দিল্লি শীর্ষ বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর সুফল চাই-প্রণব মুখার্জির ঢাকা সফর
ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির সংক্ষিপ্ত ঢাকা সফরকে গত জানুয়ারি মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে শীর্ষ বৈঠকের এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে আমরা দেখতে চাই। সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, প্রণব মুখার্জি দিল্লি শীর্ষ বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনার উদ্দেশ্যেই ঢাকা সফরে এসেছিলেন।
লক্ষণীয়, গত জানুয়ারি মাসে দিল্লিতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, সেগুলো বাস্তবায়নে ভারতের তরফে দীর্ঘসূত্রতা পরিলক্ষিত হয়। বিষয়গুলো পর্যালোচনার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি গত মাসে ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণাকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লেখেন। প্রণব মুখার্জির শনিবারের সংক্ষিপ্ত সফরটি দীপু মনির সেই আমন্ত্রণের ফল। তাঁর এই সফরকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ভারতের প্রতিশ্রুত ১০০ কোটি ডলারের ঋণসহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ অর্থের সিংহভাগ ব্যয় হবে রেল, সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়নে। এর মূল উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে ভারতের এক প্রান্তের সঙ্গে অন্য প্রান্তের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা। অর্থাৎ ভারতের প্রয়োজনকে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার দিচ্ছে; যদিও এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের সুফল এই দেশও পাবে। দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ও সুবিধা বিনিময়ের দিকগুলোকে সম্পর্ক উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে বিবেচনা করা হলে ভারতের কাছে বাংলাদেশেরও অগ্রাধিকারভিত্তিক চাহিদা রয়েছে।
যেমন, যোগাযোগ সম্প্রসারণের বিষয়টিকে বাংলাদেশ কেবল ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধরূপে না দেখে বৃহত্তর আঞ্চলিক পরিসরে দেখতে চায়। ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের দাবি। প্রণব মুখার্জি ঢাকা সফরকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশকে ট্রানজিট দিতে ভারত সম্মত হয়েছে। নেপালের পণ্যবাহী ট্রাক শিগগিরই বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসবে—তাঁর দেওয়া এই তথ্য সত্য প্রমাণিত হলে তা অবশ্যই এক বিরাট অগ্রগতি। তবে আরও কিছু অমীমাংসিত বিষয়ে ভারতের মনোযোগ ও কার্যকর উদ্যোগ দাবি করে। যেমন, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন সমস্যা। গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শীর্ষ বৈঠকের পর বলা হয়েছিল, মার্চ নাগাদ তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে; কিন্তু আজও তা হয়নি। প্রণব মুখার্জি ঢাকা সফরে এসে এ বিষয়ে কিছু বলেছেন বলে কোনো খবর পাওয়া যায়নি। দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার বিষয়টি ‘অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে’ আলোচিত হয়েছে বলে বাংলাদেশের প্রেস সচিবের বরাতে জানা গেল। এখন এ আলোচনার ফল দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষার পালা। কিছুদিন পর পর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়, তা নিরসনের স্থায়ী উদ্যোগ কখনো নেওয়া হয়নি। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিপুল বাণিজ্য-ঘাটতি কমানোর বাধাগুলো সরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশের পথ আরও প্রসারিত করার কথা অনেক বলা হয়েছে; কিন্তু এই ক্ষেত্রেও অগ্রগতি ঘটেনি।
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ পায়—ভারতের তরফে এই পুরোনো অভিযোগের সুরাহা করেছে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি শীর্ষ বৈঠকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করে এসেছেন, প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ কেউ পাবে না। এটা এত দিনে পরিষ্কার হয়েছে যে তেমন সুযোগ কেউ পাচ্ছে না। ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ চায়; বাংলাদেশ তাতেও সম্মত হয়েছে। এখন ভারতের উচিত হবে, বাংলাদেশের চাহিদাগুলো একই রকম গুরুত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে পূরণ করা। দিল্লি শীর্ষ বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই দুই দেশের সম্পর্ক উন্নততর হতে পারে।
যেমন, যোগাযোগ সম্প্রসারণের বিষয়টিকে বাংলাদেশ কেবল ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধরূপে না দেখে বৃহত্তর আঞ্চলিক পরিসরে দেখতে চায়। ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের দাবি। প্রণব মুখার্জি ঢাকা সফরকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশকে ট্রানজিট দিতে ভারত সম্মত হয়েছে। নেপালের পণ্যবাহী ট্রাক শিগগিরই বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসবে—তাঁর দেওয়া এই তথ্য সত্য প্রমাণিত হলে তা অবশ্যই এক বিরাট অগ্রগতি। তবে আরও কিছু অমীমাংসিত বিষয়ে ভারতের মনোযোগ ও কার্যকর উদ্যোগ দাবি করে। যেমন, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন সমস্যা। গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শীর্ষ বৈঠকের পর বলা হয়েছিল, মার্চ নাগাদ তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে; কিন্তু আজও তা হয়নি। প্রণব মুখার্জি ঢাকা সফরে এসে এ বিষয়ে কিছু বলেছেন বলে কোনো খবর পাওয়া যায়নি। দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার বিষয়টি ‘অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে’ আলোচিত হয়েছে বলে বাংলাদেশের প্রেস সচিবের বরাতে জানা গেল। এখন এ আলোচনার ফল দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষার পালা। কিছুদিন পর পর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়, তা নিরসনের স্থায়ী উদ্যোগ কখনো নেওয়া হয়নি। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিপুল বাণিজ্য-ঘাটতি কমানোর বাধাগুলো সরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশের পথ আরও প্রসারিত করার কথা অনেক বলা হয়েছে; কিন্তু এই ক্ষেত্রেও অগ্রগতি ঘটেনি।
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ পায়—ভারতের তরফে এই পুরোনো অভিযোগের সুরাহা করেছে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি শীর্ষ বৈঠকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করে এসেছেন, প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ কেউ পাবে না। এটা এত দিনে পরিষ্কার হয়েছে যে তেমন সুযোগ কেউ পাচ্ছে না। ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ চায়; বাংলাদেশ তাতেও সম্মত হয়েছে। এখন ভারতের উচিত হবে, বাংলাদেশের চাহিদাগুলো একই রকম গুরুত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে পূরণ করা। দিল্লি শীর্ষ বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই দুই দেশের সম্পর্ক উন্নততর হতে পারে।
No comments