আদর্শ নাগরিকের দায়িত্ব by জহির উদ্দিন বাবর
রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য চাই ব্যক্তির আন্তরিকতা ও চেতনাবোধ। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব নাগরিকের। দেশ স্বাধীন করার চেয়ে দেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার দায়িত্ব অনেক বেশি আজ আমাদের বিজয়ের দিন। চার দশক আগে এদিনে আমরা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র লাভ করেছি। স্বাধীনতা মহান প্রভুর অন্যতম বিশেষ দান। যারা পরাধীন তারাই শুধু জানেন স্বাধীনতার মূল্য কত বেশি।
স্বাধীন প্রকৃতি দিয়ে সৃষ্ট মানুষের পক্ষে পরাধীন হয়ে বেঁচে থাকা অসহনীয় ব্যাপার। যেহেতু আমরা অসহনীয় একটি অবস্থা থেকে মুক্ত হয়েছি এ জন্য স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ থাকাটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। স্বাধীন দেশের একজন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে আরও কিছু দায়িত্ব আমাদের ওপর বর্তায়। সে দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করলেই একজন নাগরিক আদর্শ নাগরিকের খেতাব পায়।
ইসলাম শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, রাষ্ট্রীয় ও নাগরিক জীবনের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কেও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। একজন আদর্শ মুসলমান মানেই আদর্শ নাগরিক। ভালো নাগরিক হতে না পারলে ভালো মুসলমানও হওয়া সম্ভব নয়। যুগে যুগে আল্লাহর প্রিয় বান্দারা আদর্শ নাগরিক হিসেবেও খ্যাত ছিলেন। যিনি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য পোষণ করেন, রাষ্ট্রের প্রতিও তার আনুগত্য থাকতে হবে। রাষ্ট্রদ্রোহী কারও পক্ষে স্রষ্টার কৃপা পাওয়া অসম্ভব। রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের মধ্য দিয়েই স্রষ্টার সন্ধান পাওয়া যায়।
আমাদের প্রিয় নবী (সা.) ছিলেন একজন আদর্শ নাগরিক। নাগরিক হিসেবে তিনি দেশ ও জাতির প্রতি যে আনুগত্য, ভালোবাসা, সহমর্মিতাবোধ দেখিয়েছেন তা চিরদিন বিশ্বাসীদের জন্য আলোকদিশার কাজ করবে। যে দেশ থেকে তিনি অন্যায়ভাবে বিতাড়িত হয়েছেন, যাদের থেকে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ পেয়েছেন সে দেশ ও মানুষের প্রতি তার ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না। তার প্রতি উৎসর্গিত সাহাবায়ে কেরামের অবস্থাও ছিল তাই। তারাও দেশ-জাতির জন্য ছিলেন পুরোপুরি নিবেদিত। নিজেকে দেশের খেদমতে নিয়োজিত করতে পারলে তারা পুলকিত হতেন। দেশের জন্য আত্মত্যাগ ও বিসর্জনের প্রকৃত শিক্ষা আমরা সাহাবায়ে কেরামের জীবন থেকেই লাভ করি।
ইসলামের চোখে একজন আদর্শ নাগরিক রাষ্ট্রের মূল্যবান সম্পদ। নাগরিকের অব্যাহত প্রচেষ্টা থাকবে দেশ ও জাতির কীভাবে উন্নতি করা যায়। নিজের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে হলেও দেশের জন্য, নিজের জাতির জন্য কিছু করার মানসিকতা থাকতে হবে। রাষ্ট্র তার নাগরিকের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি ভাববে, কিন্তু রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের ভাবনা থাকবে কীভাবে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। যে দেশের নাগরিক যত সভ্য ও সুশীল সে দেশ তত উন্নত ও অগ্রসর। নাগরিকের দায়িত্ববোধ ও আত্মত্যাগই রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। নাগরিকের দায়িত্বহীনতা ও অনগ্রসরতা যে কোনো দেশকে পিছিয়ে দেয়। চেতনার দিগন্ত সমৃদ্ধ ও বলিষ্ঠ না হলে দেশ ও জাতির জন্য কিছু তো করা যায়ই না, বরং এমন নাগরিক দেশের জন্য বোঝা।
ব্যক্তির সমষ্টির মাধ্যমেই রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য চাই ব্যক্তির আন্তরিকতা ও চেতনাবোধ। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব নাগরিকের। দেশ স্বাধীন করার চেয়ে দেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার দায়িত্ব অনেক বেশি। আর শুধু সীমানা অক্ষুণ্ন থাকলেই স্বাধীনতা টিকে থাকে না, প্রতিটি নাগরিককে বলিষ্ঠ চেতনায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হয়। নৈতিক মূল্যবোধে চিড় ধরে এমন কোনো কাজ সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এ জন্য জাগ্রত বিবেক ও বলিষ্ঠ চেতনার আধার হতে হয় একজন আদর্শ নাগরিককে।
যে কোনো জাতির পরিচয় নির্ণিত হয় তাদের আচার-আচরণে। দেশকে যারা পৃথিবীর বুকে মহীয়ান করতে চায় তাদের মধ্যে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের উপস্থিতি অপরিহার্য। আর দেশপ্রেম কথায় নয়, আচরণে ফুটিয়ে তুলতে হয়। কারও ভেতরে দেশপ্রেম থাকলে সেটা তার আচরণেই ফুটে ওঠে। এ জন্য আচরণ ও কর্মের মাধ্যমেই দেশপ্রেমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় আদর্শ নাগরিককে।
বিজয়ের চার দশকের এই সুবর্ণ মুহূর্তে আমাদের প্রত্যেককে ভাবতে হবে, আমরা সত্যিই কি আদর্শ নাগরিক হতে পেরেছি? যেহেতু আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা এখনও পাইনি তাই বলা যায় আদর্শ নাগরিকের সংখ্যা অনেক কম। আদর্শ নাগরিকের সংখ্যা যত বাড়বে দেশ তত উন্নত হবে। এ জন্য সবার প্রচেষ্টা থাকা চাই নিজে আদর্শ নাগরিক হওয়া, অন্যকে আদর্শ নাগরিক হতে সহযোগিতা করা_ এটাই ইসলামের শিক্ষা।
zahirbabor@yahoo.com
ইসলাম শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, রাষ্ট্রীয় ও নাগরিক জীবনের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কেও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। একজন আদর্শ মুসলমান মানেই আদর্শ নাগরিক। ভালো নাগরিক হতে না পারলে ভালো মুসলমানও হওয়া সম্ভব নয়। যুগে যুগে আল্লাহর প্রিয় বান্দারা আদর্শ নাগরিক হিসেবেও খ্যাত ছিলেন। যিনি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য পোষণ করেন, রাষ্ট্রের প্রতিও তার আনুগত্য থাকতে হবে। রাষ্ট্রদ্রোহী কারও পক্ষে স্রষ্টার কৃপা পাওয়া অসম্ভব। রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের মধ্য দিয়েই স্রষ্টার সন্ধান পাওয়া যায়।
আমাদের প্রিয় নবী (সা.) ছিলেন একজন আদর্শ নাগরিক। নাগরিক হিসেবে তিনি দেশ ও জাতির প্রতি যে আনুগত্য, ভালোবাসা, সহমর্মিতাবোধ দেখিয়েছেন তা চিরদিন বিশ্বাসীদের জন্য আলোকদিশার কাজ করবে। যে দেশ থেকে তিনি অন্যায়ভাবে বিতাড়িত হয়েছেন, যাদের থেকে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ পেয়েছেন সে দেশ ও মানুষের প্রতি তার ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না। তার প্রতি উৎসর্গিত সাহাবায়ে কেরামের অবস্থাও ছিল তাই। তারাও দেশ-জাতির জন্য ছিলেন পুরোপুরি নিবেদিত। নিজেকে দেশের খেদমতে নিয়োজিত করতে পারলে তারা পুলকিত হতেন। দেশের জন্য আত্মত্যাগ ও বিসর্জনের প্রকৃত শিক্ষা আমরা সাহাবায়ে কেরামের জীবন থেকেই লাভ করি।
ইসলামের চোখে একজন আদর্শ নাগরিক রাষ্ট্রের মূল্যবান সম্পদ। নাগরিকের অব্যাহত প্রচেষ্টা থাকবে দেশ ও জাতির কীভাবে উন্নতি করা যায়। নিজের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে হলেও দেশের জন্য, নিজের জাতির জন্য কিছু করার মানসিকতা থাকতে হবে। রাষ্ট্র তার নাগরিকের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি ভাববে, কিন্তু রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের ভাবনা থাকবে কীভাবে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। যে দেশের নাগরিক যত সভ্য ও সুশীল সে দেশ তত উন্নত ও অগ্রসর। নাগরিকের দায়িত্ববোধ ও আত্মত্যাগই রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। নাগরিকের দায়িত্বহীনতা ও অনগ্রসরতা যে কোনো দেশকে পিছিয়ে দেয়। চেতনার দিগন্ত সমৃদ্ধ ও বলিষ্ঠ না হলে দেশ ও জাতির জন্য কিছু তো করা যায়ই না, বরং এমন নাগরিক দেশের জন্য বোঝা।
ব্যক্তির সমষ্টির মাধ্যমেই রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য চাই ব্যক্তির আন্তরিকতা ও চেতনাবোধ। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব নাগরিকের। দেশ স্বাধীন করার চেয়ে দেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার দায়িত্ব অনেক বেশি। আর শুধু সীমানা অক্ষুণ্ন থাকলেই স্বাধীনতা টিকে থাকে না, প্রতিটি নাগরিককে বলিষ্ঠ চেতনায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হয়। নৈতিক মূল্যবোধে চিড় ধরে এমন কোনো কাজ সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এ জন্য জাগ্রত বিবেক ও বলিষ্ঠ চেতনার আধার হতে হয় একজন আদর্শ নাগরিককে।
যে কোনো জাতির পরিচয় নির্ণিত হয় তাদের আচার-আচরণে। দেশকে যারা পৃথিবীর বুকে মহীয়ান করতে চায় তাদের মধ্যে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের উপস্থিতি অপরিহার্য। আর দেশপ্রেম কথায় নয়, আচরণে ফুটিয়ে তুলতে হয়। কারও ভেতরে দেশপ্রেম থাকলে সেটা তার আচরণেই ফুটে ওঠে। এ জন্য আচরণ ও কর্মের মাধ্যমেই দেশপ্রেমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় আদর্শ নাগরিককে।
বিজয়ের চার দশকের এই সুবর্ণ মুহূর্তে আমাদের প্রত্যেককে ভাবতে হবে, আমরা সত্যিই কি আদর্শ নাগরিক হতে পেরেছি? যেহেতু আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা এখনও পাইনি তাই বলা যায় আদর্শ নাগরিকের সংখ্যা অনেক কম। আদর্শ নাগরিকের সংখ্যা যত বাড়বে দেশ তত উন্নত হবে। এ জন্য সবার প্রচেষ্টা থাকা চাই নিজে আদর্শ নাগরিক হওয়া, অন্যকে আদর্শ নাগরিক হতে সহযোগিতা করা_ এটাই ইসলামের শিক্ষা।
zahirbabor@yahoo.com
No comments