হঠাৎ কেন অবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন মাশরাফি?
ঘোষণাটা
এলো হঠাৎ করেই, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছেন মাশরাফি বিন
মর্তুজা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের
ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না তাকে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক উজ্জল নক্ষত্রের
নাম মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সোনালী সময়ের বার্তাবাহক ও
লড়াকু অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটে। একের পর এক সাফল্য এসে ধরা দিয়েছে তার হাত ধরেই। তবে কি কারণে
হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নিলেন মাশরাফি? এটা কি নিছক তার একান্ত সিদ্ধান্ত, নাকি
এতে রয়েছে অন্য কারো হাত? এমন প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশে-বিদেশে তার
কোটি-কোটি ভক্তদের মাঝে। সত্য উদঘাটন করতে গিয়ে জানা গেছে তার সমর্থকদের
আশঙ্কাই বাস্তব। শোনা গেছে, জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে বেশ
কিছুদিন আগেই বিসিবি কর্তাদের জানিয়েছেন, মাশরাফি, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর
রহিমকে তিনি টি-টোয়েন্টি দলে জরুরি মনে করেন না। আপাতত কোচের ভাবনার
বাস্তবায়ন শুরু মাশরাফিকে দিয়েই। শ্রীলঙ্কায় দলের সাথে যোগ দেয়ার অনেকটা
সাথে সাথেই বিসিবির শীর্ষকর্তারা তাকে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে
বলেন। একটি সংবাদ মাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাই ওয়ানডে সিরিজ জুড়ে
চাপটা ছিল প্রবাহমান। সেই চাপ নিয়েই খেলেছেন মাশরাফি, নেতৃত্ব দিয়েছেন
দলকে। ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, লড়াইটা চালিয়ে যাবেন। খেলে যাবেন টি-টোয়েন্টি।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে কোচ আবারও বিসিবি কর্তাদের বলেন, টি-টোয়েন্টি নিয়ে
মাশরাফির সাথে কথা বলতে। বিসিবির একাধিক সূত্র ওই সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত
করেছে, সোমবার রাতে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান দলের সিনিয়র চার
ক্রিকেটারকে ডেকে কথা বলেন। জানিয়ে দেন, তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক চায়
বিসিবি। এরপরই ভবিষ্যতের ছবিটা পরিষ্কার হয়ে ওঠে মাশরাফির সামনে।
ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছেটাও তখনই মরে যায়। কোচের
ভাবনার সাথে লড়াই করা যায়, কিন্তু নিজেদের অভিভাবক প্রতিষ্ঠানের সাথে তো
লড়াই চলে না! মঙ্গলবার ম্যাচের আগে দুপুরেই পরিবারের সবার সাথে কথা বলে
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মাশরাফি। এই সিরিজের পর আর খেলবেন না
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে
টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত ৫২টি
টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। বল হাতে নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। যা বাংলাদেশের
টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট। তার সেরা বোলিং ফিগার ১৯ রানের
বিনিময়ে ৪ উইকেট। ব্যাট হাতে ৩৭ ইনিংসে ব্যাট করে তিনি করেছেন ৩৬৮ রান।
সর্বোচ্চ ৩৬। অপরাজিত ছিলেন ১০ বার। রেকর্ড ২৭ ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব
দিয়েছেন মাশরাফি। তার নেতৃত্বতে বাংলাদেশ দল জিতেছে ৯টি ম্যাচ। যা
বাংলাদেশের কোনো অধিনায়কের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ জয়।
No comments