উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে ঢিলেমি : ৫ মাসে বাস্তবায়ন ২০ শতাংশ by জাহিদুল ইসলাম
বছরের শুরুর দিকে কাজ ঝুলিয়ে রেখে শেষের দিকে এসে অতি দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের তাড়াহুড়ায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়ের ধারা থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না সরকার। অর্থবছরের ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ২০ ভাগ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। চলতি বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এডিপি বরাদ্দ ৪৬ হাজার থেকে মাত্র ৯ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ব্যয়
হয়েছে। সরকারের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইএমইডি জানায়, গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল এ বছরের সমান অর্থাত্ শতকরা ২০ ভাগ। আর ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাস্তবায়ন হয়েছিল শতকরা ২৩ ভাগ। আর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ছিল শতকরা ১৮ ভাগ। আইএমইডির হিসাবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে এডিপি বাস্তবায়নের হার স্থবির হয়ে আছে। দফায় দফায় মিটিং, টাস্কফোর্স, পরিকল্পনা কমিশনের বিভিন্ন নির্দেশনা ও ‘আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে’ পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুরোধ কাজে আসেনি।
এ সময় উন্নয়ন খাতে বৈদেশিক সহায়তা নজিরবিহীনভাবে কমে গেছে। প্রতিশ্রুত সহায়তার মাত্র ১৩ শতাংশ অর্থ ছাড় হয়েছে নভেম্বর পর্যন্ত। গত বছরের একই সময়ে বৈদেশিক সহায়তা এসেছিল ১৫ শতাংশ। আর ২০০৯ সালের ৫ মাসে ছাড় হয়েছিল প্রতিশ্রুতির ২৩ ভাগ। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত্ এবং কর্মকর্তাদের যোগ্যতা, দক্ষতা ও আন্তরিকতার অভাবে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না বলে আইএমইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। একই কারণে বৈদেশিক সহায়তাও তলানিতে নেমে এসেছে বলে তারা জানান। এ অবস্থায় শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন করতে আগামী মাসেই এডিপি সংশোধন করা হবে বলে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে পরিসংখ্যান বিভাগ। ৭টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১১ কোটি টাকা, পাঁচ মাসে ব্যয় করেছে ১৩ কোটি ২৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ১২১ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অনুকূলে ১৭টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১০৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা, এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৯ কোটি ২৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৬টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১৬০ কোটি টাকা, ব্যয় হয়েছে ৬৭ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে এক টাকাও ব্যয় করতে না পারা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়। এক শতাংশ বাস্তবায়নকারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৩টি প্রকল্পের বিপরীতে থোকসহ বরাদ্দ ছিল ২৯৮ কোটি টাকা, এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ২২টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৫০২ কোটি ১২ লাখ টাকা, ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ২৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ ৮ হাজার টাকা।
এডিপি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে দফায় দফায় বৈঠক করছে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল। আর এসব পদক্ষেপ সফল না হওয়ায় আগেভাগেই এডিপি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জানুয়ারিতেই এডিপি বরাদ্দে বড় ধরনের কাটাছেঁড়া হবে বলে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই সরকার একটি বিশাল এডিপি গ্রহণ করে। কিন্তু এ এডিপি কখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মতো হয়ে গেছে। অর্থবছরের শেষের দিকে তাড়াহুড়া করে এ বাস্তবায়নের হারকে ৯০ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে যায়। শেষের দিকে এ তাড়াহুড়া করার কারণে প্রকল্পগুলোতে একদিকে যেমন দুর্নীতি ঘটে তেমনি প্রকল্পগুলোর গুণগতমানও রক্ষা হয় না।
প্রসঙ্গত গত অর্থবছরে প্রথম সাত মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাত্র ২৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। কিন্তু শেষ দু’মাসে ৩৭ শতাংশ টাকা ব্যয় করে বছরশেষে সার্বিক এডিপি বাস্তবায়ন দেখানো হয় ৯২ শতাংশ। বছরের শেষদিকে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপচয়ের অভিযোগ ওঠেছিল।
আইএমইডি জানায়, গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল এ বছরের সমান অর্থাত্ শতকরা ২০ ভাগ। আর ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাস্তবায়ন হয়েছিল শতকরা ২৩ ভাগ। আর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ছিল শতকরা ১৮ ভাগ। আইএমইডির হিসাবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে এডিপি বাস্তবায়নের হার স্থবির হয়ে আছে। দফায় দফায় মিটিং, টাস্কফোর্স, পরিকল্পনা কমিশনের বিভিন্ন নির্দেশনা ও ‘আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে’ পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুরোধ কাজে আসেনি।
এ সময় উন্নয়ন খাতে বৈদেশিক সহায়তা নজিরবিহীনভাবে কমে গেছে। প্রতিশ্রুত সহায়তার মাত্র ১৩ শতাংশ অর্থ ছাড় হয়েছে নভেম্বর পর্যন্ত। গত বছরের একই সময়ে বৈদেশিক সহায়তা এসেছিল ১৫ শতাংশ। আর ২০০৯ সালের ৫ মাসে ছাড় হয়েছিল প্রতিশ্রুতির ২৩ ভাগ। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত্ এবং কর্মকর্তাদের যোগ্যতা, দক্ষতা ও আন্তরিকতার অভাবে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না বলে আইএমইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। একই কারণে বৈদেশিক সহায়তাও তলানিতে নেমে এসেছে বলে তারা জানান। এ অবস্থায় শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন করতে আগামী মাসেই এডিপি সংশোধন করা হবে বলে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে পরিসংখ্যান বিভাগ। ৭টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১১ কোটি টাকা, পাঁচ মাসে ব্যয় করেছে ১৩ কোটি ২৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ১২১ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অনুকূলে ১৭টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১০৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা, এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৯ কোটি ২৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৬টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১৬০ কোটি টাকা, ব্যয় হয়েছে ৬৭ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে এক টাকাও ব্যয় করতে না পারা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়। এক শতাংশ বাস্তবায়নকারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৩টি প্রকল্পের বিপরীতে থোকসহ বরাদ্দ ছিল ২৯৮ কোটি টাকা, এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ২২টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৫০২ কোটি ১২ লাখ টাকা, ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ২৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ ৮ হাজার টাকা।
এডিপি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে দফায় দফায় বৈঠক করছে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল। আর এসব পদক্ষেপ সফল না হওয়ায় আগেভাগেই এডিপি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জানুয়ারিতেই এডিপি বরাদ্দে বড় ধরনের কাটাছেঁড়া হবে বলে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই সরকার একটি বিশাল এডিপি গ্রহণ করে। কিন্তু এ এডিপি কখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মতো হয়ে গেছে। অর্থবছরের শেষের দিকে তাড়াহুড়া করে এ বাস্তবায়নের হারকে ৯০ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে যায়। শেষের দিকে এ তাড়াহুড়া করার কারণে প্রকল্পগুলোতে একদিকে যেমন দুর্নীতি ঘটে তেমনি প্রকল্পগুলোর গুণগতমানও রক্ষা হয় না।
প্রসঙ্গত গত অর্থবছরে প্রথম সাত মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাত্র ২৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। কিন্তু শেষ দু’মাসে ৩৭ শতাংশ টাকা ব্যয় করে বছরশেষে সার্বিক এডিপি বাস্তবায়ন দেখানো হয় ৯২ শতাংশ। বছরের শেষদিকে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপচয়ের অভিযোগ ওঠেছিল।
No comments