যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধা পেতে নতুন তৎপরতা by আবু হেনা মুহিব
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দেশের তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পেতে নতুন তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ। সরকারি-বেসরকারি উভয় পর্যায়েই এ প্রচেষ্টা চলছে। জেনেভায় বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডবি্লউটিও) এবারের মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এ বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা আদায়ে
সোচ্চার থাকবে। সম্মেলনে অংশ নেওয়া মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। তবে বরাবরের মতো এবারও এসব তৎপরতার সাফল্য নিয়ে আশাবাদী নন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডবি্লউটিও) নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী একমাত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে জানিয়ে তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের তৎপরতা ছাড়া এ বিষয়ে অগ্রগতির তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন রয়েছেন প্রতিনিধি দলে। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি সমকালকে তাদের প্রস্তুতির কথা জানান। তবে প্রতি বছরের মতো এবারও এ নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই বলে জানান তিনি। ডবি্লউটিওর শর্ত থাকা সত্ত্বেও কেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ন্যায্য এ সুবিধা দিচ্ছে না_ এ প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশ এ খাতের বিশ্ববাজারকে ডমিনেট করছে। শুল্কমুক্ত সুবিধা ছাড়াই বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের বড় অংশ দখল করে আছে। এর মধ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলে আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার দেশের রফতানি কমে যাবে_ এ কারণেই তারা বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা দিতে রাজি নয়। এ ছাড়া কিছু কিছু দেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আপত্তি এবং এন্টি বাংলাদেশ লবিং এ বিষয়ে বাধা হিসেবে কাজ করছে। ডবি্লউটিও সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নতুন করে আলোচনার প্রস্তুতি নিয়ে জেনেভা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে বিজিএমইএ সভাপতির এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সমকালকে গতকাল তিনি জানান, রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথা থাকার কথা নয়। বিষয়টি আসলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের তৎপরতা ছাড়া এ বিষয়ে অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই। তবে বেসরকারি পর্যায়ে এর আগের লবিস্টকে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে 'বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রাম' নামে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত নিয়ে কাজ করছে পোশাক কারখানাগুলো। কাজের পরিবেশ, স্থান, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা, নিয়মমতো মজুরি ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত অনুযায়ী কাজ চলছে। হাতেম বলেন, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট শাখাকে বোঝানো চেষ্টা এবং দাবি করা হচ্ছে_ যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে শর্ত অনুযায়ী শিল্প মালিকরা কাজ করছেন সুতরাং শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাওয়ার দাবি এখন জোরালো। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, ডবি্লটিওর দোহা রাউন্ড শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি আগাম ফসল হিসেবে দেখতে চায় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার বিষয়েও বাংলাদেশ তৎপরতা চালাবে। তবে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ( ডবি্লটিও) নিয়ম অনুযায়ী স্বল্পোন্নত অন্যান্য দেশ (এলডিসি) যুক্তরাষ্ট্রের রফতানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পেলেও বাংলাদেশ এ সুবিধা পাচ্ছে না।
অন্যান্য উন্নত দেশের মতো নিয়মিত শুল্ক দিয়েই বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রফতানি হচ্ছে। একক দেশ হিসেবে দেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ২৬ শতাংশ পোশাক রফতানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং নিট পোশাক রফতানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) গড় রফতানি প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৫ শতাংশের বেশি। ডলারের হিসাবে রফতানি আয় কমেছে ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তৈরি পোশাকের ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশের মধ্যে নিটের অবদানই বেশি। চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে নিট থেকে মোট রফতানি ৪২ শতাংশ। ওভেনে ৩৬ শতাংশ।
বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন রয়েছেন প্রতিনিধি দলে। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি সমকালকে তাদের প্রস্তুতির কথা জানান। তবে প্রতি বছরের মতো এবারও এ নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই বলে জানান তিনি। ডবি্লউটিওর শর্ত থাকা সত্ত্বেও কেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ন্যায্য এ সুবিধা দিচ্ছে না_ এ প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশ এ খাতের বিশ্ববাজারকে ডমিনেট করছে। শুল্কমুক্ত সুবিধা ছাড়াই বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের বড় অংশ দখল করে আছে। এর মধ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলে আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার দেশের রফতানি কমে যাবে_ এ কারণেই তারা বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা দিতে রাজি নয়। এ ছাড়া কিছু কিছু দেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আপত্তি এবং এন্টি বাংলাদেশ লবিং এ বিষয়ে বাধা হিসেবে কাজ করছে। ডবি্লউটিও সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নতুন করে আলোচনার প্রস্তুতি নিয়ে জেনেভা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে বিজিএমইএ সভাপতির এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সমকালকে গতকাল তিনি জানান, রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথা থাকার কথা নয়। বিষয়টি আসলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের তৎপরতা ছাড়া এ বিষয়ে অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই। তবে বেসরকারি পর্যায়ে এর আগের লবিস্টকে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে 'বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রাম' নামে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত নিয়ে কাজ করছে পোশাক কারখানাগুলো। কাজের পরিবেশ, স্থান, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা, নিয়মমতো মজুরি ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত অনুযায়ী কাজ চলছে। হাতেম বলেন, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট শাখাকে বোঝানো চেষ্টা এবং দাবি করা হচ্ছে_ যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে শর্ত অনুযায়ী শিল্প মালিকরা কাজ করছেন সুতরাং শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাওয়ার দাবি এখন জোরালো। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, ডবি্লটিওর দোহা রাউন্ড শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি আগাম ফসল হিসেবে দেখতে চায় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার বিষয়েও বাংলাদেশ তৎপরতা চালাবে। তবে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ( ডবি্লটিও) নিয়ম অনুযায়ী স্বল্পোন্নত অন্যান্য দেশ (এলডিসি) যুক্তরাষ্ট্রের রফতানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পেলেও বাংলাদেশ এ সুবিধা পাচ্ছে না।
অন্যান্য উন্নত দেশের মতো নিয়মিত শুল্ক দিয়েই বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রফতানি হচ্ছে। একক দেশ হিসেবে দেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ২৬ শতাংশ পোশাক রফতানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং নিট পোশাক রফতানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) গড় রফতানি প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৫ শতাংশের বেশি। ডলারের হিসাবে রফতানি আয় কমেছে ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তৈরি পোশাকের ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশের মধ্যে নিটের অবদানই বেশি। চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে নিট থেকে মোট রফতানি ৪২ শতাংশ। ওভেনে ৩৬ শতাংশ।
No comments