৪ দিনের ম্যাচকে গুরুত্ব দিলেন কোচও

ট্টগ্রাম থেকে ফিরে গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথমে কথা বলার কথা ছিল তামিম ইকবালের। মাঝপথে বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার জানালেন, তামিম নয়, অসুস্থতা থেকে ফিরে আসা নাঈম ইসলাম কথা বলবেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত মিডিয়ার সঙ্গে কথা বললেন কোচ স্টুয়ার্ট ল। চট্টগ্রামে অধিনায়ক মুশফিক প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছিলেন। গতকাল অস্ট্রেলিয়ান কোচও


বললেন, প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ একজন ক্রিকেটারকে টেস্টের উপযোগী করে। সমকাল পাঠকদের জন্য তা তুলে দেওয়া হলো... প্রশ্ন : দ্বিতীয় টেস্টে আপনার দল সম্পর্কে আপনি জানেন?
স্টুয়ার্ট ল : আমার নিজের ভাবনা আছে, মুশফিক এবং নির্বাচকদেরও আছে নিজস্ব চিন্তা। আমরা একসঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। দল চূড়ান্ত করতে আমরা খুব বেশি দেরি করব না। আমরা সবাই আইডিয়া নিয়েছি, এখন শুধু একসঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
প্রশ্ন : ক্রিকেটারদের এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখলে পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়তে পারে?
স্টুয়ার্ট ল : প্রথম টেস্ট থেকে আজ পর্যন্ত আমরা একটি স্কোয়াড হিসেবে আছি। আমরা সবাই এমনভাবে অনুশীলন করছি যেন সবাই টেস্ট খেলছি। কাজেই এটা কোনো ইস্যু না।
প্রশ্ন : দলের মানসিক অবস্থা কেমন?
স্টুয়ার্ট ল : এমন একটি অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা সত্যিই অনেক কঠিন। যখন একজন খেলোয়াড় জানে না, তার পরের রানটি কোথা দিয়ে আসবে, তখন অনেকটা সাগরে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে যায়। এখন সবচেয়ে সহজ কাজ হচ্ছে আমি যেটা করছি। ক্রিকেটারদের বলছি, যে জিনিসটা তোমাকে সফল করেছে তার ওপর থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিও না। যদি আমরা বেসিকটা ভালো করতে পারি এবং এ টেস্টে মানসিকভাবে নিজেদের প্রয়োগ করতে পারি তাহলে আমি নিশ্চিত, ছেলেরা এবার রান পাবেই।
প্রশ্ন : ব্যাটিং অর্ডারে কোনো পরিবর্তন আসতে পারে?
স্টুয়ার্ট ল : আগের মতো আমি এখনও বলছি, অধিনায়ক এবং নির্বাচকদের সঙ্গে আলোচনার পর এ বিষয়টি ঠিক করা হবে। বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর একটি টেস্ট ম্যাচের আগে আজকের সেশনটা ছিল সবচেয়ে ফলপ্রসূ।
প্রশ্ন : কয়েকটি পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে_ আশরাফুল স্কোয়াডে নেই; কিন্তু সে আজ ট্রেনিং করেছে। ক্রিকেটারদের মধ্যে বিষয়টা উদ্বেগ তৈরি করতে পারে না?
স্টুয়ার্ট ল : আমি যতদূর জানি, সে স্কোয়াডে আছে। এ জন্যই সে আজ অনুশীলন করেছে। এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে এখনও কোনো মতপার্থক্য হয়নি। হতে পারে এটা একটা ধারণা এবং এ ধারণাটাই মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। আমি পুরো স্কোয়াডকে টেস্টের জন্য প্রস্তুত করছি। আমি সবাইকে খেলার দিন যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছি। সব দলই এমনটা করে। হঠাৎ করে যদি কেউ অসুস্থ বা ইনজুরিতে পড়ে তাহলে দলে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে।
প্রশ্ন : পাকিস্তানের স্পিনারদের আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
স্টুয়ার্ট ল : অসাধারণ প্রতিভাবান এবং মাঠের ভেতরে ও বাইরে তাদের সবকিছু দেখা উচিত। বর্তমানে যারা পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করছে তাদের সবার ভেতর থেকে ভালো করার একটা তাগিদ বাইরে থেকে বোঝা যায়।
প্রশ্ন : ঢাকা টেস্টের জন্য কেমন উইকেট আপনি পছন্দ করবেন?
স্টুয়ার্ট ল : পিচ নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই। সবার আগে প্রয়োজন হলো আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। চট্টগ্রামে আমরা একেবারে ফ্ল্যাট ব্যাটিং উইকেট পেয়েছিলাম; কিন্তু আমরা রান করতে পারলাম না। ছেলেদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে আমরা প্রস্তুত করছি।
প্রশ্ন : প্রথম শ্রেণীর ম্যাচের অভিজ্ঞতা টেস্টে কতটা কাজে লাগতে পারে বলে মনে করেন?
স্টুয়ার্ট ল : চার দিনের ম্যাচ হলো এমন একটি জায়গা যেখানে একজন ক্রিকেটার নিজেকে টেস্ট উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারে। প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ যত খেলবে টেস্ট তার কাছে তত সহজ হয়ে যাবে। প্রতি বছর বাংলাদেশ যথেষ্ট পরিমাণ টেস্ট খেলতে পারে না। কিছু ক্রিকেটার আছে, যারা পাঁচ-ছয় বছরেও বলার মতো টেস্ট খেলার সুযোগ পায় না। তাই আমার আশা, ক্রিকেট বোর্ড এবং ক্রিকেটাররা টেস্ট খেলার আগে যেন যথেষ্ট পরিমাণ চার দিনের ম্যাচ খেলার ব্যাপারে মনোযোগী হয়। আরেকটা বিকল্প হলো, আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে লম্বা দৈর্ঘ্যের ম্যাচ খেলে আসা। বিশেষ করে যখন বাংলাদেশ দল খেলার মধ্যে থাকে না।

No comments

Powered by Blogger.