ভয়াল ১৫ নভেম্বর-'মেঘ দেখলেই বুহের মধ্যে কাঁপ শুরু অয় বুজি সিডর আইল' by তৌফিক মারুফ
আজ ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের এই দিনে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডর লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল দেশের উপকূলীয় এলাকার কমপক্ষে ১২টি জেলা। সিডরের তাণ্ডবে লাখ লাখ ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল তিন হাজার ৩৪৭ জনের। সর্বাধিক এক হাজার ৩৪৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল বরগুনা জেলায়।সিডর-বিধ্বস্ত এলাকায় এখনো নিখোঁজ প্রায় এক হাজার মানুষ। আহত মানুষের সংখ্যাও প্রায় ১০ হাজার।
ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার বেগের তীব্র ঝড়ের সঙ্গে স্থানভেদে ২০-৩০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সেদিন আঘাত হেনেছিল উপকূলের বিস্তীর্ণ জনপদে। সার্বিক যোগাযোগ ও বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত ছিল কয়েক দিন।সিডরের ভয়াল ছোবলের দুঃসহ স্মৃতি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আজও বয়ে বেড়াচ্ছে। প্রাণে বেঁচে গেলেও উপকূলের বেশির ভাগ মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি।
'আকাশে মেঘ দেখলেই বুহের মধ্যে কাঁপ (কম্পন) শুরু অয়, মনে অয় আবার বুজি সিডর আইল। আমার বাহি (বাকি) মাইয়া-পোলারেও ভাসাইয়া লইয়া যাইব'_শরণখোলার সাউথখালীর রোসনারা বেগম এভাবেই তাঁর অনুভূতির কথা বললেন। তাঁর ১০ বছর বয়সের এক মেয়ে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় সেদিন। চার দিন পর তার লাশ পাওয়া গিয়েছিল ধানক্ষেতে। তাদের ঘরটিও ভেসে গিয়েছিল।
শুধু সাউথখালী নয়, দক্ষিণের ১২ জেলাজুড়ে সিডরের তাণ্ডবলীলার স্মৃতি জ্বলজ্বল করছে। উপকূলীয় এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামে গ্রামে মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আয়োজনের। অনেক সংগঠন আয়োজন করছে স্মরণ অনুষ্ঠান। এ ছাড়া ঢাকায়ও একাধিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে সিডর স্মরণে।
সরকারি একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হিসাবেই মোট ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৯৫টি পরিবারের ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪৫৬ জনকে সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। চার লাখ ৬১ হাজার ৩৯৯ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ও ১২ লাখ ২৫ হাজার ৩০৪ একর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিধ্বস্ত হয় আড়াই হাজার কিলোমিটার বাঁধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিডর-কবলিত শরণখোলা, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, বরগুনা, তালতলী, কলাপাড়া, গলাচিপা, চরখালীসহ অন্যান্য এলাকায় এখনো বহু মানুষ ঘর পায়নি। তারা এখনো বেড়িবাঁধের ওপর বাস করছে। আবার সাহায্য হিসেবে পাওয়া ঘরগুলোর মধ্যে কয়েক হাজার আছে সামাজিক ও মানবিক দিক থেকে বসবাসের অনুপযোগী। জেলেদের অবস্থা আরো করুণ। যে জাল বা ট্রলার তাঁরা সাহায্য হিসেবে পেয়েছেন এর বেশির ভাগই ব্যবহার করতে না পেরে বিক্রি করে দিয়েছেন।
এ ছাড়া জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়েও রয়েছে নানা অনিশ্চয়তা। সিডরে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধগুলোর বেশির ভাগ এখনো আগের মতোই। কিছু মেরামত করা হলেও পরে আইলার আঘাতে তা আবার ভেঙে গেছে। মেরামতের মান খুব খারাপ হওয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের। বিকল্প বাঁধগুলো দিয়ে অল্প জোয়ারের পানিতে এখনো তালিয়ে যায় ফসলের জমি ও জনবসতি। মিঠাপানির সব উৎসও পুনঃ স্থাপন করা হয়নি।
'আকাশে মেঘ দেখলেই বুহের মধ্যে কাঁপ (কম্পন) শুরু অয়, মনে অয় আবার বুজি সিডর আইল। আমার বাহি (বাকি) মাইয়া-পোলারেও ভাসাইয়া লইয়া যাইব'_শরণখোলার সাউথখালীর রোসনারা বেগম এভাবেই তাঁর অনুভূতির কথা বললেন। তাঁর ১০ বছর বয়সের এক মেয়ে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় সেদিন। চার দিন পর তার লাশ পাওয়া গিয়েছিল ধানক্ষেতে। তাদের ঘরটিও ভেসে গিয়েছিল।
শুধু সাউথখালী নয়, দক্ষিণের ১২ জেলাজুড়ে সিডরের তাণ্ডবলীলার স্মৃতি জ্বলজ্বল করছে। উপকূলীয় এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামে গ্রামে মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আয়োজনের। অনেক সংগঠন আয়োজন করছে স্মরণ অনুষ্ঠান। এ ছাড়া ঢাকায়ও একাধিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে সিডর স্মরণে।
সরকারি একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হিসাবেই মোট ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৯৫টি পরিবারের ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪৫৬ জনকে সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। চার লাখ ৬১ হাজার ৩৯৯ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ও ১২ লাখ ২৫ হাজার ৩০৪ একর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিধ্বস্ত হয় আড়াই হাজার কিলোমিটার বাঁধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিডর-কবলিত শরণখোলা, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, বরগুনা, তালতলী, কলাপাড়া, গলাচিপা, চরখালীসহ অন্যান্য এলাকায় এখনো বহু মানুষ ঘর পায়নি। তারা এখনো বেড়িবাঁধের ওপর বাস করছে। আবার সাহায্য হিসেবে পাওয়া ঘরগুলোর মধ্যে কয়েক হাজার আছে সামাজিক ও মানবিক দিক থেকে বসবাসের অনুপযোগী। জেলেদের অবস্থা আরো করুণ। যে জাল বা ট্রলার তাঁরা সাহায্য হিসেবে পেয়েছেন এর বেশির ভাগই ব্যবহার করতে না পেরে বিক্রি করে দিয়েছেন।
এ ছাড়া জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়েও রয়েছে নানা অনিশ্চয়তা। সিডরে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধগুলোর বেশির ভাগ এখনো আগের মতোই। কিছু মেরামত করা হলেও পরে আইলার আঘাতে তা আবার ভেঙে গেছে। মেরামতের মান খুব খারাপ হওয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের। বিকল্প বাঁধগুলো দিয়ে অল্প জোয়ারের পানিতে এখনো তালিয়ে যায় ফসলের জমি ও জনবসতি। মিঠাপানির সব উৎসও পুনঃ স্থাপন করা হয়নি।
No comments