ছাত্রলীগের নাম নিয়ে জঙ্গিবাদে জড়ালে উপযুক্ত শাস্তি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জঙ্গিবাদীদের
মধ্যে এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ নামধারী
কেউ এখনো জঙ্গিবাদী হয়েছে কীনা তা তদন্ত করে দেখতে হবে। তবে যদি কেউ
ছাত্রলীগের নাম নিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে তাদের উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে।’
তিনি আজ বুধবার ঢাকা থেকে নেত্রকোনা যাওয়ার পথে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের
মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন।
ময়মনসিংহে উগ্রবাদী সন্দেহে আটক সাতজনের মধ্যে একজন ছাত্রলীগের নেতাও
রয়েছেন- এমন তথ্যের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন
সাংবাদিকরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এরা (উগ্রবাদী) দেশকে ব্যর্থ
রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। এরা ইসলাম ধর্মকে ধ্বংস করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখনই এরা দেশের শান্তি বিনষ্ট
করতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। কিন্তু আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দক্ষতার
সাথে এদের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং পুলিশ জীবন দিয়ে জঙ্গিদের
প্রতিহত করেছে। এজন্য পুলিশের ওপর জনগণের আস্থাও বেড়েছে।’ আগের পুলিশ আর
এখনকার পুলিশের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিরা এখন দেশ নয় সারাবিশ্বের আতঙ্ক। সারাবিশ্ব
আক্রান্ত হলেও দেশে জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয়েছে। জঙ্গিরা যখনই
কিছু করার অপচেষ্টা করেছে তখনই জনগণ এগিয়ে এসেছে। সর্বস্তরের জনগণের
সহযোগিতায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিদের দমন করতে পেরেছে।’ ময়মনসিংহে আটক
উগ্রবাদীরা পহেলা বৈশাখে হামলার পরিকল্পনা করছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে
তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় উৎসবের পরই পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। জানমালের
কোনো ক্ষতি না করেই মানুষের সহযোগিতায় ময়মনসিংহের পুলিশ দক্ষতার সাথে
জঙ্গিদের ধরতে সক্ষম হয়েছে। পহেলা বৈশাখে জনগণের নিরাপত্তার জন্য মোটরবাইকে
একজনের বেশি চড়া নিষেধ করা হয়েছে। বিকেল পাঁচটার পরই সব ধরণের অনুষ্ঠান
সমাপ্ত করতে বলা হয়েছে।’
স্বরাষ্টমন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের
ভালুকা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত এবং ময়মনসিংহ শহরজুড়ে চারশ’ সিসি ক্যামেরা
বসানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১২৮টি সিসি ক্যামেরা বসানো
হয়েছে। এরফলে যে কোনো ঘটনা-দুর্ঘটনা শনাক্তকরণ এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা
সম্ভব হবে। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ময়মনসিংহ রেঞ্জের পুলিশ কর্মকর্তাদের
উদ্দেশে ব্রিফিং দেন। এসময় ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আলম
মামুন, অতিরিক্ত ডিআইজি ড. আক্কাস উদ্দিন ভূইয়া, বিভাগীয় কমিশনার জি এম
সালেহ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ
উপস্থিত ছিলেন। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেত্রকোনার উদ্দেশে ময়মনসিংহ ত্যাগ
করেন। উল্লেখ্য, ময়মনসিংহে উগ্রবাদী সন্দেহে আটক সাতজনের মধ্যে জেলার
ধোবাউড়া উপজেলার দীঘিরপাড় গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে আল আমিন (২৫) বাঘবেড়
ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। মঙ্গলবার দুপুরে বাঘবেড় ইউনিয়ন
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হোসেন মিলন নয়া দিগন্তকে জানান, আল আমিন
আওয়ামী পরিবারের ছেলে। তার চাচাতো ভাই জাকির হোসেন ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের
সভাপতি। চাচা মোফাখখারুল ছাত্রলীগের ইউনিয়ন শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও
যুবলীগের নেতা। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে আল আমিন সামনের সারিতে থাকতো বলে
তাকে ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। সে উগ্রবাদী প্রমাণিত
হলে অথবা কোনো ধরনের খারাপ কাজে জড়িত থাকলে অবশ্যই দল থেকে বহিস্কার করা
হবে।
No comments