যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টিআইসিএফ চুক্তি আগামী মাসে by আবুল কাশেম

গামী জানুয়ারি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম (টিআইসিএফ) হতে যাচ্ছে। চুক্তিটি স্বাক্ষরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে চলতি ডিসেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছে প্রতিনিধিদল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও চুক্তির একটি খসড়া তৈরি করে রেখেছে। নতুন এই চুক্তিতে শ্রমমান ও মেধাস্বত্ব ইস্যু বাদ দেওয়ার ব্যাপারে জোর আপত্তি জানানো হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।


গত সপ্তাহে বাণিজ্যসচিব মো. গোলাম হোসেন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়তাবিষয়ক টিআইসিএফ চুক্তি করতে ঢাকা প্রস্তুত রয়েছে। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরে আসবে। তারপর জানুয়ারি মাসেই চুক্তিটি স্বাক্ষর হতে পারে। তিনি জানান, ঢাকা চুক্তির খসড়া ইতিমধ্যে প্রস্তুত করে রেখেছে। তবে চুক্তি স্বাক্ষরের দিনক্ষণ নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।
গোলাম হোসেন বলেন, 'চুক্তির বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আমরা তাদের জানিয়ে দিয়েছি প্রতিনিধিদল পাঠাতে। প্রতিনিধিদল ঢাকায় এলে চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে।'
এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র টিআইসিএফের একটি খসড়া বাংলাদেশকে দিয়েছে। সেখানে একটি ইস্যু নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি, নিজেদের মতো করে টিআইসিএফের খসড়া তৈরি করার জন্য।
চুক্তির বিষয়গুলো পর্যালোচনা করার জন্য গত ২৮ থেকে ৩০ জুন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেন, পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাবি্লউটিও সেলের মহাপরিচালক অমিতাভ চক্রবর্তী। ওই সফরে প্রতিনিধিদল দুর্নীতি, মেধাস্বত্ব ও পরিবেশ ইস্যু তিনটি বাদ দেওয়ার ব্যাপারে যুক্তি তুলে ধরেন। স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র হিসেবে সে সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের যুক্তি মেনে নেয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, টিআইসিএফ চুক্তি হলে ডাবি্লওটিওর আওতায় বাংলাদেশ ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে মেধাস্বত্ব্ব (আইপিআর) সুবিধা পাচ্ছে, সেটি বহাল থাকবে কি-না। জবাবে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, টিআইসিএফ চুক্তি হলেও বাংলাদেশে ডাবি্লওটিওসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার বাণিজ্যিক সুবিধা প্রচলিত রয়েছে_তার কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। এ চুক্তির মাধ্যমে দুটি দেশের প্রতিনিধি নিয়ে যৌথ বাণিজ্যিক কাউন্সিল গঠিত হবে। ওই কাউন্সিল দেশ দুটির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো খসড়ায় বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার ও শ্রমের মান নিয়ে আন্তর্জাতিক সব আইন ও মান মেনে চলবে। খসড়ার এই ধারাটিতেই আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় আন্তর্জাতিক আইন ও মান মেনে চলার বাধ্যবাধকতার বদলে পর্যায়ক্রমে শ্রমের মানোন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া টিআইসিএফ থেকে মেধাস্বত্বের বাধ্যবাধকতার ধারাটিও বাতিল করে দিচ্ছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান. যুক্তরাষ্ট্র আগে যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টম্যান্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট- টিফা চুক্তির আগ্রহ দেখিয়েছিল, তার বিকল্প হিসেবেই স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে টিআইসিএফ।

No comments

Powered by Blogger.