মেসি না রোনালদো!
উনিশ শতকের শেষ দিকে অ্যারিজোনার কোনো এক খনি শহর। রুক্ষ, বুনো পশ্চিমের ধুলো ওড়া পথে মুখোমুখি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। হ্যাটের আড়াল থেকে দেখা গেল তাদের চেহারাটা। একজনের চোখে শিশুসুলভ দুষ্টুমির ঝিলিক, অন্যজনের চোখে প্রতিশোধের আগুন। দুজনেরই হোলস্টারে পিস্তলের বদলে পায়ের সামনে ফুটবল, রেফারির বাঁশির সঙ্গে সঙ্গেই তাতে কিক এবং...। এল ক্লাসিকোর বিজ্ঞাপন হতে পারে এমনও। কারণ ইতিহাস এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধনে রিয়াল
মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার দ্বৈরথটা পরিণত হয়েছে ফুটবল ম্যাচের চেয়েও বড় কিছুতে এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাবের উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢেলেছে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতা। বেশির ভাগ মানুষের বিচারে মেসিই সেরা। এমনকি অনেকের মতে কোনো বিশ্বকাপ না জিতলেও ব্যক্তিগত দক্ষতায় মেসি তাঁর স্বদেশি ম্যারাডোনা কিংবা পেলের সঙ্গে এক কাতারে। সংখ্যায় কিছুটা কম হলেও একেবারে কম নয় রোনালদোর ভক্তকুলের সংখ্যা। এমনকি সাফল্যেও খুব একটা পিছিয়ে নেই পর্তুগিজ অধিনায়ক। 'এল ক্লাসিকো' তাঁদের মুখোমুখি করে দেয় একমঞ্চে, ফুটবল দুনিয়ার সবটুকু রূপ, রস ও মাধুর্য হাজির হয় ৯০ মিনিটের স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনা নিয়ে।
অঙ্কের সাধ্য কি লিওনেল মেসির গোলের সৌন্দর্য বর্ণনা করার! গতিবেগ দিয়ে কি বোঝানো যাবে মাঠে চকিত হরিণের বেগে ছোটা রোনালদোর দৌড়ের বন্য সৌন্দর্য! তার পরেও পরিসংখ্যানের সাহায্য নিতে হয়। তাতে জাগতিক হিসাব মেলে, মুগ্ধতার মেলে না। যেমন এই মৌসুমে প্রতিপক্ষের মাঠে মেসির গোলের হিসাব নিলে, কেউই হয়তো এল ক্লাসিকোতে খুদে জাদুকরের গোল করার পক্ষে বাজি ধরবেন না। এ মৌসুমে লা লিগায় মেসির করা ১৭ গোলের ১৬টিই নিজের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে। শুধু তা-ই নয়, প্রতিপক্ষের মাঠে বার্সেলোনার অবস্থাই তো এ মৌসুমে সঙ্গীন! ৬ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জয়, তাও আবার ১-০ গোলের নূ্যনতম ব্যবধানে। রিয়াল সমর্থকরা নিশ্চয়ই বার্নাব্যুতে বার্সেলোনার দুরবস্থার কথা আগাম চিন্তা করে ঠোঁট টিপে হাসছেন! একটু সবুর করুন। প্রতিপক্ষের নাম যখন রিয়াল মাদ্রিদ, লিওনেল মেসি তখন 'সুপারম্যান'। রিয়ালের সঙ্গে ১৫ দেখায় ১৩ বারই গোল করেছেন মেসি। শুধু তা-ই নয়, ইউরোপের সবচেয়ে বিশ্বস্ত হাতের মালিক যাঁকে মনে করা হয়, সেই ইকার ক্যাসিয়াসকেই সবচেয়ে বেশি বোকা বানিয়েছেন এ আর্জেন্টাইন। স্পেনের শীর্ষপর্যায়ের ফুটবলে খেলা অন্য যেকোনো গোলরক্ষকের চাইতে ক্যাসিয়াসকেই মেসির গোল বেশি হজম করতে হয়েছে। টানা পাঁচটা 'ক্লাসিকো' ম্যাচে গোল করেছেন মেসি, যে কৃতিত্বটা আশির দশকে ছিল রিয়ালের 'চতুর শেয়াল' হুগো সানচেজের দখলে।
অবশ্য রিয়াল সমর্থকদের খানিকটা আশ্বস্ত করতে পারে ক্রিস্টিয়ানোর রোনালদোর একক নৈপুণ্য। গত মৌসুমে তেলমো জারা ও হুগো সানচেজের গড়া এক মৌসুমে ৩৮ গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন এ পর্তুগিজ উইঙ্গার। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে কখনো বার্সেলোনার বিপক্ষে জিততে পারেননি, রিয়ালের হয়েও পারছিলেন না। গত মৌসুমে অবশেষে পেনাল্টি থেকে গোল করে সেই খরা ঘুচিয়েছেন, তার কয়েক দিন বাদেই দারুণ হেডে গোল করে বার্সেলোনাকে হারিয়ে রিয়ালকে এনে দিয়েছিলেন কোপা দেল রে'র শিরোপা।
খেলাটা হবে ১১ বনাম ১১। মাঠের বাইরে থেকে অদৃশ্য একটা লড়াই চলবে হোসে মরিনহো ও পেপ গার্দিওলার মধ্যেও। কিন্তু সব ছাপিয়ে এল ক্লাসিকো মানেই মুখোমুখি রোনালদো-মেসি। যদিও রোনালদো মুখে অবশ্য বলছেন, 'আমি আসলে মেসির সঙ্গে কোনোরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনুভব করি না। অন্য সব ফুটবলারকে যেভাবে দেখি, তাকেও সেভাবেই দেখি। বাড়তি কিছু নয়, আমি আসলেই মেসির প্রতি বিন্দুমাত্র ঈর্ষা অনুভব করি না।' কিন্তু শেষ পর্যন্ত খোঁচা মারতে ছাড়েননি, 'আমার কাছে রিয়ালের হয়ে বেশি বেশি লিগ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাটাই গুরুত্বপূর্ণ, ব্যালন ডি অর জেতা নয়।' দুষ্টুমি ভরা চোখের মালিকের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধিও যে কম নয়, সেটার প্রমাণ দিতে বাকি রাখেননি মেসি, 'ব্যক্তিগত পুরস্কারকে না বলার কিছু নেই, তবে দল হিসেবে একসঙ্গে একটা শিরোপা জেতাটাই আসল। পিচিচি পুরস্কারের (স্পেনের ঘরোয়া লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার) জন্য তাকে অভিনন্দন, কিন্তু তার কোনো একটা ট্রফির সঙ্গে আমি আমার কোনো শিরোপাই অদলবদল করব না।' এএফপি
অঙ্কের সাধ্য কি লিওনেল মেসির গোলের সৌন্দর্য বর্ণনা করার! গতিবেগ দিয়ে কি বোঝানো যাবে মাঠে চকিত হরিণের বেগে ছোটা রোনালদোর দৌড়ের বন্য সৌন্দর্য! তার পরেও পরিসংখ্যানের সাহায্য নিতে হয়। তাতে জাগতিক হিসাব মেলে, মুগ্ধতার মেলে না। যেমন এই মৌসুমে প্রতিপক্ষের মাঠে মেসির গোলের হিসাব নিলে, কেউই হয়তো এল ক্লাসিকোতে খুদে জাদুকরের গোল করার পক্ষে বাজি ধরবেন না। এ মৌসুমে লা লিগায় মেসির করা ১৭ গোলের ১৬টিই নিজের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে। শুধু তা-ই নয়, প্রতিপক্ষের মাঠে বার্সেলোনার অবস্থাই তো এ মৌসুমে সঙ্গীন! ৬ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জয়, তাও আবার ১-০ গোলের নূ্যনতম ব্যবধানে। রিয়াল সমর্থকরা নিশ্চয়ই বার্নাব্যুতে বার্সেলোনার দুরবস্থার কথা আগাম চিন্তা করে ঠোঁট টিপে হাসছেন! একটু সবুর করুন। প্রতিপক্ষের নাম যখন রিয়াল মাদ্রিদ, লিওনেল মেসি তখন 'সুপারম্যান'। রিয়ালের সঙ্গে ১৫ দেখায় ১৩ বারই গোল করেছেন মেসি। শুধু তা-ই নয়, ইউরোপের সবচেয়ে বিশ্বস্ত হাতের মালিক যাঁকে মনে করা হয়, সেই ইকার ক্যাসিয়াসকেই সবচেয়ে বেশি বোকা বানিয়েছেন এ আর্জেন্টাইন। স্পেনের শীর্ষপর্যায়ের ফুটবলে খেলা অন্য যেকোনো গোলরক্ষকের চাইতে ক্যাসিয়াসকেই মেসির গোল বেশি হজম করতে হয়েছে। টানা পাঁচটা 'ক্লাসিকো' ম্যাচে গোল করেছেন মেসি, যে কৃতিত্বটা আশির দশকে ছিল রিয়ালের 'চতুর শেয়াল' হুগো সানচেজের দখলে।
অবশ্য রিয়াল সমর্থকদের খানিকটা আশ্বস্ত করতে পারে ক্রিস্টিয়ানোর রোনালদোর একক নৈপুণ্য। গত মৌসুমে তেলমো জারা ও হুগো সানচেজের গড়া এক মৌসুমে ৩৮ গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন এ পর্তুগিজ উইঙ্গার। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে কখনো বার্সেলোনার বিপক্ষে জিততে পারেননি, রিয়ালের হয়েও পারছিলেন না। গত মৌসুমে অবশেষে পেনাল্টি থেকে গোল করে সেই খরা ঘুচিয়েছেন, তার কয়েক দিন বাদেই দারুণ হেডে গোল করে বার্সেলোনাকে হারিয়ে রিয়ালকে এনে দিয়েছিলেন কোপা দেল রে'র শিরোপা।
খেলাটা হবে ১১ বনাম ১১। মাঠের বাইরে থেকে অদৃশ্য একটা লড়াই চলবে হোসে মরিনহো ও পেপ গার্দিওলার মধ্যেও। কিন্তু সব ছাপিয়ে এল ক্লাসিকো মানেই মুখোমুখি রোনালদো-মেসি। যদিও রোনালদো মুখে অবশ্য বলছেন, 'আমি আসলে মেসির সঙ্গে কোনোরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনুভব করি না। অন্য সব ফুটবলারকে যেভাবে দেখি, তাকেও সেভাবেই দেখি। বাড়তি কিছু নয়, আমি আসলেই মেসির প্রতি বিন্দুমাত্র ঈর্ষা অনুভব করি না।' কিন্তু শেষ পর্যন্ত খোঁচা মারতে ছাড়েননি, 'আমার কাছে রিয়ালের হয়ে বেশি বেশি লিগ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাটাই গুরুত্বপূর্ণ, ব্যালন ডি অর জেতা নয়।' দুষ্টুমি ভরা চোখের মালিকের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধিও যে কম নয়, সেটার প্রমাণ দিতে বাকি রাখেননি মেসি, 'ব্যক্তিগত পুরস্কারকে না বলার কিছু নেই, তবে দল হিসেবে একসঙ্গে একটা শিরোপা জেতাটাই আসল। পিচিচি পুরস্কারের (স্পেনের ঘরোয়া লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার) জন্য তাকে অভিনন্দন, কিন্তু তার কোনো একটা ট্রফির সঙ্গে আমি আমার কোনো শিরোপাই অদলবদল করব না।' এএফপি
No comments