যেভাবে পারমাণবিক বোমার অতীত ঝেড়ে ফেলছে কাজাখস্তান
অধুনাবিলুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের মূল পারমাণবিক পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল সেমিপালাতিনক্স পলিগন। এর অবস্থান মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তানের পূর্বাঞ্চলে। সেমিপালাতিনক্স পলিগনের আশপাশের জনপদের মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল পারমাণবিক পরীক্ষার প্রচণ্ড শব্দ আর ধুলাবালির মেঘে ঢেকে যাওয়া আকাশ দেখে দেখে। সময়ের প্রবাহে সেই কাজাখস্তান আজ শান্তিপূর্ণ কাজে পরমাণু শক্তি ব্যবহারের অগ্রপথিক।
৮১ বছর বয়সী খাফিজ মাতায়েভের আজও স্পষ্ট মনে পড়ে পারমাণবিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনে মাটিতে ঝাঁপ দিয়ে পড়ার কথা। পারমাণবিক পরীক্ষাজনিত তেজস্ক্রিয়ার শিকার হয়ে ক্যানসারে মারা গেছেন তাঁর মা, বাবা ও ভাই।
১৯৪৯ সালে ওই এলাকায় প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়। প্রথম পরীক্ষার সেই ভয়াবহ শব্দের কথা উল্লেখ করে মাতায়েভ বলেন, ‘ওই দিন আমরা যেন পৃথিবীর আর্তনাদ শুনেছি।’
সেমিপালাতিনক্স পলিগনে ১৯৪৯ থেকে শুরু করে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরে ৪৫৬টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময় এসব পরীক্ষা পুরো বিশ্বকে আতঙ্কগ্রস্ত করত। এখন সেখানেই পারমাণবিক শক্তি শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহারের জন্য গবেষণা চলছে।
কাজাখ নেতা নুরসুলতান নজরবায়েভ ১৯৯১ সালের ২৯ আগস্ট পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধসংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন। এর কয়েক মাস পরই স্বাধীনতা পায় প্রজাতন্ত্রটি। উত্তরাধিকারসূত্রে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে পাওয়া পরমাণু অস্ত্রের বিশাল ভান্ডার স্বেচ্ছায় ধ্বংস করেন নজরবায়েভ। এ জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তাও নেওয়া হয়।
সম্প্রতি এক বক্তৃতায় নজরবায়েভ বলেন, ‘আমাদের নতুন রাষ্ট্রের শক্তিমত্তা পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর নির্ভর করবে না, বরং নির্ভর করবে পারমাণবিক অস্ত্রের সর্বৈব প্রত্যাখ্যানের ওপরই।’ দুই দশক পর আজও প্রেসিডেন্ট রয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করে কাজাখস্তান। এখন দেশটি আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার (আইএইএ) পর্যবেক্ষণে শান্তিপূর্ণ কাজের জন্য পারমাণবিক শক্তির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
জ্বালানিবিষয়ক মার্কিন উপমন্ত্রী ড্যানিয়েল পোনেম্যান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কাজাখস্তান গত মাসেই ৩৩ কেজি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরোনিয়াম শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহারের জন্য গবেষণাকেন্দ্রে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করেছে। এ ছাড়া বন্দরনগর আকতাইয়ে অবস্থিত সোভিয়েত আমলের একটি বাতিল পরমাণু চুল্লি থেকে ব্যবহূত জ্বালানি নিরাপদে পলিগন এলাকায় সরিয়ে নিয়েছে। মার্কিন উপমন্ত্রী পোনেম্যান বলেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে, ৭৭৫টি পরমাণু অস্ত্র তৈরির মতো উপাদান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সবাই যদি কাজাখস্তানের এই উদাহরণ অনুসরণ করে, তাহলে এই বিশ্ব অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ হবে।’
পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশটির সাবেক নেতা নজরবায়েভ বলেছিলেন, পারমাণবিক পরীক্ষার কারণে তেজস্ক্রিয়া তিন লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের অনেক দেশের পুরো আয়তনের চেয়েও তা বেশি।
অশীতিপর খাফিজ মাতায়েভ বলেন, ১৯৪৯ সালে প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর সময় কর্তৃপক্ষ তাঁর বাবা-মাকে বলে, ‘এটা বিপজ্জনক কিছু নয়।’ কিন্তু ১৯৫৩ সালে স্থানীয় বাসিন্দাদের তিন মাসের জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে আবার তাঁরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। অসুস্থ হলেও সেখানেই থেকে যান। পারমাণবিক পরীক্ষার কারণে বিকিরিত তেজস্ক্রিয়ায় এই বাসিন্দারা ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন—এ বিষয়টি ফাঁস হলে স্থানীয় চিকিৎসকদের রোগনির্ণয়ের অনুমতি বাতিল করা হয়।
ওই এলাকায় আত্মহত্যার হার পুরো দেশের হারের প্রায় দ্বিগুণ। ৭৪ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা মাকসুত কোসঝানভ বলেন, ‘আমরা জানি বিপজ্জনক অবস্থায় আছি। কিন্তু কোথায় যাব?’ তিনি তাঁর দুই বোনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর জন্য এই এলাকায় পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোকে দায়ী করেন।
৮১ বছর বয়সী খাফিজ মাতায়েভের আজও স্পষ্ট মনে পড়ে পারমাণবিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনে মাটিতে ঝাঁপ দিয়ে পড়ার কথা। পারমাণবিক পরীক্ষাজনিত তেজস্ক্রিয়ার শিকার হয়ে ক্যানসারে মারা গেছেন তাঁর মা, বাবা ও ভাই।
১৯৪৯ সালে ওই এলাকায় প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়। প্রথম পরীক্ষার সেই ভয়াবহ শব্দের কথা উল্লেখ করে মাতায়েভ বলেন, ‘ওই দিন আমরা যেন পৃথিবীর আর্তনাদ শুনেছি।’
সেমিপালাতিনক্স পলিগনে ১৯৪৯ থেকে শুরু করে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরে ৪৫৬টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময় এসব পরীক্ষা পুরো বিশ্বকে আতঙ্কগ্রস্ত করত। এখন সেখানেই পারমাণবিক শক্তি শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহারের জন্য গবেষণা চলছে।
কাজাখ নেতা নুরসুলতান নজরবায়েভ ১৯৯১ সালের ২৯ আগস্ট পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধসংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন। এর কয়েক মাস পরই স্বাধীনতা পায় প্রজাতন্ত্রটি। উত্তরাধিকারসূত্রে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে পাওয়া পরমাণু অস্ত্রের বিশাল ভান্ডার স্বেচ্ছায় ধ্বংস করেন নজরবায়েভ। এ জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তাও নেওয়া হয়।
সম্প্রতি এক বক্তৃতায় নজরবায়েভ বলেন, ‘আমাদের নতুন রাষ্ট্রের শক্তিমত্তা পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর নির্ভর করবে না, বরং নির্ভর করবে পারমাণবিক অস্ত্রের সর্বৈব প্রত্যাখ্যানের ওপরই।’ দুই দশক পর আজও প্রেসিডেন্ট রয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করে কাজাখস্তান। এখন দেশটি আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার (আইএইএ) পর্যবেক্ষণে শান্তিপূর্ণ কাজের জন্য পারমাণবিক শক্তির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
জ্বালানিবিষয়ক মার্কিন উপমন্ত্রী ড্যানিয়েল পোনেম্যান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কাজাখস্তান গত মাসেই ৩৩ কেজি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরোনিয়াম শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহারের জন্য গবেষণাকেন্দ্রে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করেছে। এ ছাড়া বন্দরনগর আকতাইয়ে অবস্থিত সোভিয়েত আমলের একটি বাতিল পরমাণু চুল্লি থেকে ব্যবহূত জ্বালানি নিরাপদে পলিগন এলাকায় সরিয়ে নিয়েছে। মার্কিন উপমন্ত্রী পোনেম্যান বলেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে, ৭৭৫টি পরমাণু অস্ত্র তৈরির মতো উপাদান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সবাই যদি কাজাখস্তানের এই উদাহরণ অনুসরণ করে, তাহলে এই বিশ্ব অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ হবে।’
পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশটির সাবেক নেতা নজরবায়েভ বলেছিলেন, পারমাণবিক পরীক্ষার কারণে তেজস্ক্রিয়া তিন লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের অনেক দেশের পুরো আয়তনের চেয়েও তা বেশি।
অশীতিপর খাফিজ মাতায়েভ বলেন, ১৯৪৯ সালে প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর সময় কর্তৃপক্ষ তাঁর বাবা-মাকে বলে, ‘এটা বিপজ্জনক কিছু নয়।’ কিন্তু ১৯৫৩ সালে স্থানীয় বাসিন্দাদের তিন মাসের জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে আবার তাঁরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। অসুস্থ হলেও সেখানেই থেকে যান। পারমাণবিক পরীক্ষার কারণে বিকিরিত তেজস্ক্রিয়ায় এই বাসিন্দারা ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন—এ বিষয়টি ফাঁস হলে স্থানীয় চিকিৎসকদের রোগনির্ণয়ের অনুমতি বাতিল করা হয়।
ওই এলাকায় আত্মহত্যার হার পুরো দেশের হারের প্রায় দ্বিগুণ। ৭৪ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা মাকসুত কোসঝানভ বলেন, ‘আমরা জানি বিপজ্জনক অবস্থায় আছি। কিন্তু কোথায় যাব?’ তিনি তাঁর দুই বোনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর জন্য এই এলাকায় পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোকে দায়ী করেন।
No comments