পরীক্ষা দেওয়া হলো না তাঁর
পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময় ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসে বইয়ে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিলেন এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাজমুন নাহার রাহা (১৮)। পাশে ছিলেন মা রাবেয়া খাতুন। হঠাৎ রিকশার চাকার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে রিকশা থেকে পড়ে যান নাজমুন। মায়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নোয়াখালী শহরের উত্তর সোনাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রী নাজমুন নাহার নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। গতকাল বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দিতে নোয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন তিনি। নিজের চোখের সামনে মেয়ের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না মা রাবেয়া খাতুন। ‘আমার মেয়ে মরেনি, মরতে পারে না। আমি তার পাশে বসা। সে বই পড়ছিল। কিন্তু কে যেন আমার মেয়েকে টেনে রিকশা থেকে ফেলে দিয়েছে। আমি মেয়েকে ধরার সুযোগও পাইনি।’
এসব বলতে বলতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। গতকাল নাজমুনদের সোনাপুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের আহাজারিতে পুরো বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। পরীক্ষা শেষে নাজমুনের সহপাঠীরা ওই বাড়িতে ছুটে যান। এ সময় তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুই ভাইবোনের মধ্যে নাজমুন ছিলেন বড়। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েটির গলায় ওড়না পেঁচানোর লম্বা দাগ দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। মৃত ঘোষণার পর স্বজনেরা লাশ নিয়ে যান। সুধারাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে মারা যাওয়া ছাত্রীর পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই। তাই ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
No comments