ইন্নামা’ল আমাল বিন্ নিয়্যত by আবিদ রহমান
দ্বিতীয় বারের মতো আমাকে ‘মুরতাদ’ ঘোষণা করা হলো। প্রথমবার করেছিলেন জমির আল ঠেলা ‘কাঠমোল্লারা’ সাতাশ বছর আগে। কারণ গ্রাম্য রাজনীতি। অভিভাবকহীন পরিবারের সম্পত্তির অংশ বিশেষ দখলের অপচেষ্টায়। সেই ‘কাঠমোল্লার’ বেতন হতো আমাদের জমির ধানবেচা টাকায়। ফতোয়ার দফারফা হয়ে ছিলো মাসে পারিবারিক মসজিদে অন্য হুজুর নিয়োগের ‘হুমকিতে’। সেই ‘হুজুরের’ গ্রাম্য বিয়েতে গিয়েছিলাম।
সারারাত বর বসে ছিলেন মা-ফাতিমার বিয়ের কাবিনের অনুরূপ ২০/২১ ভরি রূপার সমতূল্য কাবিনের ‘আবদারে’। টাকার অংকে বড়জোর কাবিন দাঁড়ায় আড়াই হাজার। সামাজিক লজ্জায় কণ্যা পক্ষ বিয়েতে শেষাবধি সম্মত হয়েছিলো। মাস আটেক পর হুজুরের একমাত্র ভাতিজির বিয়ের সময় মা-ফাতিমার কাবিনের ধারা মানতে অস্বীকার করেছিলেন স্বয়ং হুজুর। তখন আখেরাতের আগে ইহকালীন প্রয়োজনের প্রতি ‘মনোনিবেশ’তার। এবার ’ফতোয়া’ দিলেন এক ধনী পীরের পত্রিকার সাথে যুক্তরা। সম্পাদক মহোদয় আবার স্বঘোষিত আল্লামা!
বাংলাদেশের ‘পীরেরা’ বেশ ক্ষমতাশালী। জাগতিক-গায়েবি-বাতেনী সব `জ্ঞানে’ জ্ঞানী! উনারা ঝাঁড়-ফুঁক দিলেই নিঃসন্তান মহিলারা নিমিষেই সন্তান লাভে ধন্য হতেন! ডিএনএ টেস্ট চালু হবার পর অবশ্য হুজুরেরা আজকাল নিঃসন্তান দম্পত্তিদের ‘চিকিৎসা’ চিরতরে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। জিয়া-এরশাদ দুজনেই কথায় কথায় ছুটতেন পীরের আস্তানায়। পীরদের ‘দোয়া’নিয়ে উনারা রাজনৈতিক শত্রুদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতেন।
চুয়াত্তরে রায়ের বাজারে এক পীরের আস্তানায় গিয়েছিলাম মেঝো ভাইয়ের কলেজপড়ুয়া এক প্রেমকাতর বন্ধুর সাথে। ‘নির্লোভ’ধূমপায়ী পীর কোনো টাকা-পয়সা নিতেন না। মুরীদ ও সাক্ষাৎপ্রার্থীরা একশ কুড়ি টাকা কার্টুনের ট্রিপল ফাইভ নিতেন নজরানা হিসেবে। দিনে প্রায় শ’তিনেক কার্টুন জোগাড় হতো। সেই আমলে রায়ের বাজারের পাঁচ কাঠা প্লটের মূল্যের সমান দৈনিক তিরিশ হাজার ইন কাইন্ড। ‘নির্লোভ’ হওয়াটাই ছিলো লাভজনক! তিনি কথায় কথায় ধার্মিক-অধার্মিক ‘ফতোয়া’ ঝাড়তেন। তখনো ’মুরতাদ’ ফতোয়ার চলটা বাজারে আসেনি। আমার সুশিক্ষিত খালাতো ভাই একটি মার্কিন বায়িং হাউজের কান্ট্রি ডিরেক্টর। এক পীরের পাল্লায় পড়ে পীরের প্রায় বকলম কন্যাকে সাদী করেছেন। নিজের ভাই বোন ছাড়া কোনও ’জেনানার’ সাথে দেখা-সাক্ষাৎ দেন না। বেসরকারি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বড় শ্যালক আলিফ আবাল্য পাঁচ ওয়াক্তি। কোনও দিন নামাজ কাজা করেছেন বলে শুনিনি। সারাজীবন মসজিদে পাঞ্জেগানা আদায় করেছেন। এখন শুনি আলিফ মসজিদে যান না। কারণ পাশের মসজিদে মাইকে ’বেশরিয়তি’ আযান দেওয়া হয়। ‘পীরের’ হুকুম অনুযায়ী সেই মসজিদ বয়কট করে আলিফ এখনো নিজের ঘরেই পাঞ্জেগানা নামাজে থাকেন।
বাংলা কার্তিক দুর্ভিক্ষের মাস। খেটে খাওয়া প্রতিটি মানুষের ঘরে ছোট বড় মংগা। ক্ষুধার্ত মানুষকে এক মণ চালের বিপরীতে মাসে এক মণ চালের শর্তে মাদ্রাসার মক্তবের হুজুররা নিজেদের টাকা আর ধান ‘ব্যাপার’ দেন। কোনোভাবেই এটাকে সুদ বলে মানতে রাজী নন মাদ্রাসাশিক্ষক মোহাম্মদ আলী মাওলানা। মসজিদের মোয়াজ্জিন বাকু মৌলভী। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের দেশের ‘পীর’ কার্তিক মাসে ওফাৎ যেতে পছন্দ করেন না! ইন্তেকালেও পীরদের পছন্দ ধানের গন্ধে মৌ-মৌ করা অগ্রহায়ন ও পৌষে। আর পীরদের ’মাজার’ গড়ে ওঠে ব্যস্ত মহাসড়ক আর রেললাইনের পাশে। কারণ ব্যাখ্যা করার নিশ্চয় প্রয়োজন হয় না।
আমাকে ’’মুরতাদ’ ঘোষণাকারী পত্রিকার অনেক লেখকের মধ্যে জনৈক মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল কাফী অদ্ভুত এক যুক্তি দিয়েছেন , ‘ইদানীং কতিপয় নাস্তিক মুরতাদ খুব লিখালিখি করে জানাচ্ছে যে, মালদ্বীপ, মালেয়েশিয়া কিংবা ইন্দোনেশিয়াতে মুসলমানরা আমাদের দেশের মতো এভাবে উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে কুরবানী দেয় না। কুরবানীর দিন নাকি সে সমস্ত দেশে সচারচর পশু কুরবানীর দৃশ্য খুঁজে পাওয়াটাই বিরল। এদের কথা হলো, তবে কেন আমাদের দেশে কুরবানী দেবার জন্য এত বেশি আয়োজন! এই নাস্তিকগুলো অবশ্য সউদী আরব, পাকিস্তান বা বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশে কেন যে কুরবানী হয় সেটার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। এদের জানা উচিত যে, আমাদের দেশসহ ভারত, পাকিস্তান এবং বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশের মানুষ ইসলামী আইন শাস্ত্রে হানাফী মাযহাবের অনুসারী। আর হানাফী ফিক্বহ মুতাবিক, কুরবানী দেয়া প্রত্যেক সামর্থ্যবান মু’মিন-মুসলমানের জন্য ওয়াজিব; যা ফরযের কাছাকাছি। অপরদিকে মালদ্বীপ, মালেশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার অধিকাংশ মুসলমান অন্য মাযহাব হাম্বলী, মালেকী বিশেষ করে শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী। সেখানে কুরবানী দেয়াটা সুন্নত হিসেবে পালনীয়। অবশ্য সুন্নতকে গুরুত্বসহকারে পালন করা মুসলমানদের জন্য কুরআন শরীফ অনুযায়ীই ফরয ছিলো।‘’
ভদ্রলোক প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন, কোরবানি কোরান অনুযায়ী অবশ্যপালনীয় সুন্নত। ইসলামের চারটি প্রধান মাযহাব হানাফি, শাফেয়ি, মালেকি ও হাম্বলি। হানাফিরা কোরবানিকে মানেন ওয়াজেব। আর অন্য মাযহাবের আলেমেরা কোরবানিকে মানেন সুন্নত। আমরা যারা সাধারণ মুসলমান, আমরা কোনো মাযহাব বিতর্কে না গিয়ে পিওর ধর্মচর্চ্চা ও পালন করতে চাই কোরান-সুন্নাহ আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলের নির্দেশ মোতাবেক। মাযহাব, তরিকা, পদ্ধতি ইত্যাকার বিতর্কে পীরেরা-আলেমেরা আমাদের বারবার দ্বিধা বিভক্ত করেন। আমরা সাধারণ মুসলমানেরা এইসব বিতর্কের বাইরে থেকে সিম্পলি আল্লাহ-বিল্লাহ করতে চাই। আল্লাহর এক কিতাবের, আখেরি নবীর সুন্নতের হাজারো ব্যাখ্যায় আমাদের আগ্রহ নেই।
বাংলাদেশে কর্মজীবী মহিলাদের বিরুদ্ধে নামেন ফতোয়াবাজ আলেম ও পীরেরা। নারীদের ঘরের বাইরে যাবার, স্বাবলম্বী হবার ’দুঃসাহস’ ওই পীরদের ‘ঐতিহ্যবাহী’ বাণিজ্যের পেটে কষে লাথি হাঁকায়। অথচ অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্র ও পশ্চিমা ‘ঈসীয়’ দুনিয়ায় মুসলমান মেয়েরাও একই মসজিদে দল বেঁধে জুম্মা ও ঈদের সালাত আদায় করেন। তাদের ইসলাম ক্ষুন্ন হয় না ! আমাদের মাজারগুলোতেও নারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত, যেন নারীরা সাদাদের ক্লাবে ‘ব্লাডি নিগার’।
রোজা আর ঈদের চাঁদ-বিতর্ক আমাদের দেশে আলেম মোল্লা ও পীরদের আরেক রমরমা বাণিজ্যিক ফ্রন্ট। আলেমেরা বড়জোর চাঁদ দেখার তরিকা ব্যাখ্যা করতে পারেন কিন্তু চাঁদ উঠৈছে কিংবা উঠবে কিনা এই ব্যাখ্যার দায়-দায়িত্ব দেওয়া উচিত এস্ট্রনোমার ও মেটরোলজিস্টদের। আমাদের ‘রংগরস প্রিয়’ সরকারগুলো ঢাক-ঢোল পিটিয়ে চাঁদ দেখা কমিটি বানায়। কমিটির বয়োবৃদ্ধ সদস্যরা খালি চোখে নিজের লুংগির রং ও বুঝতে পারেন না।
বাংলাদেশের ‘পীরেরা’ বেশ ক্ষমতাশালী। জাগতিক-গায়েবি-বাতেনী সব `জ্ঞানে’ জ্ঞানী! উনারা ঝাঁড়-ফুঁক দিলেই নিঃসন্তান মহিলারা নিমিষেই সন্তান লাভে ধন্য হতেন! ডিএনএ টেস্ট চালু হবার পর অবশ্য হুজুরেরা আজকাল নিঃসন্তান দম্পত্তিদের ‘চিকিৎসা’ চিরতরে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। জিয়া-এরশাদ দুজনেই কথায় কথায় ছুটতেন পীরের আস্তানায়। পীরদের ‘দোয়া’নিয়ে উনারা রাজনৈতিক শত্রুদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতেন।
চুয়াত্তরে রায়ের বাজারে এক পীরের আস্তানায় গিয়েছিলাম মেঝো ভাইয়ের কলেজপড়ুয়া এক প্রেমকাতর বন্ধুর সাথে। ‘নির্লোভ’ধূমপায়ী পীর কোনো টাকা-পয়সা নিতেন না। মুরীদ ও সাক্ষাৎপ্রার্থীরা একশ কুড়ি টাকা কার্টুনের ট্রিপল ফাইভ নিতেন নজরানা হিসেবে। দিনে প্রায় শ’তিনেক কার্টুন জোগাড় হতো। সেই আমলে রায়ের বাজারের পাঁচ কাঠা প্লটের মূল্যের সমান দৈনিক তিরিশ হাজার ইন কাইন্ড। ‘নির্লোভ’ হওয়াটাই ছিলো লাভজনক! তিনি কথায় কথায় ধার্মিক-অধার্মিক ‘ফতোয়া’ ঝাড়তেন। তখনো ’মুরতাদ’ ফতোয়ার চলটা বাজারে আসেনি। আমার সুশিক্ষিত খালাতো ভাই একটি মার্কিন বায়িং হাউজের কান্ট্রি ডিরেক্টর। এক পীরের পাল্লায় পড়ে পীরের প্রায় বকলম কন্যাকে সাদী করেছেন। নিজের ভাই বোন ছাড়া কোনও ’জেনানার’ সাথে দেখা-সাক্ষাৎ দেন না। বেসরকারি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বড় শ্যালক আলিফ আবাল্য পাঁচ ওয়াক্তি। কোনও দিন নামাজ কাজা করেছেন বলে শুনিনি। সারাজীবন মসজিদে পাঞ্জেগানা আদায় করেছেন। এখন শুনি আলিফ মসজিদে যান না। কারণ পাশের মসজিদে মাইকে ’বেশরিয়তি’ আযান দেওয়া হয়। ‘পীরের’ হুকুম অনুযায়ী সেই মসজিদ বয়কট করে আলিফ এখনো নিজের ঘরেই পাঞ্জেগানা নামাজে থাকেন।
বাংলা কার্তিক দুর্ভিক্ষের মাস। খেটে খাওয়া প্রতিটি মানুষের ঘরে ছোট বড় মংগা। ক্ষুধার্ত মানুষকে এক মণ চালের বিপরীতে মাসে এক মণ চালের শর্তে মাদ্রাসার মক্তবের হুজুররা নিজেদের টাকা আর ধান ‘ব্যাপার’ দেন। কোনোভাবেই এটাকে সুদ বলে মানতে রাজী নন মাদ্রাসাশিক্ষক মোহাম্মদ আলী মাওলানা। মসজিদের মোয়াজ্জিন বাকু মৌলভী। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের দেশের ‘পীর’ কার্তিক মাসে ওফাৎ যেতে পছন্দ করেন না! ইন্তেকালেও পীরদের পছন্দ ধানের গন্ধে মৌ-মৌ করা অগ্রহায়ন ও পৌষে। আর পীরদের ’মাজার’ গড়ে ওঠে ব্যস্ত মহাসড়ক আর রেললাইনের পাশে। কারণ ব্যাখ্যা করার নিশ্চয় প্রয়োজন হয় না।
আমাকে ’’মুরতাদ’ ঘোষণাকারী পত্রিকার অনেক লেখকের মধ্যে জনৈক মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল কাফী অদ্ভুত এক যুক্তি দিয়েছেন , ‘ইদানীং কতিপয় নাস্তিক মুরতাদ খুব লিখালিখি করে জানাচ্ছে যে, মালদ্বীপ, মালেয়েশিয়া কিংবা ইন্দোনেশিয়াতে মুসলমানরা আমাদের দেশের মতো এভাবে উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে কুরবানী দেয় না। কুরবানীর দিন নাকি সে সমস্ত দেশে সচারচর পশু কুরবানীর দৃশ্য খুঁজে পাওয়াটাই বিরল। এদের কথা হলো, তবে কেন আমাদের দেশে কুরবানী দেবার জন্য এত বেশি আয়োজন! এই নাস্তিকগুলো অবশ্য সউদী আরব, পাকিস্তান বা বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশে কেন যে কুরবানী হয় সেটার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। এদের জানা উচিত যে, আমাদের দেশসহ ভারত, পাকিস্তান এবং বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশের মানুষ ইসলামী আইন শাস্ত্রে হানাফী মাযহাবের অনুসারী। আর হানাফী ফিক্বহ মুতাবিক, কুরবানী দেয়া প্রত্যেক সামর্থ্যবান মু’মিন-মুসলমানের জন্য ওয়াজিব; যা ফরযের কাছাকাছি। অপরদিকে মালদ্বীপ, মালেশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার অধিকাংশ মুসলমান অন্য মাযহাব হাম্বলী, মালেকী বিশেষ করে শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী। সেখানে কুরবানী দেয়াটা সুন্নত হিসেবে পালনীয়। অবশ্য সুন্নতকে গুরুত্বসহকারে পালন করা মুসলমানদের জন্য কুরআন শরীফ অনুযায়ীই ফরয ছিলো।‘’
ভদ্রলোক প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন, কোরবানি কোরান অনুযায়ী অবশ্যপালনীয় সুন্নত। ইসলামের চারটি প্রধান মাযহাব হানাফি, শাফেয়ি, মালেকি ও হাম্বলি। হানাফিরা কোরবানিকে মানেন ওয়াজেব। আর অন্য মাযহাবের আলেমেরা কোরবানিকে মানেন সুন্নত। আমরা যারা সাধারণ মুসলমান, আমরা কোনো মাযহাব বিতর্কে না গিয়ে পিওর ধর্মচর্চ্চা ও পালন করতে চাই কোরান-সুন্নাহ আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলের নির্দেশ মোতাবেক। মাযহাব, তরিকা, পদ্ধতি ইত্যাকার বিতর্কে পীরেরা-আলেমেরা আমাদের বারবার দ্বিধা বিভক্ত করেন। আমরা সাধারণ মুসলমানেরা এইসব বিতর্কের বাইরে থেকে সিম্পলি আল্লাহ-বিল্লাহ করতে চাই। আল্লাহর এক কিতাবের, আখেরি নবীর সুন্নতের হাজারো ব্যাখ্যায় আমাদের আগ্রহ নেই।
বাংলাদেশে কর্মজীবী মহিলাদের বিরুদ্ধে নামেন ফতোয়াবাজ আলেম ও পীরেরা। নারীদের ঘরের বাইরে যাবার, স্বাবলম্বী হবার ’দুঃসাহস’ ওই পীরদের ‘ঐতিহ্যবাহী’ বাণিজ্যের পেটে কষে লাথি হাঁকায়। অথচ অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্র ও পশ্চিমা ‘ঈসীয়’ দুনিয়ায় মুসলমান মেয়েরাও একই মসজিদে দল বেঁধে জুম্মা ও ঈদের সালাত আদায় করেন। তাদের ইসলাম ক্ষুন্ন হয় না ! আমাদের মাজারগুলোতেও নারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত, যেন নারীরা সাদাদের ক্লাবে ‘ব্লাডি নিগার’।
রোজা আর ঈদের চাঁদ-বিতর্ক আমাদের দেশে আলেম মোল্লা ও পীরদের আরেক রমরমা বাণিজ্যিক ফ্রন্ট। আলেমেরা বড়জোর চাঁদ দেখার তরিকা ব্যাখ্যা করতে পারেন কিন্তু চাঁদ উঠৈছে কিংবা উঠবে কিনা এই ব্যাখ্যার দায়-দায়িত্ব দেওয়া উচিত এস্ট্রনোমার ও মেটরোলজিস্টদের। আমাদের ‘রংগরস প্রিয়’ সরকারগুলো ঢাক-ঢোল পিটিয়ে চাঁদ দেখা কমিটি বানায়। কমিটির বয়োবৃদ্ধ সদস্যরা খালি চোখে নিজের লুংগির রং ও বুঝতে পারেন না।
No comments