নূরজাহানের জীবনের দাম ৩০ হাজার টাকা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
বিজয়নগরে নিম্নমানের নির্মাণ কাজের বলি হলো এক স্কুলছাত্রী। বিদ্যালয়ের এক
পাশের দেয়াল ধসে পড়েছিল নূরজাহান নামের ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীর ওপর। এ
ঘটনার পর ধসে পড়া দেয়ালটি পুনরায় বানানোর জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে প্রশাসন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে ধসে পড়া দেয়াল সরিয়ে নিয়ে নতুন দেয়াল নির্মাণ
করতে বলা হয়েছে। কিন্তু যাদের দায়সারা কাজে ছাত্রীর জীবন গেলো তাদের
বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই। অবশ্য নূরজাহানের পরিবারকে সরকারিভাবে ২০ হাজার
টাকা আর স্থানীয় সংসদ সদস্য দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা। এতেই মিটে গেছে সব। এ
নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে। দত্তখলার উবায়দুল মোকতাদির
চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো নূরজাহান। ২০১২ সালে স্কুলটি
প্রতিষ্ঠা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইয়া। বিদ্যালয়ের
চারদিকে দেয়াল নির্মাণের কাজ হয় সম্প্রতি। বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে নির্মিত
দেয়ালের একটি অংশ ২৫শে মার্চ সামান্য বাতাসে ধসে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা
জানান- সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নূরজাহান স্কুলে ঢুকার মুখেই এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। এলাকার লোকজন অভিযোগ করেন, প্রায় ১২ ফুট উঁচু করে
দেয়ালটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মাটির নিচে দেয়ালের ফাউন্ডেশন দেয়া হয়েছে
এক ফুটেরও কম। কোনো কোনো স্থানে ৭ ইঞ্চি ফাউন্ডেশনও দেয়া হয়নি। ফলে হালকা
বাতাসেই দেয়ালটি ধসে পড়ে। অভিযোগ এ কাজের কোনো তদারকিই ছিল না কারো। ঘটনার
পর কাজের দায়ভারও নিতে চাইছে না কেউ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন কাজ
করেছে ইউপি চেয়ারম্যান। আর ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন কাজ করেছে এলজিইডি। আবার
এলজিইডি’র কর্মকর্তারা বলছেন- কাজ ইউপি চেয়ারম্যানের। উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা আখতার উন নেছা শিউলী বলেন- এই কাজ তাদের নয়। ঘটনার পর আমি এ
বিষয়ে খোঁজ নিলে ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে জানান এটি এলজিএসপি’র (স্থানীয়
সরকার বিভাগের একটি প্রকল্প) কাজ। এর অর্থ সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের ফান্ডে
চলে যায়। তারাই কাজটি করে। ইউএনও হিসেবে আমি শুধু প্রকল্পটির অনুমোদন দিই। এ
ছাড়া আর কোনো কিছুই আমরা জানি না। আমি চেয়ারম্যানকে বলেছি ভাঙ্গা দেয়ালটি
সরিয়ে নিয়ে দ্রুত নতুন দেয়াল করে দিতে। তা না হলে তার মাফ নেই। স্থানীয়
সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক স্যারেরও এটাই নির্দেশ। প্রকল্পের একজন
কর্মকর্তাও ঘটনার পর এসেছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- এলজিএসপি প্রকল্পের অধীনে বিদ্যালয়ের চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ হয় কয়েক ধাপে। ধসে পড়া দেয়ালটির নির্মাণ ব্যয় ছিল প্রায় ৪ লাখ টাকা। চর ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিল এই কাজের হর্তাকর্তা। তারাই ঠিকাদার নিয়োগ, কাজ তদারকি সব করেছে। তবে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দানা মিয়া এখন বলছেন কাজটি এলজিইডি করেছে। ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজটি হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে ঠিকাদারের নাম জানাতে গড়িমসি শুরু করেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফা ফোন করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মিটিংয়ে আছেন বলে জানান। দুপুরের পর বলেন তার সচিব অফিসে নেই। সেকারণে এসব তথ্য জানাতে পারছেন না তিনি। ঠিকাদারের নামও জানা নেই তার। তার দাবি কাজের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কাজ করাইছে এলজিইডি। ডিজাইন-প্লান মতে কাজ হয়েছে। কাজ দেখে তারাই (এলজিইডি) বিল দিয়েছে। কাজ সঠিকভাবে হয়েছে বলে দাবি করেন চেয়ারম্যান। বলেন ঝড়-তুফানের সঙ্গে কোনো কথা নাই। ঝড়-তুফানে বড় বিল্ডিংও ফালাইয়া দেয়। তবে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন কাজ করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। একটা ইস্টিমিট আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে তারা। কিন্তু কাজ তারাই করেছে। বিভিন্নসূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের সাবেক এক চেয়ারম্যানের স্ত্রীর নামে করা লাইসেন্সে কাজটি করেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা। তার সঙ্গে রয়েছে আরো ২-৩ জন। যারা স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের ধারে কাছের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার চৌধুরী বলেন কে কাজ করেছে তার কোনো কিছুই জানি না। উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইয়া, কমিটির সদস্য সাচ্চু মিয়া ও ইউপি চেয়ারম্যান দানা মিয়াই সব জানেন। কাজ দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন- আমারে এত প্রশ্ন কইরেন না। এদিকে নিম্নমানের কাজ নিয়ে গোটা এলাকার মানুষের মধ্যেই বিরাজ করছে ক্ষোভ। ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করছেন তারা যারা এই কাজ করেছে তাদেরকেই। দেয়ালটি ধসে পড়ার পর এলাকার লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে দেখতে পান দেয়ালের উচ্চতা অনুযায়ী নিচে কোনো গাঁথুনিই দেয়া হয়নি। সেকারণে সামান্য বাতাসের ধাক্কায় পুরো দেয়াল একেবারে মাটিতে ধসে পড়ে। বিদ্যালয়ের কাছেই ইউনুছ মিয়া নামের এক বৃদ্ধ বলেন- আমরা মেপে দেখছি কোনো কোনো স্থানে ৬/৭ ইঞ্চি ফাউন্ডেশনও নেই। নিহত ছাত্রীর বাড়ি পাশের পাড়েঙ্গাবাড়ি গ্রামে। তার পিতার নাম আনোয়ার হোসেন মজনু। বিদ্যালয়ের পূর্বপাশে একটি গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে নূরজাহানকে। মজনু জানান- মেয়ের দাফন-কাফনের জন্যে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে আমাকে। পরে তারা দেখবে বলে জানিয়েছে। তার অভিযোগ এমনভাবে দেয়াল নির্মাণের কারণেই মারা গেছে তার মেয়ে। গ্রামের মানুষ প্রথমে নূরজাহানের লাশ দাফন করতে চায়নি। তারা এমন দেয়াল বানিয়ে মানুষ মারার বিচার চাইছিল। এরপর তাদেরকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে দাফন করতে বলা হয়। এরপর ১০ দিন পার হলেও আর কেউ খোঁজ করেনি নূরজাহানের পরিবারের। হয়নি কোনো বিচারের ব্যবস্থাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- এলজিএসপি প্রকল্পের অধীনে বিদ্যালয়ের চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ হয় কয়েক ধাপে। ধসে পড়া দেয়ালটির নির্মাণ ব্যয় ছিল প্রায় ৪ লাখ টাকা। চর ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিল এই কাজের হর্তাকর্তা। তারাই ঠিকাদার নিয়োগ, কাজ তদারকি সব করেছে। তবে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দানা মিয়া এখন বলছেন কাজটি এলজিইডি করেছে। ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজটি হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে ঠিকাদারের নাম জানাতে গড়িমসি শুরু করেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফা ফোন করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মিটিংয়ে আছেন বলে জানান। দুপুরের পর বলেন তার সচিব অফিসে নেই। সেকারণে এসব তথ্য জানাতে পারছেন না তিনি। ঠিকাদারের নামও জানা নেই তার। তার দাবি কাজের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কাজ করাইছে এলজিইডি। ডিজাইন-প্লান মতে কাজ হয়েছে। কাজ দেখে তারাই (এলজিইডি) বিল দিয়েছে। কাজ সঠিকভাবে হয়েছে বলে দাবি করেন চেয়ারম্যান। বলেন ঝড়-তুফানের সঙ্গে কোনো কথা নাই। ঝড়-তুফানে বড় বিল্ডিংও ফালাইয়া দেয়। তবে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন কাজ করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। একটা ইস্টিমিট আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে তারা। কিন্তু কাজ তারাই করেছে। বিভিন্নসূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের সাবেক এক চেয়ারম্যানের স্ত্রীর নামে করা লাইসেন্সে কাজটি করেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা। তার সঙ্গে রয়েছে আরো ২-৩ জন। যারা স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের ধারে কাছের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার চৌধুরী বলেন কে কাজ করেছে তার কোনো কিছুই জানি না। উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইয়া, কমিটির সদস্য সাচ্চু মিয়া ও ইউপি চেয়ারম্যান দানা মিয়াই সব জানেন। কাজ দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন- আমারে এত প্রশ্ন কইরেন না। এদিকে নিম্নমানের কাজ নিয়ে গোটা এলাকার মানুষের মধ্যেই বিরাজ করছে ক্ষোভ। ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করছেন তারা যারা এই কাজ করেছে তাদেরকেই। দেয়ালটি ধসে পড়ার পর এলাকার লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে দেখতে পান দেয়ালের উচ্চতা অনুযায়ী নিচে কোনো গাঁথুনিই দেয়া হয়নি। সেকারণে সামান্য বাতাসের ধাক্কায় পুরো দেয়াল একেবারে মাটিতে ধসে পড়ে। বিদ্যালয়ের কাছেই ইউনুছ মিয়া নামের এক বৃদ্ধ বলেন- আমরা মেপে দেখছি কোনো কোনো স্থানে ৬/৭ ইঞ্চি ফাউন্ডেশনও নেই। নিহত ছাত্রীর বাড়ি পাশের পাড়েঙ্গাবাড়ি গ্রামে। তার পিতার নাম আনোয়ার হোসেন মজনু। বিদ্যালয়ের পূর্বপাশে একটি গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে নূরজাহানকে। মজনু জানান- মেয়ের দাফন-কাফনের জন্যে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে আমাকে। পরে তারা দেখবে বলে জানিয়েছে। তার অভিযোগ এমনভাবে দেয়াল নির্মাণের কারণেই মারা গেছে তার মেয়ে। গ্রামের মানুষ প্রথমে নূরজাহানের লাশ দাফন করতে চায়নি। তারা এমন দেয়াল বানিয়ে মানুষ মারার বিচার চাইছিল। এরপর তাদেরকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে দাফন করতে বলা হয়। এরপর ১০ দিন পার হলেও আর কেউ খোঁজ করেনি নূরজাহানের পরিবারের। হয়নি কোনো বিচারের ব্যবস্থাও।
No comments