চমেক হাসপাতাল-কর্মচারী নিয়োগে বিএমএ স্বাচিপ নেতাদের বাণিজ্য by নূপুর দেব

ট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তৃতীয় শ্রেণীর একটি পদ পেতে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা এবং চতুর্থ শ্রেণীর পদ পেতে তিন থেকে চার লাখ টাকার অবৈধ লেনদেন হচ্ছে বলে জানা গেছে।\ বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) চট্টগ্রামের কয়েকজন নেতা


চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের এ টাকা নিচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। নেতারা অবশ্য টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে প্রার্থীরা টাকার প্রস্তাব নিয়ে তাঁদের কাছে যাচ্ছেন বলে তাঁরা স্বীকার করেন। কর্মচারী নিয়োগে যে অর্থের লেনদেন হচ্ছে তা হাসপাতালের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেখেই বোঝা যায়। লাল কালিতে ছাপানো বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন স্থানে টাঙিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়েছে, 'হাসপাতালের নিয়োগের জন্য কোনো প্রকার লেনদেন করবেন না।'
নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি স্বীকার করে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বাচিপ নেতা ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কয়েক দিন আগে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা এলাকা থেকে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর পদ পেতে এক নারী পরীক্ষার্থী তাঁর ভাইকে নিয়ে আমার বাসায় আসেন। চাকরি নিশ্চিত করতে পারলে আমাকে তিন লাখ টাকা দিবেন। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বাসা থেকে বের করে দিয়েছি। তাঁদের কাছে শুনেছি, বিএমএ ও স্বাচিপের এক নেতা এ পদের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন।'
বিএমএ ও স্বাচিপ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম বলেন, 'হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে নিয়োগ পেতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন প্রার্থী ও তাঁদের স্বজনরা আমার কাছে এসেছেন। এসব প্রার্থী মোটা অংকের নগদ টাকা দিতেও প্রস্তুত। কিন্তু যাঁরাই আমার কাছে আসছেন, তাঁদের বাসা থেকে বের করে দিয়েছি।'
গত ২ ডিসেম্বর তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পদে লিখিত পরীক্ষার মধ্য দিয়ে চমেক হাসপাতালে নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ১৩৭টি পদের জন্য প্রার্থী আছেন প্রায় পাঁচ হাজার। এর মধ্যে চতুর্থ শ্রেণীর প্রায় ১২০টি পদের জন্য সাড়ে চার হাজারের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম চলবে। তৃতীয় শ্রেণীর লিখিত পরীক্ষার পর ওই দিনই বিকেলে ফলাফল দেওয়া হয়েছে। পরদিন ৩ ডিসেম্বর পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা হয়েছে। গত বুধবার থেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের মৌখিক পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক এবং নিয়োগ ও পদোন্নতি কমিটির সদস্য সচিব ডা. মোজাফফর আহমদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুরো বিষয়টি শুনে 'আমি এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব'_বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর আগে বুধবার দুপুরে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল আওয়াল বলেন, 'ডা. জি এম চৌধুরী বলতে পারবেন।'

No comments

Powered by Blogger.