বৈশাখি মেলা উপলক্ষে মানিকগঞ্জে সাজ তৈরি কারিগরদের ব্যাস্ততা
আর
কদিন বাধেই এতিহ্যবাহী বৈশাখি মেলা। মেলা আসলেই এর সাথে সংশিষ্ট
ব্যাবসায়ীরা আগেই থেকেই ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। গ্রাম ত বটেই এখন শহরে কিংবা
অফিস পাড়ায়ও ভিন্ন সাজে সজ্জিত হয় উঠে নতুন বছর কে স্বাগত জানাতে। বৈশাখির
মেলার বিন্নি ছাড়া মেয়ের জামাইরা শুশুরু বাড়ি যান না। আর বিন্নির সাথে বড়
বাতাসা, ঘোরা, হাতি, মটুক, পাখি ও নৌকার সাজ ছাড়া কল্পনাই করা যায় না।
মেলার দিন গাভীর দুধ দিয়ে বিন্নি বাতাসা না খেলে কি চলে। আর এ সাজ তৈরি
গারিগরা এখন ভিসন কর্মব্যাস্ত সময় পার করছে। মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া
উপজেলার বালিয়াটীর ভাটারা কয়েক বণিক পরিবার প্রায় ১৫০ বছর ধরে বিন্নির সাজ
তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন। গ্রাম কিংবা মেলার মধ্যে বিন্নির সাথে সাজ যেমন
বড় বাতাসা, ঘোরা, হাতি, মটুক, পাখি ও নৌকা প্রয়োজন পড়ে। আর এ সাজ শুধু
মাত্র জেলার একটি গ্রামেই তৈরি করে থাকে, সেটি হচ্ছে সাটুরিয়া উপজেলার
বালিয়াটীর ভাটারা বনিক পাড়ায়। এ বালিয়াাটীর সাজ নিতে মানিকগঞ্জ জেলা ছাড়াও
টাঙ্গাইল, ঢাকার জেলার বিভিন্ন পাইকাররা এখন এ বনিক বাড়ীতে ভীর করছে। এ
বনিক পাড়ার সাজ কারিগররা জানান, এ বছর পহেলা বৈশাখ কে কেন্দ্র করে প্রায় ৬
শত মুন সাজ বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সাটুরিয়া
উপজেলার ভাটারা গ্রামের শ্যামল, দিলিপ বণিক এ সাজ তৈরিতে মহা ব্যাস্ত সময়
পার করছে। সাজ সর্ম্পকে তারা ১ম ধারণা দেন, বিন্নি হচ্ছে কিছুটা মুড়ির মত,
বিন্নি ক্ষেতে হলে দুধ লাগে আর মিষ্টির জন্য এ সাজের প্রয়োজন পড়ে। সাজ শুধু
মাত্র চিনি দিয়ে বানানো হয়। আর বড় বাতাসা বানাতে গেলে চিনির সাথে আখের গুর
লাগে। দিলিপ বণিক আরো জানান, প্রথমে বিশেষ ভাবে তৈরি করা পাতিলে চিনি জাল
করা হয়, চিনি ঘলে গেলে, সে গরম চিনির পানি, ঘোরা, হাতি, মটুক, পাখি ও নৌকার
কাঠের ফর্মায় ডালা হয়।
মিনিট ১০ পরেই তা আবার ফ্রেম থেকে খুলে ফেলা হয়। আর
তৈরি হয়ে যায় সাজ। আর কদমা বানাতে গেলে চিনির জাল করে আবার তা ঠান্ডা করে,
বিশেষ ভাবে বড় রশির মত তৈরি করা হয়, পড়ে তা চিকুন সুতা দিয়ে ছোট ছোট আকারে
কাটা হয়, তখন তৈরি হয়ে যায় কদমা । এবারের বৈশাখ মেলা উপলক্ষে প্রায় ৫
প্রকার সাজ তৈরি করা হচ্ছে। এ সাজ করিগর ভগবত বনিক জানান, আমাদের বাপ-
দাদারা এ ব্যাবসা করতেন, তাতে কম করে হলেও প্রায় ১৫০ বছর ধরে এ ব্যাবসা করে
আসছি। তিনি আরো জানান, আমরা বতর্মানে ৫টি পরিবার এ সাজ তৈরি করে আসছি।
মানিকগঞ্জের শুধুমাত্র আমরাই এ ব্যাবসা করে আসছি। দিলিপ বণিক জানান, গেলবার
বৈশাখে আমরা প্রায় ৫০০ মুন সাজ বিক্রি করেছিলাম। এ বছর প্রায় ৬ শ মুন সাজ
বিক্রি হবে আশা করছেন। আমরা প্রতি কেজি সাজ পাইকারী বিক্রি করছি ৮০ টাকা ,
আর মেলার দিন তারা ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি করে থাকে। এক মুন সাজ তৈরি
করতে খরচ হয় ২ হাজার ২ শত টাকা, আর পাইকারী বিক্রি করা যায় ২ হাজার ৮ শত
টাকা । বড় বাতাসা ১ দিনে ২ মুন তৈরি করা যায়,আর সাজ তেরি করা যায় ৪ মুন
পর্যন্ত। চিনির দাম দফায় বাড়াতে তাদের লাভ কম হচ্ছে। তাছাড়া সাজ তৈরির করার
সময় সবসময় চুলা জ্বালাতে হয়, জ্বালানি হিসেবে আমরা ব্যাবহার করি গষি,
কিন্তু সরকার যদি আমাদের গ্যাস সংযোগ দিত, তাহলে আমাদের খরচ কমার পাশ- পাশি
দিনে বেশী করে কাজ করতে পারতাম বলে জানালেন সাজ কারিগররা।
No comments