হাঁপানি রোগী যা করবেন, যা করবেন না
হাঁপানি
রোগের চিকিৎসার মূল কথাই হলো রোগীকে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে
দেয়া। ছেলেমেয়েদের খেলাধুলা, গানবাজনা, পড়াশোনা সবই যাতে আর পাঁচটা সুস্থ
শিশুর মতো হয় তারই চেষ্টা করা হয়। হাঁপানি রোগী যাতে হীনম্মন্যতার শিকার না
হয় তার দিকে সবসময় নজর রাখতে হয়। নিয়ম মতো চললে হাঁপানি রোগীদের রোগের
উপসর্গ কম প্রকট হয় এবং তারা মোটামুটি ভালো বোধ করে। খাওয়া-দাওয়া, কাজকর্ম
বা নিদ্রা- কোনো কিছুতেই অনিয়ম করা তাদের জন্য ক্ষতিকর। হাঁপানি রোগী সকালে
বেশিক্ষণ শুয়ে থাকবে না। রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বে। সারা দিনের কাজকর্মের
পর পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া খুব প্রয়োজন। সকালে উঠে হাঁটা ও সাধারণ কিছু ব্যায়াম
করা দরকার। তার খাবার হবে সহজপাচ্য। নির্দিষ্ট সময়ে সে খাদ্য গ্রহণ করবে
এবং অধিক ভোজন করবে না। হাঁপানি রোগী কখনো ধূমপান করবে না। ধূমপান
শ্বাসনালীকে উত্তেজিত করে এবং পরিণামে শ্বাসনালীর সংক্রমণে সাহায্য করে।
হাঁপানি রোগীর শোয়ার ঘর ছিমছাম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং অনেক
জিনিসপত্রে তা ঠাসা থাকবে না। শোয়ার ঘর ধুলোবালি থেকে মুক্ত থাকবে এবং ঘরে
আলো-বাতাস থাকবে প্রচুর। ঘরের আসবাবপত্র এমনভাবে গোছানো থাকবে যেন প্রতিদিন
পরিষ্কার করা সহজ হয়। শোয়ার ঘরে কোনো লেপ বা কার্পেট না রাখা বাঞ্ছনীয়।
বায়ুদূষণ হাঁপানি রোগীর পক্ষে মারাত্মক। সুতরাং সে দিকে নজর দিতে হবে।
রোগীর বাসস্থান এবং কর্মস্থল নির্বাচনে এসব কথা মনে রাখা দরকার।
যে ঋতুতে
রোগের প্রকোপ বাড়ে সে ঋতুতে হাঁপানি রোগী কোনো বাগানবাড়ি বা পল্লী অঞ্চলে
বেড়াতে যাবেন না। যে ঋতুতে হাঁপানি বাড়ে সে ঋতুতে খাদ্য নির্বাচনেও বিশেষ
সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কোন সময়ে কোন ওষুধ কী মাত্রায় খেতে হবে, বুদ্ধিমান
রোগী তা সহজেই শিখে নেয় এবং এ ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন হয়
না। শুধু শারীরিক কাজকর্মেই নয়, মানসিক কাজকর্মেও নিয়মানুবর্তিতা হাঁপানি
রোগীর পক্ষে একান্ত প্রয়োজন। মানসিক চাপ হাঁপানির আক্রমণে সাহায্য করে।
হাঁপানি রোগী তার কাজকর্ম সাথে সাথে করে ফেলবে। কাজ জমিয়ে রাখবে না। জমা
কাজ বা কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
প্রতিদিন অবসরের জন্য কিছুটা সময় সরিয়ে রাখতে হবে। এই অবসরের সময় নিজের
একান্ত ভালো লাগার কাজ করা উচিত। গান শোনা, গল্পের বই পড়া, পছন্দসই রেডিও
বা টিভির অনুষ্ঠান উপভোগ করা ভালো। পরিশেষে হাঁপানিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় হলো- দৈনন্দিন রুটিনমতো চলা, তা হলে হাঁপানিকে অনেকটা এড়ানো সম্ভব।
লেখক : অধ্যাপক ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, রাফা মেডিক্যাল সার্ভিস, মহাখালী, ঢাকা।
ফোন : ০১৯১১৩৫৫৭৫৬।
লেখক : অধ্যাপক ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, রাফা মেডিক্যাল সার্ভিস, মহাখালী, ঢাকা।
ফোন : ০১৯১১৩৫৫৭৫৬।
No comments