শীর্ষ ১০০ খেলাপির আমলনামা

খেলাপিদের কাছে জিম্মি দেশের ব্যাংকিং খাত। শীর্ষ ১শ’ ঋণখেলাপির কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের ২৬ শতাংশ। এর মধ্যে আবার সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা সরকারি ৬ ব্যাংকের। এই ঋণের পুরোটাই আদায় অযোগ্য বা কুঋণ। বিশ্লেষকদের মতে, বিপুল অংকের এই টাকা আর আদায় হবে না। যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক কোম্পানি ইলিয়াস ব্রাদার্সের। ১১টি ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা অন্তত দুটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের সমান। ৫৩২ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা ট্রেডিং হাউস। এসব ঋণের বিপরীতে কোনো ধরনের জামানতও রাখা হয়নি। আর জামানত না থাকায় খেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় সম্ভব নয়। অর্থাৎ সম্পূর্ণ জালিয়াতির মাধ্যমেই নেয়া হয়েছে ঋণ। তবে এই তালিকা কেবল একক প্রতিষ্ঠানের ফান্ডেড (নগদ টাকা) খেলাপি ঋণ। এর বাইরে একই গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে আরও খেলাপি ঋণ রয়েছে। এছাড়া নন-ফান্ডেড ঋণ (এলসি খোলা ও ব্যাংক গ্যারান্টি) রয়েছে।
সব মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে এসব গ্রুপের খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। কিন্তু একক প্রতিষ্ঠানে ঋণ কম হওয়ায় ওইসব ঋণ শীর্ষ ১শ’ খেলাপির তালিকায় আসেনি। এদিকে খেলাপি ঋণে বড় দুই গ্রুপ হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা ৫ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা। যার মধ্যে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে হলমার্কের কাছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা এবং বিসমিল্লাহ গ্রুপের কাছে পাওনা ১ হাজার ১শ’ কোটি টাকা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ যুগান্তরকে বলেন, সরাসরি অর্থ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এসব ঋণ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ ছাড়া কারও পক্ষে কোনো ধরনের জামানতবিহীন ঋণ নেয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, এসব ঋণখেলাপিই পুরো ব্যাংকিং খাতকে জিম্মি করে রেখেছে। তার মতে, এ ধরনের ঋণ বিতরণ সাফ জালিয়াতি। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, গুটিকয়েক ব্যক্তির কাছে পুরো ব্যাংকিং খাত জিম্মি হয়ে থাকতে পারে না। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, খেলাপি ঋণ আদায়ে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ঋণ আদায়ের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্যই কঠোর অবস্থানে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ইতিমধ্যে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর জামানতবিহীন ঋণ বিতরণের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’ জানা গেছে, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকত ঘেঁষে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলিয়াস ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড। কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই ২০০৯ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটিকে ২৩৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ দেয়। এক্ষেত্রে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা এবং শর্তও মানা হয়নি।
পরবর্তী ২ বছরে মাত্র ৩৩ কোটি টাকা পরিশোধ করে ইলিয়াস ব্রাদার্স। বাকি ২০৫ কোটি টাকা পরিশোধ না করে লোকসানি দেখানো হয় প্রতিষ্ঠানকে। বর্তমানে সুদ-আসল মিলিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা ২৮০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। শুধু অগ্রণী ব্যাংক নয়, একই প্রতিষ্ঠান আরও ১০টি ব্যাংকে ঋণখেলাপি। এর মধ্যে এবি ব্যাংকে খেলাপি ৬১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, ব্যাংক এশিয়ায় ৩৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংকে ৭১ কোটি ৮০ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকে ১৪২ কোটি ৭০ লাখ, ওয়ান ব্যাংকে ২৮ কোটি ৫৪ লাখ, পূবালীতে ৬ কোটি ১৯ লাখ, স্ট্যান্ডার্ড ২২ কোটি ৪৩ লাখ এবং সিটি ব্যাংকে খেলাপি রয়েছে ৫৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। নিয়মানুসারে এক ব্যাংকে খেলাপি ঋণ থাকলে অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার কথা নয়। কিন্তু এসব নিয়ম-কানুনের কোনো তোয়াক্কা করেনি ব্যাংকগুলো। জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। আর খেলাপি ঋণের জন্যই শিল্প ঋণের সুদের হার কমানো যাচ্ছে না। কারণ এই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে মুনাফা থেকে প্রভিশন করতে হয়। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ কমাতে না পারলে এ খাতের উন্নয়ন সম্ভব নয়। মির্জ্জা আজিজ বলেন, জামানত ছাড়া যে ব্যাংক ঋণ দিয়েছে, ওই ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তার মতে, কোন বিবেচনায় এত বড় ঋণ দেয়া হল তা জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারলে আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ ১০০ খেলাপির কাছে ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ২৬ শতাংশ। এর পুরোটাই কুঋণ। অর্থাৎ এই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে শতভাগ প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখতে হয়। উদাহরণস্বরূপ একটি ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করল।
ওই ব্যাংকের ৭৫ কোটি টাকা কুঋণ আছে। এ অবস্থায় মুনাফা থেকে ৭৫ কোটি টাকা প্রভিশন রাখতে হবে। এরপর বাকি ২৫ কোটি টাকা থেকে কর পরিশোধের পর যে টাকা থাকবে, সেটাই ওই ব্যাংকের নিট মুনাফা। আর প্রভিশনের বাধ্যবাধকতা থাকায় ব্যাংকগুলোকে নিয়মিত গ্রাহকের কাছ থেকে বেশি সুদ নিতে হয়। অন্যদিকে ব্যাংকের নিট মুনাফা কমলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ কমে যায়। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের কারণে মুদ্রা এবং পুঁজি উভয় বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সামগ্রিকভাবে দেশের পুরো অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ ১০০ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সোনালী ব্যাংকেই রয়েছে ১৫টি। এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। অগ্রণী ১ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা, বিডিবিএল ৬৩১ কোটি টাকা, রূপালী ৪২৫ কোটি টাকা, বেসিক ১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা, কৃষি ব্যাংকের শীর্ষ খেলাপিদের ২২৯ কোটি টাকা ঋণ উল্লেখযোগ্য। একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে খেলাপি ঋণে ১১তম অবস্থানে রয়েছে এমএম ভেজিটেবল অয়েল প্রোডাক্ট। ৬ ব্যাংকে এ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ২৮৫ কোটি টাকা। এরপর এসকে স্টিল ২৬৯ কোটি, বিসমিল্লাহ টাওয়েল ২৪৪ কোটি, সিদ্দিক ট্রেডার্স ২৪০ কোটি, এগ্রো কেমিক্যাল ২১২ কোটি, খালেক অ্যান্ড সন্স ২০৭ কোটি, এক্সপার্ট টেক ১৭৬ কোটি, ওয়ালমার্ট ফ্যাশন ১৭০ কোটি এবং এমবি গার্মেন্টের ১৭০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ যুগান্তরকে বলেন, বড় কিছু গ্রাহকের কাছে জিম্মি হয়ে আছে ব্যাংকিং খাত। এরা বিভিন্ন উপায়ে ঋণ নেয়।
যে কারণে জামানত দেয়া লাগে না। তিনি বলেন, জামানত না থাকায় এ ঋণ আদায়ের কোনো উপায় আছে বলে মনে হয় না। অর্থাৎ ব্যাংকিং খাতকে এর মূল্য বহু বছর দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতের জন্য আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামীতে তারা এসএমইতে ঋণ বেশি দেবে। জানতে চাইলে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির সাবেক সভাপতি ও মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন যুগান্তরকে বলেন, খেলাপি ঋণের এ চিত্র নিঃসন্দেহে উদ্বিগ্নতার বিষয়। আর এটি এখন ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। তিনি বলেন, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে তিনটি স্তরে ব্যাংকারদের ডিউ ডিলিজেন্স (নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে মেনে চলা) জরুরি। এর প্রথম স্তর হল ঋণ পাওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা। তিনি বলেন, প্রাথমিক যোগ্যতায় যেসব বিষয় দেখা উচিত তা হল- যে প্রকল্পে ঋণ দেয়া হবে তার বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত, যে ব্যবসা করার কথা বলা হচ্ছে ঋণগ্রহীতার ওই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে কিনা। এ ছাড়া যেসব পণ্য উৎপাদন করা হবে বাজারে তার চাহিদা আছে কিনা। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় স্তর হল- ঋণের অর্থ যে প্রকল্পে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে, ওই প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা। সবশেষ কোনো কারণে ব্যবসা খারাপ বা ধীরগতি হলে দ্রুত টাকা আদায়ের ব্যবস্থা। তার মতে, ব্যাংকাররা এই তিনটি কাজ সঠিকভাবে করলে ঋণ খেলাপি হওয়ার কথা নয়।
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক খেলাপি ঋণ : খেলাপি ঋণের বিবেচনায় ২১ নম্বর অবস্থানে রয়েছে বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। বর্তমানে বেসরকারি খাতের ওয়ান ব্যাংকে এ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ১৬৩ কোটি ৪১ টাকা। এ ছাড়া ইমদাদুল হক ভূঁইয়ার সিটি ব্যাংকে ১৬২ কোটি, স্কলারটিকা লিমিটেডের আইএফআইসি ব্যাংকে ১৬২ কোটি, মার্ক শিপ বিল্ডিং ১৬০ কোটি, এম রহমান স্টিল মিল ১৬০ কোটি, পদ্মা ওয়েভিং, ১৫৯ কোটি, এমকে শিপ বিল্ডার্স ১৫৪ কোটি, হিন্দাল ওয়ালী টেক্সটাইল ১৫৩ কোটি, মাস্টার্ড ট্রেডিং ১৫২ কোটি, লামিসা স্পিনিং ১৪৭ কোটি টাকা। সোনালী জুট মিলস ১৪৬ কোটি টাকা, লাকি শিপ বিল্ডার্স ১৪৬ কোটি, দোয়েল অ্যাপারেল ১৪৪ কোটি, ওয়ান ডেনিম মিলস ১৪৩ কোটি, অর্জুন কার্পেট অ্যান্ড জুট ওয়েভিং মিলস ১৪২ কোটি, এ জামান অ্যান্ড ব্রাদার্স ১৪২ কোটি, অরনেট সার্ভিস ১৪১ কোটি, মুন বাংলাদেশ ১৪০ কোটি, তাবাসসুম এন্টারপ্রাইজ ১৩২ কোটি, নর্দান পাওয়ার সল্যুশন ১৩২ কোটি, এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ১৩০ কোটি, ডেল্টা সিস্টেমস ১২৯ কোটি, পদ্মা ব্রেচিং অ্যান্ড ডাইং ১২৯ কোটি, টেলিবার্তা ১২৮ কোটি, দি অয়েল টেক্স লি. ১২৭ কোটি, জারা নিট টেক্সটাইল ১২৩ কোটি, নিউ রাখী টেক্সটাইল মিল ১২৩ কোটি, নর্দান ডিসট্রেলারিজ ১২২ কোটি, মাকসুদা স্পিনিং মিলস ১২০ কোটি, সুপার সিক্স স্টার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড ১২০ কোটি, আলভি নিট টেক্সটাইল ১১৭ কোটি, মনোয়ারা ট্রেডিং ১১৭ কোটি, স্ট্রিজার কম্পোজিট লি. ১১৫ কোটি, ঢাকা টেলিফোন কোম্পানি ১১৩ কোটি,
জেসমিন ভেজিটেবল অয়েল ১১২ কোটি, মা টেক্স ১১১ কোটি, এমআর সোয়েটার কম্পোজিট ১১১ কোটি, প্রফুসোন টেক্সটাইল ১১০ কোটি, মাহবুব স্পিনিং মিলস ১০৯ কোটি, আলী পেপার মিল ১০৮ কোটি, গ্রোভ মেটাল কমপ্লেক্স ১০৮ কোটি, জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং ১০৮ কোটি, রহিমা ফুড কর্পোরেশন ১০৬ কোটি, সর্দার অ্যাপারেলস ১০৬ কোটি, নিউ অটো ডিফাইন ১০২ কোটি, আনিকা এন্টারপ্রাইজ ১০২ কোটি, আফিল জুট মিলস ৯৯ কোটি, আরকে ফুড ৯৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া আলফা টোব্যাকো এমএফজি ৯৭ কোটি, টেকনো ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ৯৭ কোটি, ফেয়ার এক্সপো ওয়েভিং মিলস ৯৬ কোটি, ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজ ৯৪ কোটি, মীম এন্টারপ্রাইজ ৯৩ কোটি, আজলান শিপিং লাইন ৯০ কোটি, জেকওয়ার্ড নিটেক্স ৯০ কোটি, এমআর ট্রেডিং ৮৯ কোটি, অ্যাপোলো ট্রেডিং ৮৯ কোটি, আফসার অয়েল অ্যান্ড ভেজিটেবল প্রোডাক্ট ৮৮ কোটি, সাইফান শিপিং লাইন ৮৮ কোটি, রেপকো লেবরেটরিজ ৮৮ কোটি, মেসার্স হাবিবুল ইসলাম ৮৭ কোটি, জুলিয়া সোয়েটার কম্পোজিট লি. ৮৬ কোটি, ড্রেজ বাংলা প্রা. লি. ৮৫ কোটি, জাভেদ স্টিল মিল ৮৪ কোটি, মনিকা ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল ৮৩ কোটি, এসএ ট্রেডার্স ৮৩ কোটি, ফরিদপুর টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ ৮৩ কোটি, হাফিজ অ্যান্ড ব্রাদার্স ৮৩ কোটি, ড্রেসমি ফ্যাশন ৮২ কোটি, শাপলা ফ্লাওয়ার ৮২ কোটি, ইসলাম ট্রেডিং কনসোর্টিয়াম ৭৯ কোটি, জাহিদ এন্টারপ্রাইজ ৬৩ কোটি, বাংলাদেশ ড্রেসেস ৫৬ কোটি এবং মিতা টেক্সটাইলের ৫৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে।
খেলাপি ঋণে শীর্ষ দুই গ্রুপ : একক গ্রুপ হিসেবে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে হলমার্ক। আর একক গ্রুপ হিসেবে ফান্ডেড এবং নন-ফান্ডেড মিলিয়ে হলমার্কের কাছে খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে হলমার্ক ফ্যাশনের কাছে ৭৭৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে আবার ফান্ডেড ঋণ ৩৪৩ কোটি এবং নন-ফান্ডেড ঋণ ৪৩২ কোটি টাকা। গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের কাছে ৫২৫ কোটি, আনোয়ার স্পিনিং মিলসের কাছে ৪৭৪ কোটি, হলমার্ক ডিজাইন ওয়্যারের কাছে ৭২ কোটি, ওয়াল মার্ট ফ্যাশনের কাছে ১৭০ কোটি ও হলমার্ক স্পিনিং মিলসের কাছে ৭২ কোটি টাকা। অপরদিকে বিসমিল্লাহ গ্রুপ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। তবে শীর্ষ ১০০ তালিকায় এ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.