বিচারের ভয়ে নির্বাচন দিতে চায় না আওয়ামী লীগ- খালেদা জিয়া
‘লুটপাট-দুর্নীতির
বিচারের ভয়ে নির্বাচন দিতে ভয় পায় আওয়ামী লীগ’ মন্তব্য করে বিএনপি
চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া বলেছেন, সিটি নির্বাচন
সুষ্ঠু হলে জনগণ সরকারের মুখে জুতো মারতো। তিনি বলেন, বিদেশীরাও বলছেন-
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। অতিদ্রুত আলোচনার মাধ্যমে একটি নির্দলীয় সরকারের
অধীনে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা। কিন্তু
ক্ষমতাসীনরা এত খুন-খারাবি ও লুটপাট করেছে যে, মানুষের ভয়ে এখন নির্বাচন
দিতে ভয় পায়। তারা জানে নির্বাচন দিলে মানুষ কিভাবে প্রত্যাখ্যান করবে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তা দেখিয়ে দিয়েছে। যদি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা হতে
পারতো, তাহলে মানুষ সত্যিকারে জবাব দিতো। মানুষ তাদের মুখে জুতো মারতো।
গতকাল হোটেল পূর্বানী ইন্টারন্যাশনালে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ইসলামী
ঐক্য জোটের ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন,
দেশ আজ কারাগারে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ, বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীরা
কারাগারে বন্দি। আর আওয়ামী লীগের লোকেরা যতই চুরি-চামারি করুক তারা বহাল
তবিয়তে আছেন। তিনি বলেন, বিচারবিভাগ দলীয়করণ করা হয়েছে। সুবিচার পাওয়া যায়
না। বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীদের জেলে পচে মরতে হয়। আওয়ামী লীগের লোকেরা
ফ্রি থাকে তাদের জেলে দেয়া হয় না। আর তাদের মন্ত্রীরা লুটপাট করছে, তাদের
এগুলো কী অপরাধ নয়? তারা আওয়ামী লীগের লোক বলে মাফ পেয়ে যায়। সাবেক এ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ঢাকা শহর দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। আমরা যারা
ঢাকা শহরে থাকি তারা কোনরকম আছি। গ্রামের কথা চিন্তা করুন। তারা বিচার
পাচ্ছে না। অসহায় জীবন-যাপন করছেন। বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে। এয়ারপোর্ট
থেকে যেতে না পেরে জাহাজে করে যেতে চেষ্টা করে এখানেও আওয়ামী লীগের দালাল ও
পুলিশ জড়িত রয়েছে। সাগরে ভাসতে কোথাও জায়গায় পাচ্ছে না। বাংলাদেশেও তাদের
জায়গা নেই। দেশের মানুষ বিদেশে গিয়ে মরছে। আর বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন
হচ্ছে। বাংলাদেশকে এখন আর কোন দেশ বিশ্বাস করে না। খালেদা জিয়া বলেন,
মহিলারা ঘরে-বাইরে কোথাও নিরাপদ নয়। আমরা চাই দেশের মানুষ ভাল থাকুক,
নিরাপদে থাকুক। ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামীর
সভাপতিত্বে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে জোট শরিকদের মধ্যে জাতীয় পার্টি (জাফর)
চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মে. জে. (অব.) সৈয়দ
মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ
ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, জামায়াতে ইসলামীর আমিনুল ইসলাম,
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগের সভাপতি
এএইচএম কামরুজ্জামান, এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এলডিপির
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব
খন্দকার গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল
মেহেদী, খেলাফত মজলিসের গোলাম আকবর ও ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক
সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ অংশ নেন। ইফতারে বিএনপি নেতাদের মধ্যে- স্থায়ী
কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন
খোকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক
ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহদপ্তর সম্পাদক
আসাদুল করিম শাহিন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা ও শামা ওবায়েদ
অংশ নেন। এছাড়া ইসলামী ঐক্য জোট নেতাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আবদুল লতিফ,
মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক মুপতি মোহাম্মদ তৈয়্যব হোসোইন সহ
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। ইফতারের আগে টেবিলে টেবিলে
ঘুরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। এছাড়া ইফতারের
আগে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এদিকে শনিবার সুপ্রিম
কোর্ট প্রাঙ্গণে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ইফতার মাহফিলে যোগ দেবেন
খালেদা জিয়া।
No comments