কারাগারে মেহেরুন
স্ত্রী
নির্যাতনের মামলায় কারাবন্দি সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুলের কথিত প্রেমিকা
মেহেরুন বিনতে ফেরদৌস ওরফে সিঁথিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মুকুলের
স্ত্রী নাজনীন আকতার তন্বীর করা মামলায় গতকাল আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন
করেছিলেন তিনি। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
দেন। তার বিরুদ্ধে নির্যাতনে প্ররোচনার অভিযোগ এনেছেন মুকুলের স্ত্রী
নাজনীন আক্তার তন্বী। আদালত সূত্র জানায়, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আদালতে
আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন মেহেরুন বিনতে ফেরদৌস। জামিন শুনানিতে
মেহেরুনের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা খান দাবি করেন, মুকুলের সঙ্গে তার কোনও
সম্পর্ক নেই। তার স্বামী রাজিউল আমিনের সঙ্গেই তিনি বসবাস করছেন। ফলে
মুকুলের স্ত্রীকে নির্যাতনে প্ররোচনা দেয়ার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। এ
সময় মেহেরুনের জামিনের বিরোধিতা করেন নাজনীনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী
নজীবউল্লাহ হিরু, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, অ্যাডভোকেট মবিনুল
ইসলাম ও সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন জেসি। মুকুল ও মেহেরুনের কিছু অন্তরঙ্গ
মুহূর্তের ছবি আদালতকে দিয়ে অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, মেহেরুন তার
স্বামীর ঘর সংসার করলে অন্যের স্বামীর সঙ্গে এমন অন্তরঙ্গ ছবি আসে কিভাবে।
মেহেরুনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কারণেই মুকুল নাজনীনের উপর নির্যাতন
করতেন। এ সময় মেহেরুনের আইনজীবী এসব ছবি কম্পিউটারে তৈরি করা বলে দাবি
করেন। শুনানিতে মেহেরুনের আইনজীবীকে ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার দে বলেন,
মামলায় আত্মসমর্পণ করলে তার জামিন হতে পারে, জেলও হতে পারে, এমন সংকটময়
মুহূর্তে তার স্বামী আদালতে নেই কেন? তিনি কোথায়? তার স্বামীকে নিয়ে আসেন।
তিনি এসে মেহেরুনকে জিম্মায় নিলেই জামিন হতে পারে। এরপর মেহেরুনের স্বামী
ঢাকা ব্যাংকের মতিঝিল শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার রাজিউল আমিনকে
আদালতে হাজির করে আসামিপক্ষ। কিন্তু রাজিউল আমিন আদালতে এলেও মেহেরুনকে
নিজের ঘরে ফিরিয়ে নিতে অসম্মতি জানান। বিচারক এ সময় মেহেরুন ও রাজিউলকে
নিজেদের মধ্যে কথা বলার জন্য কিছুটা সময়ও দেন। কিন্তু রাজিউল রাজি না হওয়ায়
বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে মেহেরুনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার নথির তথ্য অনুযায়ী, স্ত্রী নাজনীনের দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন
আইনের মামলায় গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে গাজী টিভির বার্তা সম্পাদক
মুকুলকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর থানার পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে
একদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। কারাবন্দি মুকুলকে তার কর্মস্থল গাজী টিভি
থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মুকুলের স্ত্রী নাজনীন আকতার তন্বী দৈনিক
জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এই দম্পতির এক সন্তান রয়েছে। দু’বছর আগে তাদের
আরেক সন্তান চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর শোকে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন
নাজনীন। নাজনীনের অভিযোগ, ব্যাংকারের স্ত্রী মেহেরুনের সঙ্গে পরকীয়া
সম্পর্কে জড়ানোর পর তার উপর নানা নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন মুকুল।
চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য কয়েক মাস হাসপাতালে থাকার সময়
মুকুল ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে নাজনীনের দাবি।
No comments