ডলারের বিপরীতে টাকা নিম্নগামী
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলার দুর্বল হয়ে পড়লেও গত এক বছরে টাকার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিপরীত প্রবণতা। গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে প্রায় ১০ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গতকাল ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম ছিল ৮০ টাকা ৬২ পয়সা; যেখানে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর ডলারের দাম ছিল ৭০ টাকা ৬৪ পয়সা। দাম বেশি হলেও চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যায় না ডলার, ফলে আমদানিকারকরা
পড়ছেন বিপাকে। সূত্র জানায়, কার্ব মার্কেটে অতিরিক্ত টাকা দিয়েও চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাওয়া যাচ্ছে না আর ব্যাংকিং চ্যানেলেও ডলারের সঙ্কট চলছে অনেক দিন ধরে; ফলে বছরজুড়েই ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। এর মধ্যে গত দেড় মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের ধারা বেশি নিম্নমুখী। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ৮০ টাকা ৬২ পয়সা। গত ২৯ অক্টোবর ডলারের দাম ছিল ৭৬ টাকা ১৬ পয়সা। ১৫ অক্টোবর ছিল ৭৫ টাকা। হিসাব করে দেখা গেছে, মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ৭ দশমিক ২০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলোতে চাহিদার তুলনায় ডলারের জোগান কম থাকায় দিন দিন ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার আয় হ্রাস ও প্রত্যাশা অনুযায়ী বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় করাতে না পারায় রিজার্ভের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যও পড়েছে চাপের মুখে, ফলে ডলার সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে তেল আমদানি করতে হচ্ছে। এই আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যাংকগুলোকে বড় অঙ্কের ডলারের জোগান দিতে হচ্ছে, ফলে
ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এ সম্পর্কে বলেন, অর্থনীতি এখন এক ধরনের সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। পাইপলাইনে থাকা সত্ত্বেও নিজেদের দুর্বলতার কারণে সরকার বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় করাতে পারছে না। রেমিট্যান্স আয়েও তেমন কোনো সুখবর নেই। বিশ্ব মন্দার প্রভাবে রফতানির প্রবৃদ্ধিও কমে আসছে। ফলে দেশের লেনদেনের ভারসাম্যে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, এ চাপ প্রশমনে জ্বালানি তেলের ওপর ভর্তুকি কমাতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ায় দেশের অর্থনীতির ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে—আমদানি ব্যয় বেড়ে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের ঝুঁকি। ডলার সঙ্কটের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেমিট্যান্স আয়ের গতি কমে আসার পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে আসায় রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়ে ডলারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া রফতানি প্রবৃদ্ধি ভালো হলেও আমদানির তুলনায় রফতানির পরিমাণ কম হওয়ায় ডলারের দাম তরতর করে বেড়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ডলারের দাম যেভাবে তরতর করে বেড়ে যাচ্ছে তা অর্থনীতির জন্য আশঙ্কাজনক। এমনিতেই মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ডাবল ডিজিটে। ডলারের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ আরও বাড়বে। তবে স্থির বিনিময় হারের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, বিনিময় হার স্থির করে দেয়া কোনো সমাধান নয়। সাময়িকভাবে হয়তো এতে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কিন্তু এর মাধ্যমে আমদানির পরিমাণ অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে—যা অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে ২২ মাস পর রিজার্ভ প্রথম ১০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে ৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এরপর আবার ১০ বিলিয়ন ডলারে উঠলেও এখন আবার আশঙ্কাজনক হারে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত ১৫ নভেম্বর রিজার্ভ ৯ দশমিক ৬২৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়, যা গত ২৯ নভেম্বরে কমে ৯ দশমিক ২৩৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এদিকে রিজার্ভ কম থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বাড়লেও যথেষ্ট পরিমাণে ডলারের জোগান দিতে পারছে না, ফলে দাম বাড়ছে ডলারের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে না পারলে এবং একই সঙ্গে আমদানি ব্যয় কমাতে না পারলে ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ঠেকানো বেশ কঠিন হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলোতে চাহিদার তুলনায় ডলারের জোগান কম থাকায় দিন দিন ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার আয় হ্রাস ও প্রত্যাশা অনুযায়ী বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় করাতে না পারায় রিজার্ভের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যও পড়েছে চাপের মুখে, ফলে ডলার সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে তেল আমদানি করতে হচ্ছে। এই আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যাংকগুলোকে বড় অঙ্কের ডলারের জোগান দিতে হচ্ছে, ফলে
ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এ সম্পর্কে বলেন, অর্থনীতি এখন এক ধরনের সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। পাইপলাইনে থাকা সত্ত্বেও নিজেদের দুর্বলতার কারণে সরকার বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় করাতে পারছে না। রেমিট্যান্স আয়েও তেমন কোনো সুখবর নেই। বিশ্ব মন্দার প্রভাবে রফতানির প্রবৃদ্ধিও কমে আসছে। ফলে দেশের লেনদেনের ভারসাম্যে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, এ চাপ প্রশমনে জ্বালানি তেলের ওপর ভর্তুকি কমাতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ায় দেশের অর্থনীতির ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে—আমদানি ব্যয় বেড়ে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের ঝুঁকি। ডলার সঙ্কটের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেমিট্যান্স আয়ের গতি কমে আসার পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে আসায় রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়ে ডলারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া রফতানি প্রবৃদ্ধি ভালো হলেও আমদানির তুলনায় রফতানির পরিমাণ কম হওয়ায় ডলারের দাম তরতর করে বেড়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ডলারের দাম যেভাবে তরতর করে বেড়ে যাচ্ছে তা অর্থনীতির জন্য আশঙ্কাজনক। এমনিতেই মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ডাবল ডিজিটে। ডলারের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ আরও বাড়বে। তবে স্থির বিনিময় হারের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, বিনিময় হার স্থির করে দেয়া কোনো সমাধান নয়। সাময়িকভাবে হয়তো এতে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কিন্তু এর মাধ্যমে আমদানির পরিমাণ অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে—যা অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে ২২ মাস পর রিজার্ভ প্রথম ১০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে ৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এরপর আবার ১০ বিলিয়ন ডলারে উঠলেও এখন আবার আশঙ্কাজনক হারে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত ১৫ নভেম্বর রিজার্ভ ৯ দশমিক ৬২৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়, যা গত ২৯ নভেম্বরে কমে ৯ দশমিক ২৩৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এদিকে রিজার্ভ কম থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বাড়লেও যথেষ্ট পরিমাণে ডলারের জোগান দিতে পারছে না, ফলে দাম বাড়ছে ডলারের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে না পারলে এবং একই সঙ্গে আমদানি ব্যয় কমাতে না পারলে ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ঠেকানো বেশ কঠিন হবে।
No comments