টোল আদায় নিয়ে বচসা-বুড়িগঙ্গা সেতু অবরোধ টোলঘরে আগুন

টোল আদায়কে কেন্দ্র করে হাতাহাতির জের ধরে বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর (চীন মৈত্রী) দুটি টোলঘর পুড়িয়ে দিয়েছে কেরানীগঞ্জের বাসিন্দারা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শত শত বিক্ষুব্ধ লোকজন লাঠিসোটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে টোল আদায়কারীদের ওপর হামলা চালালে ১০ জন আহত হন। এ সময় সেতুটির দুই পাড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। পরে র‌্যাব ও পুলিশের


হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সেতু পারাপারের টোল ইজারাদার সালেহ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার রাতে ঢাকা-৩ আসনের সাংসদ নসরুল হামিদের পরিচয়ে একটি গাড়ি কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাওয়ার
সময় টোল আদায়কারীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরেই গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কেরানীগঞ্জ থেকে আসা কয়েকশ' লোক লাঠিসোটা ও হকিস্টিক নিয়ে সেতুর ওপর অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এর পর সেতুর দুই প্রান্তে থাকা টোলঘরে হামলা চালিয়ে টাকা লুট ও কর্মচারীদের ব্যাপক মারধর করা হয়।
এক নম্বর টোলঘরের ক্যাশিয়ার মোঃ জয় খান জানান, বুধবার রাতে ঢাকা-৩ আসনের সংসদ সদস্যের নাম বলে এক ব্যক্তি টোল না দিয়েই চলে যেতে থাকে। এ সময় তাকে বাধা দিতে গেলে তিনি মোবাইল ফোনে অপরিচিত এক ব্যক্তিকে ধরিয়ে দেন। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি এক কর্মচারীকে গালাগাল করে লাইন কেটে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ১০-১২ পুলিশ এসে টোলঘরের ১০ লাইনম্যানকে আটক করে। পুলিশ লাইনম্যান মোঃ নয়ন ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে শ্যামপুর থানায় দিয়ে বাকিদের ছেড়ে দেয়। এই ঘটনার জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জের শত শত লোক সেখানে হামলা চালায়।
তবে এ ব্যাপারে ঢাকা-৩ আসনের সাংসদ নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার কোনো বন্ধু ওই রাতে সেতু দিয়ে গিয়েছে কি-না তা তিনি জানেন না। এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
হাসনাবাদ এলাকার সিএনজি অটোরিকশা চালক মোঃ আলম হোসেন জানান, বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুতে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই টোল কর্তৃপক্ষের হাতে নাজেহাল হতে হয়। এ ছাড়া শ্যামপুর এলাকার একটি গ্রুপ প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে ১০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে। এ ছাড়া স্টিকার লাগানোর জন্য প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে বছরে ২ হাজার ২০০ টাকা অবৈধভাবে আদায় করছে। সব সময় টোলের লোকজন ড্রাইভারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। সেতু দিয়ে যে কোনো মাল আনা-নেওয়ার সময় ইচ্ছামতো টোল আদায় করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, সকালে শত শত লোক সেতুর ওপড় জড়ো হয়। উত্তেজিত লোকজন হঠাৎ টোলঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

No comments

Powered by Blogger.