বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে হবে-সাক্ষাৎকার by রুশনারা আলী
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : শেখ রোকন সমকাল :আমরা জানি, আপনি এবার বাংলাদেশে এসেছেন অক্সফাম গ্রেট ব্রিটেনের আমন্ত্রণে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে মতবিনিময় ও মাঠপর্যায়ের পরিদর্শন কাজে। বিষয়টি কি আরেকটু বিস্তারিত বলবেন?\ রুশনারা আলী : হ্যাঁ, আমি এবার অক্সফামের আমন্ত্রণে এসেছি। কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছি সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেখতে।
আমি সিলেটেও যাব। সেখানে অক্সফাম আয়োজিত মাঠপর্যায়ের পরিদর্শনে অংশ নেব। আমি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে এই দুই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছি। যুক্তরাজ্যে ফিরে গিয়ে আমি আমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করব, যাতে তারা জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্যোগী হয়। আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ছায়ামন্ত্রী হিসেবে আমি মাঠ পর্যায়ে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের শিকার দরিদ্র মানুষের কথা শুনতে চাই। তাদের ভয়েস আমি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ব্রিটিশ লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় চিন্তা-ভাবনার জগতে পেঁৗছে দিতে চাই। কারণ আমি মনে করি, যারা বাংলাদেশের মতো দেশে মাঠ পর্যায়ে বসবাস করে, তারা এই দুর্যোগ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখে। গত বছর আমি অক্সফামের আমন্ত্রণে ঢাকায় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ট্রাইব্যুনালে অংশ নিতে এসেছিলাম। সেখানে উপকূলীয় জেলে সম্প্রদায় জানিয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তাদের জীবন ও জীবিকায় কী ধরনের বিপত্তি তৈরি করছে। স্বামী হারানো জেলে নারীর কথা সরাসরি শোনার সুযোগ হয়েছিল তখন। তারপর দেশে ফিরে গিয়ে আমি নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি। তাদের অনেকেই আমার সঙ্গে একমত হয়েছে যে, বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে। সেই কারণে মাঠপর্যায়ে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের বক্তব্য শোনার জন্য এবার বাংলাদেশে এসেছি।
সমকাল :এ বছর জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে আপনি বলেছিলেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে গিয়ে সরকারের উচিত হবে না উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও বেশি ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া। বিশেষত তারা যখন এই পরিবর্তনের জন্য খুব একটা দায়ী নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের দায় বিষয়টি আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
রুশনারা আলী : বেশ, আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনের দায় আমাদের সবার। গোটা দুনিয়াজুড়ে যেসব কর্মকাণ্ড গত কয়েক শতকে হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে তারই পরিণতি। এর মোকাবেলার দায়িত্বও আমাদের সবাইকে নিতে হবে। এটা তো অবশ্যই ঠিক যে যেসব দেশ বেশি উন্নত জীবনযাপন করে, তাদের বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ তাদের কাছে বেশি সম্পদ রয়েছে, অর্থ রয়েছে, ক্ষমতাও রয়েছে। যেমন গত বছর উপকূলীয় অঞ্চলের যে জেলে নারীর সঙ্গে কথা হয়েছিল, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে তিনি ও তার স্বামীর জীবিকা বিনষ্ট হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় অবদান রাখার ক্ষেত্রে তার চেয়ে আমার কিংবা নরডিক দেশগুলোর নাগরিকের সম্পদগত সক্ষমতা অনেক বেশি। সুতরাং দায়দায়িত্বের ন্যায্য বণ্টন হওয়া দরকার। দেশ হিসেবে ধরলে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় ব্রিটেনের দায়িত্ব নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। কারণ যুক্তরাজ্য একটি উন্নত দেশ, আর বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। একইভাবে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ইউরোপ-আমেরিকা ছাড়াও ভারত, চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল বা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর বড় ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
সমকাল : জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য দ্বিপক্ষীয়ভাবে কী কী করতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
রুশনারা আলী : কোপেনহেগেন সম্মেলনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যে অঙ্গীকার করেছেন, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য আন্তরিক। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সম্পদ ও প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ডিএফআইডিসহ ব্রিটেনের কিছু আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশে আগে থেকেই কাজ করছে। তারা এখন জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনসাধারণ কীভাবে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে, সে ধরনের বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আপনি জানেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ছয় কোটি পাউন্ড সহায়তার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সমকাল : কিন্তু ওই অর্থ ছাড় হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল ২০০৮ সালে। মাঝে তিন বছর চলে গেছে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত কিন্তু থেমে নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক এই দুর্যোগ মোকাবেলায় আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিপুল অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন হবে।
রুশনারা আলী : ওই অর্থের ব্যবস্থাপনা ও তদারকি নিয়ে বোধহয় দুই দেশের সরকারের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। আমি মনে করি, এটা বড় কোনো জটিলতা নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। এ ব্যাপারে বিলম্ব হওয়া উচিত নয়। ব্রিটেন সবসময়ই বাংলাদেশ উন্নয়ন দেখতে চায়। আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতেও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারবে। আর একটি কথা বলতে চাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মি. ডেভিড ক্যামেরন যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে বেশ সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি আগের মতো ভূমিকা রাখছেন না। এ জন্য আমরা একটি ক্যাম্পেইনের কথা ভাবছি_ কিপ দ্য প্রমিজ। লেবার পার্টি চায়, যুক্তরাজ্য সরকার জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ইউরোপীয় কমিউনিটির সঙ্গে একত্রে কাজ করুক ও নেতৃত্ব দিক। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গেও কাজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সহায়তা তহবিল কার্যকর করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ব্রিটেন উৎসাহিত করতে পারে।
আপনার প্রশ্নের জবাবে আমি আরও বলতে চাই, বাংলাদেশ ও ব্রিটেন সরকারের পাশাপাশি দুই দেশের নাগরিক সমাজ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে একত্রে কাজ করতে পারে ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমি নিজের যুক্তরাজ্যের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সরকার কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের নাগরিক সমাজও এই ইস্যুতে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে পারে। সরকার যাতে সঠিকপথে থাকে, সে জন্য পরামর্শও দিতে পারে। আমি জানি, বেসরকারি পর্যায়ে এ দেশে এমন কয়েক ব্যক্তি রয়েছেন, যারা জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন।
সমকাল :বাংলাদেশ থেকে আমরা সবসময় বলে আসছি যে, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা হওয়া উচিত অনুদান, ঋণ নয়। একটি সংবাদে দেখেছি, আপনি নিজেও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এ বিষয়টির প্রতি জোর দিয়েছেন।
রুশনারা আলী : আমি আসলে দুটি বিষয় বলার চেষ্টা করছিলাম। প্রথমত, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য কেবল বিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দ করলেই হবে না। সেটা যদি নতুন তহবিল না হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ তৈরি হয় না। এ জন্য আমি পার্লামেন্টে ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বলে থাকি যে জলবায়ু পরিবর্তন সহায়তা তহবিল হতে হবে 'নতুন অর্থ'। উন্নয়নশীল বিশ্বে উন্নত দেশগুলো শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে যে সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে থাকে, সেটা কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার কর্মসূচি দেওয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যে সহায়তা দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া হবে, তা যেন অনুদান হয়, ঋণ নয়। যেসব দেশ ইতিমধ্যে ঋণের ভারে জর্জরিত, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার নামে সেগুলোর ওপর নতুন করে ঋণ চাপিয়ে দেওয়া সমর্থন করা যায় না। গত বছর বাংলাদেশ সফর করে যাওয়ার পর আমি আমাদের সরকারকে বলেছি, বিদ্যমান সহায়তা তহবিলের বাইরে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য নতুন তহবিল গঠন করতে হবে। এ ব্যাপারে ব্রিটেনে জনমত গঠনের জন্য কাজ করছি আমি।
সমকাল : কেবল ব্রিটেনে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে আসলে জনমত গঠন করা দরকার। যাতে করে উন্নত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার ক্ষেত্রে, আপনি যেমনটি বলছেন, 'নতুন অর্থ' সংগ্রহ করে।
রুশনারা আলী : এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ দেশে ১৬ কোটি কণ্ঠস্বর রয়েছে। এটি একটি বিরাট সংখ্যা। তারা সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। তারা বলতে পারে যে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা করতে গিয়ে বিদ্যমান সহায়তা কার্যক্রমগুলো কমিয়ে আনা চলবে না। নতুন তহবিল গঠন করতে হবে। এখানকার নাগরিক সমাজ সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে পেঁৗছে দিতে পারে। আমি নিজে এমন একটি ক্যাম্পেইনের ব্যাপারে তৎপর। বাংলাদেশ থেকে কোটি কোটি কণ্ঠস্বরের সমর্থন যদি পাওয়া যায়, তাহলে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আমার সহকর্মীদের বোঝাতে সক্ষম হবো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝাতে হবে যে তাদের এখনই উদ্যোগী হতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে লাখ লাখ মানুষ এখনই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ভুগছে। এবারের সফর থেকে ফিরে গিয়ে আমি ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের সঙ্গে বসব, তারা যাতে সেখান থেকে নিজেদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারে। ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারাবিশ্বে যে বাংলাদেশি রয়েছেন, তারা উদ্যোগী হলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের বিপদের বিষয়টি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা কঠিন হবে না।
সমকাল : ব্রিটেনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের মাতৃভূমির বিপদ সম্পর্কে কতটা সচেতন?
রুশনারা আলী : তারা এখনও বিষয়টি নিয়ে এখনও সম্ভবত এতটা স্পষ্ট ধারণা পায়নি। কিন্তু তারা যেহেতু বাংলাদেশের ভালো চায়, এখানে তাদের আত্মীয়-পরিজন রয়েছে, নাগরিক প্রতিনিধিরা উদ্যোগী হলে প্রবাসীরা নিশ্চয়ই সাড়া দেবে।
সমকাল : আপনি নিজে দুই ধরনের দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রায় কোনো ভূমিকা না রাখা উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করার পর এখন আপনি ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। অর্থায়নের প্রশ্নে দুই দেশকেই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা করতে হবে বিপরীতধর্মী দুই অবস্থানে থেকে। আপনি ব্যক্তিগতভাবে এই ইস্যুতে কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারেন?
রুশনারা আলী : আপনাকে বলতে পারি, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সম্পৃক্ত হতে আমার আগ্রহ তৈরি হওয়ার পেছনে রয়েছে ব্যক্তিগত বিবেচনা। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমার পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজন সবাই বাংলাদেশের। আপনি জানেন, আমি নিজে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি এবং সাত বছর বয়সে এখান থেকে অভিবাসিত হয়েছি। এখন আমি যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে বা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একমাত্র সদস্য, যার শিকড় হচ্ছে বাংলাদেশে। এই দেশ যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিরাট হুমকির মুখে থাকে, তখন আমার সক্রিয় হওয়া ছাড়া কোনো কিছু করার থাকে না।
আমি মনে করছি, আমাকে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব দেখা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে দেখা দেবে সে সম্পর্কে যুক্তরাজ্য এবং একই সঙ্গে ইউরোপের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলকে সচেতন ও সতর্ক করে তুলতে হবে। আমি ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক, জ্যেষ্ঠ আমলা ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে আমার বক্তব্য তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি এ দেশে জন্মেছি, এখানকার মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। কিছু ফার্স্টহ্যান্ড অভিজ্ঞতা শোনার সুযোগ আমার হয়েছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যথাযথ চিত্র তুলে ধরার ক্ষেত্রে আমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারব। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কাজ করার জন্য বাংলাদেশি ও ব্রিটেনের নাগরিকদের একটি অভিন্ন প্লাটফর্ম তৈরি করার ক্ষেত্রে আমি ভালো কাজ করতে পারব।
সমকাল : ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
রুশনারা আলী : সমকালের জন্য শুভেচ্ছা।
সমকাল :এ বছর জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে আপনি বলেছিলেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে গিয়ে সরকারের উচিত হবে না উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও বেশি ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া। বিশেষত তারা যখন এই পরিবর্তনের জন্য খুব একটা দায়ী নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের দায় বিষয়টি আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
রুশনারা আলী : বেশ, আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনের দায় আমাদের সবার। গোটা দুনিয়াজুড়ে যেসব কর্মকাণ্ড গত কয়েক শতকে হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে তারই পরিণতি। এর মোকাবেলার দায়িত্বও আমাদের সবাইকে নিতে হবে। এটা তো অবশ্যই ঠিক যে যেসব দেশ বেশি উন্নত জীবনযাপন করে, তাদের বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ তাদের কাছে বেশি সম্পদ রয়েছে, অর্থ রয়েছে, ক্ষমতাও রয়েছে। যেমন গত বছর উপকূলীয় অঞ্চলের যে জেলে নারীর সঙ্গে কথা হয়েছিল, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে তিনি ও তার স্বামীর জীবিকা বিনষ্ট হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় অবদান রাখার ক্ষেত্রে তার চেয়ে আমার কিংবা নরডিক দেশগুলোর নাগরিকের সম্পদগত সক্ষমতা অনেক বেশি। সুতরাং দায়দায়িত্বের ন্যায্য বণ্টন হওয়া দরকার। দেশ হিসেবে ধরলে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় ব্রিটেনের দায়িত্ব নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। কারণ যুক্তরাজ্য একটি উন্নত দেশ, আর বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। একইভাবে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ইউরোপ-আমেরিকা ছাড়াও ভারত, চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল বা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর বড় ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
সমকাল : জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য দ্বিপক্ষীয়ভাবে কী কী করতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
রুশনারা আলী : কোপেনহেগেন সম্মেলনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যে অঙ্গীকার করেছেন, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য আন্তরিক। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সম্পদ ও প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ডিএফআইডিসহ ব্রিটেনের কিছু আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশে আগে থেকেই কাজ করছে। তারা এখন জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনসাধারণ কীভাবে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে, সে ধরনের বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আপনি জানেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ছয় কোটি পাউন্ড সহায়তার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সমকাল : কিন্তু ওই অর্থ ছাড় হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল ২০০৮ সালে। মাঝে তিন বছর চলে গেছে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত কিন্তু থেমে নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক এই দুর্যোগ মোকাবেলায় আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিপুল অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন হবে।
রুশনারা আলী : ওই অর্থের ব্যবস্থাপনা ও তদারকি নিয়ে বোধহয় দুই দেশের সরকারের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। আমি মনে করি, এটা বড় কোনো জটিলতা নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। এ ব্যাপারে বিলম্ব হওয়া উচিত নয়। ব্রিটেন সবসময়ই বাংলাদেশ উন্নয়ন দেখতে চায়। আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতেও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারবে। আর একটি কথা বলতে চাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মি. ডেভিড ক্যামেরন যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে বেশ সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি আগের মতো ভূমিকা রাখছেন না। এ জন্য আমরা একটি ক্যাম্পেইনের কথা ভাবছি_ কিপ দ্য প্রমিজ। লেবার পার্টি চায়, যুক্তরাজ্য সরকার জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ইউরোপীয় কমিউনিটির সঙ্গে একত্রে কাজ করুক ও নেতৃত্ব দিক। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গেও কাজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সহায়তা তহবিল কার্যকর করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ব্রিটেন উৎসাহিত করতে পারে।
আপনার প্রশ্নের জবাবে আমি আরও বলতে চাই, বাংলাদেশ ও ব্রিটেন সরকারের পাশাপাশি দুই দেশের নাগরিক সমাজ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে একত্রে কাজ করতে পারে ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমি নিজের যুক্তরাজ্যের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সরকার কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের নাগরিক সমাজও এই ইস্যুতে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে পারে। সরকার যাতে সঠিকপথে থাকে, সে জন্য পরামর্শও দিতে পারে। আমি জানি, বেসরকারি পর্যায়ে এ দেশে এমন কয়েক ব্যক্তি রয়েছেন, যারা জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন।
সমকাল :বাংলাদেশ থেকে আমরা সবসময় বলে আসছি যে, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা হওয়া উচিত অনুদান, ঋণ নয়। একটি সংবাদে দেখেছি, আপনি নিজেও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এ বিষয়টির প্রতি জোর দিয়েছেন।
রুশনারা আলী : আমি আসলে দুটি বিষয় বলার চেষ্টা করছিলাম। প্রথমত, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য কেবল বিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দ করলেই হবে না। সেটা যদি নতুন তহবিল না হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ তৈরি হয় না। এ জন্য আমি পার্লামেন্টে ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বলে থাকি যে জলবায়ু পরিবর্তন সহায়তা তহবিল হতে হবে 'নতুন অর্থ'। উন্নয়নশীল বিশ্বে উন্নত দেশগুলো শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে যে সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে থাকে, সেটা কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার কর্মসূচি দেওয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যে সহায়তা দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া হবে, তা যেন অনুদান হয়, ঋণ নয়। যেসব দেশ ইতিমধ্যে ঋণের ভারে জর্জরিত, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার নামে সেগুলোর ওপর নতুন করে ঋণ চাপিয়ে দেওয়া সমর্থন করা যায় না। গত বছর বাংলাদেশ সফর করে যাওয়ার পর আমি আমাদের সরকারকে বলেছি, বিদ্যমান সহায়তা তহবিলের বাইরে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য নতুন তহবিল গঠন করতে হবে। এ ব্যাপারে ব্রিটেনে জনমত গঠনের জন্য কাজ করছি আমি।
সমকাল : কেবল ব্রিটেনে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে আসলে জনমত গঠন করা দরকার। যাতে করে উন্নত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার ক্ষেত্রে, আপনি যেমনটি বলছেন, 'নতুন অর্থ' সংগ্রহ করে।
রুশনারা আলী : এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ দেশে ১৬ কোটি কণ্ঠস্বর রয়েছে। এটি একটি বিরাট সংখ্যা। তারা সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। তারা বলতে পারে যে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা করতে গিয়ে বিদ্যমান সহায়তা কার্যক্রমগুলো কমিয়ে আনা চলবে না। নতুন তহবিল গঠন করতে হবে। এখানকার নাগরিক সমাজ সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে পেঁৗছে দিতে পারে। আমি নিজে এমন একটি ক্যাম্পেইনের ব্যাপারে তৎপর। বাংলাদেশ থেকে কোটি কোটি কণ্ঠস্বরের সমর্থন যদি পাওয়া যায়, তাহলে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আমার সহকর্মীদের বোঝাতে সক্ষম হবো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝাতে হবে যে তাদের এখনই উদ্যোগী হতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে লাখ লাখ মানুষ এখনই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ভুগছে। এবারের সফর থেকে ফিরে গিয়ে আমি ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের সঙ্গে বসব, তারা যাতে সেখান থেকে নিজেদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারে। ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারাবিশ্বে যে বাংলাদেশি রয়েছেন, তারা উদ্যোগী হলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের বিপদের বিষয়টি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা কঠিন হবে না।
সমকাল : ব্রিটেনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের মাতৃভূমির বিপদ সম্পর্কে কতটা সচেতন?
রুশনারা আলী : তারা এখনও বিষয়টি নিয়ে এখনও সম্ভবত এতটা স্পষ্ট ধারণা পায়নি। কিন্তু তারা যেহেতু বাংলাদেশের ভালো চায়, এখানে তাদের আত্মীয়-পরিজন রয়েছে, নাগরিক প্রতিনিধিরা উদ্যোগী হলে প্রবাসীরা নিশ্চয়ই সাড়া দেবে।
সমকাল : আপনি নিজে দুই ধরনের দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রায় কোনো ভূমিকা না রাখা উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করার পর এখন আপনি ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। অর্থায়নের প্রশ্নে দুই দেশকেই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা করতে হবে বিপরীতধর্মী দুই অবস্থানে থেকে। আপনি ব্যক্তিগতভাবে এই ইস্যুতে কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারেন?
রুশনারা আলী : আপনাকে বলতে পারি, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সম্পৃক্ত হতে আমার আগ্রহ তৈরি হওয়ার পেছনে রয়েছে ব্যক্তিগত বিবেচনা। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমার পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজন সবাই বাংলাদেশের। আপনি জানেন, আমি নিজে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি এবং সাত বছর বয়সে এখান থেকে অভিবাসিত হয়েছি। এখন আমি যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে বা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একমাত্র সদস্য, যার শিকড় হচ্ছে বাংলাদেশে। এই দেশ যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিরাট হুমকির মুখে থাকে, তখন আমার সক্রিয় হওয়া ছাড়া কোনো কিছু করার থাকে না।
আমি মনে করছি, আমাকে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব দেখা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে দেখা দেবে সে সম্পর্কে যুক্তরাজ্য এবং একই সঙ্গে ইউরোপের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলকে সচেতন ও সতর্ক করে তুলতে হবে। আমি ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক, জ্যেষ্ঠ আমলা ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে আমার বক্তব্য তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি এ দেশে জন্মেছি, এখানকার মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। কিছু ফার্স্টহ্যান্ড অভিজ্ঞতা শোনার সুযোগ আমার হয়েছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যথাযথ চিত্র তুলে ধরার ক্ষেত্রে আমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারব। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কাজ করার জন্য বাংলাদেশি ও ব্রিটেনের নাগরিকদের একটি অভিন্ন প্লাটফর্ম তৈরি করার ক্ষেত্রে আমি ভালো কাজ করতে পারব।
সমকাল : ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
রুশনারা আলী : সমকালের জন্য শুভেচ্ছা।
No comments