বেতন নয়, ব্যাটিং নিয়ে উদ্বিগ্ন দিলশান

বেতন নেই আট মাস। তার পরও দেশের প্রতি ভালোবাসা আর দায়বদ্ধতায় খেলে চলেছেন দিলশান, জয়াবর্ধনে, সাঙ্গাকারারা। ক্রিকেট বোর্ডের আর্থিক দুরবস্থার কারণে আন্দোলনও করেননি কোনো। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের এমন মহানুভবতায় মুগ্ধতা জানিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ। সে সঙ্গে আইসিসি আর লঙ্কান বোর্ডকে অনুরোধ করেছিলেন, পাওনা বেতন দ্রুত পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়ার।


কাজ হয়েছে তাতে। শুক্রবারের মধ্যে পাওনা বেতনের ৬৫ শতাংশ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লঙ্কান ক্রীড়ামন্ত্রী মহিনদান্দা অলতুথগামাগে। বাকি টাকাটাও মিটিয়ে দিতে চেয়েছেন জানুয়ারির মধ্যে। তাই স্মিথের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন লঙ্কান অধিনায়ক দিলশান, 'বকেয়া বেতন পরিশোধে আইসিসিকে অনুরোধ জানিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়ানোয় স্মিথ আর ডি ভিলিয়ার্সদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।'
তিন টেস্ট আর পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা এখন দক্ষিণ আফ্রিকায়। গতকাল স্থানীয় একটি দলের বিপক্ষে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নেমেছে তারা। ম্যাচটির আগে স্বাভাবিকভাবেই সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠল, তাহলে কি বেতন-ভাতা না পাওয়াই ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারার কারণ? অভিযোগটা উড়িয়ে দিলেন দিলশান, 'আমরা এখানে ক্রিকেট খেলতে এসেছি। দলের সবাই মন দিয়ে খেলাটা খেলতে চায়, বেতন নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় কেউই। প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করতে পারলে এটা কাজে আসবে টেস্ট সিরিজে। এখানে আমাদের ভালো একটা স্কোর গড়াও জরুরি। এতে টেস্ট সিরিজের আগে ফর্মে ফেরার সুযোগ পাবেন ব্যাটসম্যানরা। তাই আমাদের সব মনোযোগ এখন এ ম্যাচে।'
বর্তমান দলটির কেবল তিনজনেরই অভিজ্ঞতা আছে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলার। ২০০২ সালে সর্বশেষ সফরের সেই দলে ছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে ও দিলহারা ফার্নান্ডো। এমন অনভিজ্ঞ দল নিয়ে সবার আগে কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে চাইলেন লঙ্কান অধিনায়ক, '২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রোভিডেন্সে ১ উইকেটে হেরেছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এরপরের ম্যাচে ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ৫৫ রানে জিতেছিলাম আমরাই। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে এবারের সিরিজে। এখানে দ্রুত মানিয়ে নিতে মুখিয়েও আছে সবাই।'
ব্যাটসম্যানদের রানে না থাকাটা মাথাব্যথার কারণ দিলশানের। পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ খেলা টেস্ট সিরিজে সেঞ্চুরি পেয়েছেন কেবল সাঙ্গাকারা। শেষ ছয় টেস্ট ইনিংসে তারা অল আউট হয়েছে পাঁচবার, যার মধ্যে ২৬০ রানের নিচে তিনবার। ব্যাটিং নিয়ে তাই উদ্বিগ্ন দিলশান। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয়ের মূলমন্ত্র ফাস্ট বোলিং হলেও দিলশান বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন ব্যাটিংকেই, 'গত কয়েকটা সিরিজে মোটেও ব্যাটিং ভালো হয়নি আমাদের। দলের ব্যাটসম্যানরাও অনভিজ্ঞ। তবে সাঙ্গাকারা আর জয়াবর্ধনের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। তাদের অভিজ্ঞতা কাজে আসবে তরুণদের। রান করাটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটা করতে পারলে নিজেদের ক্রিকেটটা খেলতে পারব আমরা আর তাহলেই সম্ভব দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো।' এএফপি, এপি

No comments

Powered by Blogger.