ঢিমেতালে চলছে এডিপির কাজ-পাঁচ মাসে খরচ বরাদ্দের মাত্র ২০ শতাংশ খরচ
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ার পরও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে গতি আনতে পারছে না সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে ২০ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে ২০ শতাংশ ও এর আগের বছরের একই সময়ে ২৩ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল। উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ ব্যয়ের হার ১৩ শতাংশ, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) গতকাল বৃহস্পতিবার পাঁচ মাসের এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, অর্থবছরের পাঁচ মাসে এডিপি বরাদ্দের মোট ৯ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে ছয় হাজার ৯১৯ কোটি টাকা ব্যয় হলেও প্রকল্প সহায়তা বাবদ বৈদেশিক ঋণের মাত্র দুই হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ সরকারি কোষাগার থেকে ২৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় হলেও বৈদেশিক ঋণ থেকে খরচ হয়েছে মাত্র ১৩ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে ১৫ শতাংশ ও এর আগের বছর ২৩ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ খরচ হয়েছিল। ২০০৮-০৯ অর্থবছরের একই সময়ে ১৫ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ খরচ হয়েছিল।
বৈদেশিক ঋণের অর্থ খরচ কম হওয়ার কারণেই এডিপি বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত গতি আসছে না বলে মনে করছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। অর্থবছরের শুরু থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিভিন্ন বৈঠকে বৈদেশিক ঋণের অর্থ ব্যবহার বাড়াতে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে তাগিদ দিলেও তা কাজে আসছে না। পরিকল্পনা কমিশনও বৈদেশিক ঋণের খরচ বাড়াতে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে তাগিদ দিয়ে আসছে। এ ছাড়া গত মাসে আলাদাভাবে বরাদ্দপ্রাপ্ত শীর্ষ দশ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) নিয়ে বৈঠকে বসেছিল কমিশন। বৈঠকে বৈদেশিক ঋণের অর্থ ব্যবহার বাড়াতে জোর তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
বৈদেশিক ঋণ খরচ না হওয়া প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খান বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বৈদেশিক অর্থ খরচ করতে পারে না। তাই ঋণদাতাগোষ্ঠী প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় করতে চায় না। মন্ত্রণালয়গুলো বৈদেশিক ঋণ খরচ করতে পারলেই অর্থ ছাড় হবে। তিনি বলেন, প্রকল্পের ডিজাইনে ত্রুটি থাকায় ঋণদাতা সংস্থাগুলোর পরামর্শে পুনরায় ডিজাইন পরিবর্তন করতে হয়। তাদের দিকনির্দেশনা প্রায়ই অনুসরণ করা হয় না। প্রকল্প পরিচালকদের অনেকেরই দক্ষতার অভাব রয়েছে। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণের অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হয়। এসব কারণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক ঋণের টাকা খরচ করতে পারে না।
এডিপিতে বৈদেশিক ঋণের টাকা খরচ না হওয়ার পেছনে আরো কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে আইএমইডি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে_ঋণদাতা সংস্থার ক্রয় নির্দেশিকা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বিভ্রান্তি, উন্নয়ন সহযোগীদের পছন্দের পরামর্শক পরিবর্তন, সরকারি অর্থ ও বিভিন্ন সহায়তা সঠিক সময়ে না পাওয়া এবং প্রকল্প পরিচালকদের ইংরেজিতে যোগাযোগ দক্ষতার ঘাটতি।
বরাদ্দপ্রাপ্ত শীর্ষ দশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সেতু বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়নের হার খারাপ অবস্থায় রয়েছে। দুই হাজার ২৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে সেতু বিভাগ অর্থবছরের পাঁচ মাসে অর্থ খরচ করেছে মাত্র ৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে সেতু বিভাগ ৭২ কোটি টাকা ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এক হাজার তিন কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ১১৯ কোটি বা ১২ শতাংশ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই হাজার ১২৪ কোটি টাকার বিপরীতে ৩৩১ কোটি টাকা বা ১৬ শতাংশ অর্থ খরচ করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে বরাদ্দপ্রাপ্ত শীর্ষ দশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বেশি অর্থ খরচ করতে পেরেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অর্থবছরের পাঁচ মাসে বিদ্যুৎ বিভাগ সাত হাজার ১৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে দুই হাজার ৫০১ কোটি টাকা (৩৫ শতাংশ) ব্যয় করেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ৯ হাজার ২০১ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে দুই হাজার ৭৭০ (৩০ শতাংশ) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই হাজার ৪১৮ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ৬২৫ কোটি টাকা (২৬ শতাংশ) খরচ করেছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২ শতাংশ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১ শতাংশ, শিল্প মন্ত্রণালয় ১ শতাংশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। তবে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এডিপিতে বরাদ্দ করা এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, গতানুগতিক ধারায় এডিপি বাস্তবায়নের হার চলছে। তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বৃদ্ধি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং আন্তমন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব দূর করার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া নিয়মিত প্রকল্প তদারকি করতে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। বৈদেশিক ঋণ খরচ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈদেশিক ঋণ খরচে আরো যত্নবান হতে হবে। কারণ উন্নয়ন সহযোগীরা অনেক সচেতন। তারা নিয়ম মেনে চলে। তাই বৈদেশিক ঋণে বাস্তবায়িত প্রকল্পে নিয়মিত মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেন তিনি।
বৈদেশিক ঋণের অর্থ খরচ কম হওয়ার কারণেই এডিপি বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত গতি আসছে না বলে মনে করছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। অর্থবছরের শুরু থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিভিন্ন বৈঠকে বৈদেশিক ঋণের অর্থ ব্যবহার বাড়াতে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে তাগিদ দিলেও তা কাজে আসছে না। পরিকল্পনা কমিশনও বৈদেশিক ঋণের খরচ বাড়াতে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে তাগিদ দিয়ে আসছে। এ ছাড়া গত মাসে আলাদাভাবে বরাদ্দপ্রাপ্ত শীর্ষ দশ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) নিয়ে বৈঠকে বসেছিল কমিশন। বৈঠকে বৈদেশিক ঋণের অর্থ ব্যবহার বাড়াতে জোর তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
বৈদেশিক ঋণ খরচ না হওয়া প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খান বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বৈদেশিক অর্থ খরচ করতে পারে না। তাই ঋণদাতাগোষ্ঠী প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় করতে চায় না। মন্ত্রণালয়গুলো বৈদেশিক ঋণ খরচ করতে পারলেই অর্থ ছাড় হবে। তিনি বলেন, প্রকল্পের ডিজাইনে ত্রুটি থাকায় ঋণদাতা সংস্থাগুলোর পরামর্শে পুনরায় ডিজাইন পরিবর্তন করতে হয়। তাদের দিকনির্দেশনা প্রায়ই অনুসরণ করা হয় না। প্রকল্প পরিচালকদের অনেকেরই দক্ষতার অভাব রয়েছে। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণের অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হয়। এসব কারণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক ঋণের টাকা খরচ করতে পারে না।
এডিপিতে বৈদেশিক ঋণের টাকা খরচ না হওয়ার পেছনে আরো কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে আইএমইডি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে_ঋণদাতা সংস্থার ক্রয় নির্দেশিকা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বিভ্রান্তি, উন্নয়ন সহযোগীদের পছন্দের পরামর্শক পরিবর্তন, সরকারি অর্থ ও বিভিন্ন সহায়তা সঠিক সময়ে না পাওয়া এবং প্রকল্প পরিচালকদের ইংরেজিতে যোগাযোগ দক্ষতার ঘাটতি।
বরাদ্দপ্রাপ্ত শীর্ষ দশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সেতু বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়নের হার খারাপ অবস্থায় রয়েছে। দুই হাজার ২৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে সেতু বিভাগ অর্থবছরের পাঁচ মাসে অর্থ খরচ করেছে মাত্র ৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে সেতু বিভাগ ৭২ কোটি টাকা ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এক হাজার তিন কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ১১৯ কোটি বা ১২ শতাংশ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই হাজার ১২৪ কোটি টাকার বিপরীতে ৩৩১ কোটি টাকা বা ১৬ শতাংশ অর্থ খরচ করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে বরাদ্দপ্রাপ্ত শীর্ষ দশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বেশি অর্থ খরচ করতে পেরেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অর্থবছরের পাঁচ মাসে বিদ্যুৎ বিভাগ সাত হাজার ১৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে দুই হাজার ৫০১ কোটি টাকা (৩৫ শতাংশ) ব্যয় করেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ৯ হাজার ২০১ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে দুই হাজার ৭৭০ (৩০ শতাংশ) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই হাজার ৪১৮ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ৬২৫ কোটি টাকা (২৬ শতাংশ) খরচ করেছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২ শতাংশ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১ শতাংশ, শিল্প মন্ত্রণালয় ১ শতাংশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। তবে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এডিপিতে বরাদ্দ করা এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, গতানুগতিক ধারায় এডিপি বাস্তবায়নের হার চলছে। তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বৃদ্ধি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং আন্তমন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব দূর করার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া নিয়মিত প্রকল্প তদারকি করতে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। বৈদেশিক ঋণ খরচ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈদেশিক ঋণ খরচে আরো যত্নবান হতে হবে। কারণ উন্নয়ন সহযোগীরা অনেক সচেতন। তারা নিয়ম মেনে চলে। তাই বৈদেশিক ঋণে বাস্তবায়িত প্রকল্পে নিয়মিত মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেন তিনি।
No comments