষা করা অসম্ভব। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অসিত রঞ্জন পাল বর্ণনা করলেন তাঁর দায়িত্বের বন সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জগুলো—বনাঞ্চলের ওপর স্থানীয় মানুষের পূর্ণ নির্ভরতা, গৃহস্থালি ও ইটভাটার জ্বালানির জন্য বনের কাঠের ব্যাপক ব্যবহার, গৃহনির্মাণসামগ্রীর জন্য বিকল্পের অভাব, বনভূমির অবৈধ দখল, ভূমি মালিকানা নিয়ে জটিলতা, রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের অসহযোগিতা এবং বন বিভাগের বাস্তবতাবিবর্জিত নীতি গ্রহণ ও তার লালন। বন বিভাগের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী মনে করেন, প্রাকৃতিক সম্পদভান্ডারকে স্থানীয় নির্ভরশীল মানুষ নিজেদের সম্পদ মনে করে সংরক্ষণে এগিয়ে না এলে বন রক্ষা করা দুরূহ।
দেশের ক্রমসংকুচিত বনাঞ্চল দেশের জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ বিপর্যয়, বন্যা, খরা, দুর্যোগ ইত্যাদি প্রশমনের সামর্থ্য হ্রাস করছে। তা ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও কার্বন হ্রাস, ভূপৃষ্ঠকে ছায়া দেওয়া, ভূমিক্ষয় রোধ, মাটিতে জৈব উপাদানের পরিমাণ ও পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বন খুবই প্রয়োজন। দেশের পরিবেশের সঙ্গে মানানসই গাছপালার বন প্রতিবেশব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ পটভূমিতে বন বিভাগের উদ্যোগে স্থানীয় নির্ভরশীল (বাঙালি ও আদিবাসী) মানুষের পুনর্বাসনের মাধ্যমে মধুপুরের পুনঃ বনায়ন কর্মসূচির এক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পে অর্থায়ন আসছে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে। নতুন বন সৃষ্টি, গাছ চুরি বন্ধ করা, বনে আগুন প্রতিরোধসহ বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ দেওয়া এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। সেই সঙ্গে বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবিকার সংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করতে প্রাথমিকভাবে ৫০০ জনের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণে অংশ নিতে আসা অনেকের পেশা ছিল বনের গাছ চুরি করা। এমনই প্রশিক্ষণার্থী সবাই আশাবাদী—প্রশিক্ষণ শেষে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, মৌমাছি পালন, কম্পোস্ট সার তৈরি, সবজি চাষ, ওষধি গাছ ও ফলের বাগান তৈরিকে পেশা হিসেবে বেছে নেবেন। বন বিভাগ প্রশিক্ষণকালে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে প্রশিক্ষণার্থীদেরও ভাতা দিচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে জীবিকা উন্নয়নে এককালীন অর্থ-সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বন বিভাগের নতুন বন সৃজন উদ্যোগ ও বনে আগুন নেভানোর কাজেও নিয়োজিত হবে। স্থানীয় সোনাপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী মধুপুর বন সংরক্ষণ ও নতুন বন সৃষ্টির জন্য স্থানীয় ও বনের ওপর নির্ভরশীল লোকজনকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন। তাঁর আশা, অতীতে বনের গাছ চুরি রোধ করতে দেয়াল তোলা, গুলি চালানোর পরও যা সম্ভব হয়নি, এবার হয়তো স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করে তা সম্ভব হবে।
ড. মুশফিকুর রহমান: পরিবেশ বিষয়ক লেখক।
No comments