সিভিএফ সম্মেলন ও জলবায়ু পরিবর্তন by মুহাম্মদ আবদুস সোবহান

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) দু'দিনের সম্মেলন আগামী ১৩ নভেম্বর ঢাকায় শুরু হচ্ছে। ৭০০ কোটি মানুষের পৃথিবীতে দু'দিনব্যাপী সিভিএফ সম্মেলন কী রূপ ভূমিকা রাখে_ সেটাও দেখার বিষয়। এ ছাড়া ২৯ নভেম্বর আফ্রিকার ডারবানে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কোপ-১৭) অনুষ্ঠিত হবে। সিভিএফের দুটি সম্মেলনের মধ্যে প্রথমটি মালে এবং দ্বিতীয়টি কিরবাতিতে অনুষ্ঠিত হয়।


এসব সম্মেলনের সঙ্গে নদীপাড়ের মানুষ, ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসকবলিত জনপদের বাসিন্দারা কতটুকু সম্পৃক্ত_ সেটুকুও বিবেচনা জরুরি। জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং খাদ্য নিরাপত্তা একই বাঁধনে বাঁধা হয়ে থাকলে সিভিএফ সম্মেলন নিয়ে বিশেষভাবে ভাবতে হবে।
পৃথিবীতে একেকটি দেশের একেক রকম সমস্যা। একটি দেশের সমস্যা সমাধান করে একাধিক দেশ উপকৃত হতে পারে। সিভিএফ সম্মেলনে ব্যাংককের বন্যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা, পদক্ষেপ, সবশেষে বিশেষ ভূমিকা রাখা যায়। কিরগিজস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট আতামবায়েভকে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের অনুরোধ জানিয়ে একজন নতুন রাষ্ট্রনায়ককে সিভিএফে বরণ করে নিতে পারে। গ্রিস এবং ইতালির অর্থনীতি বিবেচনা করে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের ছাত্র-শিক্ষক-কৃষক-জেলে হিসেবে এ দুটি দেশে পাঠানো যায় কি-না তা গভীরভাবে উপলব্ধি জরুরি। কার্বন নিঃসরণ ইস্যুতে প্রতিবাদের পাশাপাশি অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের কাছের দ্বীপগুলোতে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের বসতি গড়তে সহায়তার জন্যও বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে প্রস্তাব করা যায়।
উপজেলাভিত্তিক জলবায়ু উদ্বাস্তুদের তালিকা তৈরি করে ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রগুলোতে ছাত্র-কৃষক-জেলে হিসেবে পাঠানোর ব্যাপারেও বাংলাদেশ সিভিএফ, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের সহযোগিতা নিতে পারে। সিভিএফের সফলতায় এর সদস্য দেশগুলোর ছাত্রদের জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিদেশি ছাত্র সংগ্রহেও বাংলাদেশ সরকার সিভিএফের সহযোগিতা নিতে পারে।
বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বলরূপে উপস্থাপনের একটা মহাসুযোগ এসেছে। এ সুযোগ, মেধা এবং সামর্থ্যকেও কাজে লাগানোর সময় এটাই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে গতিশীল করার জন্য প্রফেশনাল ইনস্টিটিউট, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশ সরকার কাজে লাগাতে পারলে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্যও মঙ্গলজনক। সিভিএফের সফলতার জন্য এই ফোরামের সদস্য দেশগুলোর কালচারাল সেন্টার ঢাকায় স্থাপনের ব্যাপারেও নীতিনির্ধারণী মহল ভেবে দেখতে পারে।
ভাওয়াল মনোহরিয়া, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
 

No comments

Powered by Blogger.