পবিত্র কোরআনের আলো-উহুদ যুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানি কাটিয়ে ওঠার পথনির্দেশ
১৪১. ওয়া লিইউমাহ্হিসাল্লাহুল্লাযীনা আমানূ ওয়া ইয়াম্হাক্বাল কাফিরীন। ১৪২. আম হাসিব্তুম আন তাদ্খুলুল জান্নাতা ওয়া লাম্মা ইয়া'লামিল্লাহুল্লাযীনা জাহাদূ মিন্কুম ওয়া ইয়া'লামাস সাবিরীন। ১৪৩. ওয়া লাক্বাদ কুন্তুম তামান্নাওনাল মাওতা মিন ক্বাব্লি আন তাল্ক্বাওহু; ফাক্বাদ রআইতুমূহু ওয়া আন্তুম তান্জুরূন।
১৪৪. ওয়ামা মুহাম্মাদুন ইল্লা রাসূলুন; ক্বাদ খালাত মিন ক্বাব্লিহির রুসুলু; আফায়িম্মাতা আও ক্বুতিলান ক্বালাব্তুম 'আলা আ'ক্বাবিকুম; ওয়া মাইঁ ইয়ান্ক্বালিব 'আলা 'আকি্ববাইহি ফালাইঁ ইয়াদ্বুর্রাল্লাহা শাইয়ান; ওয়া সাইয়ায্যিল্লাহুশ শাকিরীন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪১-১৪৪]
অনুবাদ : ১৪১. এর মাধ্যমে ইমানদারদের পরিশুদ্ধ করা হবে, আর কাফিরদের করা হবে নাস্তানাবুদ।
১৪২. তোমরা কি মনে করো, তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করে যাবে, অথচ আল্লাহ জেনে নেবেন না, তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে? আর এটাও জেনে নেবেন, কে ধৈর্যশীল।
১৪৩. তোমরা মৃত্যু কামনা করছিলে এর মুখোমুখি হওয়ার আগেই। আর এখন তো তা দেখতেই পাচ্ছো, দেখতে পাচ্ছো নিজেদের চোখেই।
১৪৪. মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল ছাড়া আর কিছুই নন। তাঁর আগেও বহু রাসুল গত হয়ে গেছেন। যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন অথবা তাঁকে হত্যা করা হয়, তাহলে তোমরা কি ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নেবে, সে আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা অচিরেই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান দেবেন।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো নাজিল হওয়ার পটভূমি উহুদের যুদ্ধ। আগের আয়াতে উহুদ যুদ্ধের কয়েকটি তাৎপর্যের কথা বলা হয়েছে, ১৪১ নম্বর আয়াতে অন্য একটি তাৎপর্যের কথা বলা হচ্ছে। তাৎপর্যটি হলো, এর মাধ্যমে ইমানদারদের পরিশুদ্ধ এবং কাফিরদের নিপাত করা হবে। উহুদের যুদ্ধে দৃশ্যত কাফিরদের নিপাত করা হয়নি; বরং সাময়িকভাবে বিজয়ী হয়েছিল। কিন্তু এই বিজয় প্রকৃত বিজয় নয়, এই বিজয়ের পর থেকেই তাদের নিপাতের ধারা সূচিত হয়। উহুদ যুদ্ধের কয়েক বছর পরই মুসলমানদের পক্ষে মক্কা বিজয় সম্ভব হয়।
১৪২ নম্বর আয়াতে মুসলমানদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, তোমরা কি মনে কর, অত সহজেই বেহেশতে চলে যাবে। না, অত সহজে নয়। আল্লাহ তায়ালা পরীক্ষা করে দেখবেন, কে জিহাদে অংশ নিয়েছে এবং কে কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করেছে।
১৪৩ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম_উহুদ যুদ্ধের আগের বছর বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সেই যুদ্ধে যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের উচ্চমর্যাদার কথা অবহিত হয়ে কেউ কেউ সুযোগ এলে শাহাদাতবরণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু উহুদের যুদ্ধ যখন সমাগত, তখন অনেকের মধ্যেই পিছুটান দেখা দেয়। সেই পরিস্থিতিতে তাদের উদ্দেশে এ আয়াতটি নাজিল হয়।
১৪৪ নম্বর আয়াতটির শানেনুজুল হলো_উহুদ যুদ্ধে যখন মুসলমানরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ল, স্বয়ং রাসুল (সা.) আহত হয়ে এক গর্তে পড়ে গেলেন, তখন শত্রুপক্ষ থেকে সংবাদ রটানো হলো যে রাসুল (সা.) মারা গেছেন। এই গুজব শুনে অনেক সাহাবি হতাশাগ্রস্ত ও হতোদ্যম হয়ে পড়লেন। তাঁরা যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালাতে শুরু করলেন। তাঁদের উদ্দেশে এ আয়াতটি নাজিল হয়। এতে বলা হয়েছে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) একজন রাসুল, যেমন এর আগেও অনেক রাসুল এসেছিলেন। রাসুল মারা গেলে বা নিহত হলে তাঁর প্রচারিত ধর্ম শেষ হয়ে যায় না। রাসুল যেহেতু মানুষ, তাই মরণশীল। কিন্তু তাঁর ধর্ম ও আদর্শ অমর। রাসুলের মৃত্যুতে বা অবর্তমানে যারা ধর্ম থেকে ফিরে যায়, তারা আল্লাহর প্রেরিত ধর্মের কোনো অনিষ্ট করতে পারে না। এখানে আল্লাহ তাদের শাস্তির ভয় দেখাননি; বরং আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞদের প্রতিদান প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১৪১. এর মাধ্যমে ইমানদারদের পরিশুদ্ধ করা হবে, আর কাফিরদের করা হবে নাস্তানাবুদ।
১৪২. তোমরা কি মনে করো, তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করে যাবে, অথচ আল্লাহ জেনে নেবেন না, তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে? আর এটাও জেনে নেবেন, কে ধৈর্যশীল।
১৪৩. তোমরা মৃত্যু কামনা করছিলে এর মুখোমুখি হওয়ার আগেই। আর এখন তো তা দেখতেই পাচ্ছো, দেখতে পাচ্ছো নিজেদের চোখেই।
১৪৪. মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল ছাড়া আর কিছুই নন। তাঁর আগেও বহু রাসুল গত হয়ে গেছেন। যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন অথবা তাঁকে হত্যা করা হয়, তাহলে তোমরা কি ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নেবে, সে আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা অচিরেই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান দেবেন।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো নাজিল হওয়ার পটভূমি উহুদের যুদ্ধ। আগের আয়াতে উহুদ যুদ্ধের কয়েকটি তাৎপর্যের কথা বলা হয়েছে, ১৪১ নম্বর আয়াতে অন্য একটি তাৎপর্যের কথা বলা হচ্ছে। তাৎপর্যটি হলো, এর মাধ্যমে ইমানদারদের পরিশুদ্ধ এবং কাফিরদের নিপাত করা হবে। উহুদের যুদ্ধে দৃশ্যত কাফিরদের নিপাত করা হয়নি; বরং সাময়িকভাবে বিজয়ী হয়েছিল। কিন্তু এই বিজয় প্রকৃত বিজয় নয়, এই বিজয়ের পর থেকেই তাদের নিপাতের ধারা সূচিত হয়। উহুদ যুদ্ধের কয়েক বছর পরই মুসলমানদের পক্ষে মক্কা বিজয় সম্ভব হয়।
১৪২ নম্বর আয়াতে মুসলমানদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, তোমরা কি মনে কর, অত সহজেই বেহেশতে চলে যাবে। না, অত সহজে নয়। আল্লাহ তায়ালা পরীক্ষা করে দেখবেন, কে জিহাদে অংশ নিয়েছে এবং কে কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করেছে।
১৪৩ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম_উহুদ যুদ্ধের আগের বছর বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সেই যুদ্ধে যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের উচ্চমর্যাদার কথা অবহিত হয়ে কেউ কেউ সুযোগ এলে শাহাদাতবরণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু উহুদের যুদ্ধ যখন সমাগত, তখন অনেকের মধ্যেই পিছুটান দেখা দেয়। সেই পরিস্থিতিতে তাদের উদ্দেশে এ আয়াতটি নাজিল হয়।
১৪৪ নম্বর আয়াতটির শানেনুজুল হলো_উহুদ যুদ্ধে যখন মুসলমানরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ল, স্বয়ং রাসুল (সা.) আহত হয়ে এক গর্তে পড়ে গেলেন, তখন শত্রুপক্ষ থেকে সংবাদ রটানো হলো যে রাসুল (সা.) মারা গেছেন। এই গুজব শুনে অনেক সাহাবি হতাশাগ্রস্ত ও হতোদ্যম হয়ে পড়লেন। তাঁরা যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালাতে শুরু করলেন। তাঁদের উদ্দেশে এ আয়াতটি নাজিল হয়। এতে বলা হয়েছে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) একজন রাসুল, যেমন এর আগেও অনেক রাসুল এসেছিলেন। রাসুল মারা গেলে বা নিহত হলে তাঁর প্রচারিত ধর্ম শেষ হয়ে যায় না। রাসুল যেহেতু মানুষ, তাই মরণশীল। কিন্তু তাঁর ধর্ম ও আদর্শ অমর। রাসুলের মৃত্যুতে বা অবর্তমানে যারা ধর্ম থেকে ফিরে যায়, তারা আল্লাহর প্রেরিত ধর্মের কোনো অনিষ্ট করতে পারে না। এখানে আল্লাহ তাদের শাস্তির ভয় দেখাননি; বরং আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞদের প্রতিদান প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments