যারা দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায় তারা বিশ্বাসঘাতক : হান্নান শাহ
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্র্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেছেন, যারা দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায় তারা বিশ্বাসঘাতক। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের কথা শুনলে মনে হয়, ভারতীয় নেতাদের চেয়েও তারা বেশি ভারতপ্রেমী। আওয়ামী লীগ সরকারকে একটি ভাওতাবাজির সরকার হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এদেশে মুক্তিযুদ্ধ একবারই সংঘটিত হয়েছিল। অথচ আওয়ামী লীগ যখনই
ক্ষমতায় আসে তখনই নতুন নতুন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি করে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এধরনের ভাওতাবাজি না করতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে গতকাল স্থানীয় কলেজ গেটে টঙ্গী থানা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি আলহাজ হাসান উদ্দিন সরকার। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক এমএ মান্নান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল টঙ্গী থানা শাখার সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মীর মোছাদ্দেক হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, আলহাজ সালাহউদ্দিন সরকার, এসএম শাহানশাহ আলম, আলহাজ সোহরাব উদ্দিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন, ডা. মাজহারুল আলম, আলহাজ মাহাবুবুল আলম শুক্কুর, বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ মোল্লা, বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নাজির আহমেদ, মো. সরাফত হোসেন, প্রভাষক বসির উদ্দিন আহমেদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর, শেখ মো. আলেক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আলহাজ হাসান উদ্দিন সরকারসহ ২৫ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়। আলোচনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জনগণ রাস্তায় নামলে আ.লীগ নেতাদের ভারতে আশ্রয় নিতে হবে : এদিকে গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে হান্নান শাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই বড় বড় কথা বলে, কিন্তু কোনো কাজ করে না। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যেদিন শেখ মুজিবুর রহমান মারা যান, সেদিন ইঁদুর খুঁজে পাওয়া গেলেও আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আওয়ামী লীগকে সতর্ক করে তিনি বলেন, যদি অন্যায়, অত্যাচার ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে জনগণ রাস্তায় নেমে আসে, তাহলে আপনারা পালানোর সুযোগ পাবেন না। বাঁচতে হলে বন্ধুদেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে। সাহস থাকলে ঢাকা ভাগের পক্ষে-বিপক্ষে গণভোট দিন। আপনাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ ২৫ হাজার ৩৮২ জনের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করতে যাচ্ছে সরকার। এরা জনপ্রিয় নেতা। আগামীতে এরা প্রত্যেকেই নির্বাচিত হবে—এ ভয়েই সরকার অস্থির। কিন্তু এর ফল ভালো হবে না।
তরিকুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ ২৬ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আয়োজিত এ মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাজিমউদ্দিন আলম, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রমুখ।
No comments