বাম মোর্চার মতবিনিময় সভা- ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিগুলো প্রকাশের দাবি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় সম্পাদিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে বলে মত দিয়েছেন বামধারার কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা। এসব চুক্তি ও স্মারক জনসমক্ষে প্রকাশ করে নাগরিকদের মতামতসাপেক্ষে বাস্তবায়ন শুরুর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত মতবিনিময় সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত ওই সভা থেকে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে ভারত তোষণ নীতি থেকে সরে আসারও আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, যেহেতু বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই এবং জাতীয় সংসদে সেই অর্থে কোনো বিরোধী দল নেই, সেহেতু এসব চুক্তি জনগণের মতামত ছাড়া বাস্তবায়ন করা উচিত নয়।
বেশির ভাগ বক্তাই অভিযোগ তোলেন, ভারত সরকারের সমর্থনের বিনিময়ে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত বিষয় বাদ দিয়ে ভারতের সব চাহিদা একে একে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘মোদির বাংলাদেশ সফর: ২২ দফা চুক্তি ও জাতীয় স্বার্থ’ শীর্ষক ওই সভা থেকে দেশে গণতন্ত্রের সংকট নিয়ে সবাই বক্তব্য দেন। এর পাশাপাশি গণতন্ত্র উদ্ধারে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।
সভায় শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের শাসক দুর্বল হওয়ায় নতজানু হয়ে আছে। রাষ্ট্র জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। আমাদের প্রতিরোধের জাতীয়তাবাদ হারিয়ে গেছে।’ এমন পরিস্থিতিতে যুব সমাজ বিপথগামী হয়, ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে এবং মাদকাসক্তি, সন্ত্রাস ও হানাহানি বেড়ে যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি। ২২ বছরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার কথা উল্লেখ করে ওই শিক্ষাবিদ বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলেও এটা কল্পনাতীত ব্যাপার ছিল।
অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, সংস্কৃতি হচ্ছে জনগোষ্ঠীর মেরুদণ্ড। হিন্দির আগ্রাসনে সেই মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, মোদির সফরের সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বার্থ তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি সমাধান করা গেল না। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে মনমোহন সিংহের সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বাধা দিয়েছিলেন, এবারও বাধা দিলেন। তাঁর আসায় আবেগের প্রকাশ ছাড়া আর কোনো অর্জন দেখছি না।’
আকমল হোসেন বলেন, ‘আমাদের শাসকেরা জনগণের ওপর চেপে বসে আছেন। তাই তারাও জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রকৃতপক্ষে শাসকদের পরিকল্পনা ভারতকে তুষ্ট রাখা।’
তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘মোদি ঢাকা সফরে এসেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করার কথা বললেন। আমি খুবই আশাবাদী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে না।’
ফরাসি তিনটি ব্যাংক এই প্রকল্প থেকে তহবিল প্রত্যাহার করায় পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় তাদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে শেখ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বিদেশিরা আমাদের পরিবেশ ও সুন্দরবন নিয়ে ভাবতে পারে, আমরা পারছি না।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি রহমতউল্লাহ বিদ্যুৎ চুক্তির ফলে ভারত কীভাবে লাভবান হবে এবং বাংলাদেশকে কীভাবে বেশি টাকায় বিদ্যুৎ কিনতে হবে এবং বিদ্যুতের দামও কীভাবে বেড়ে যাবে, সে বিষয়টি তুলে ধরেন।
প্রকৌশলী ম এনামুল হক বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করা দরকার। কথা বলতে পারলেও গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। তাই চুপ করে বসে থাকব না, আবার অস্ত্রের মুখে বুক পেতে দেব না।
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, নদীর পানি দেওয়া-নেওয়ার বিষয় নয়। পানি পাওয়াটা ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অধিকার যা ভারত ক্ষুণ্ন করছে।
সভার সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু বলেন, মোদির ঢাকা সফরের সময়ে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার তুলে ধরে তা সমাধানে সরকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
সভায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতাদের মধ্যে আরও বক্তৃতা দেন মবিনুল হায়দার চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন নান্নু, হামিদুল হক, আবদুস সালাম প্রমুখ। সভার সঞ্চালক ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত মতবিনিময় সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত ওই সভা থেকে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে ভারত তোষণ নীতি থেকে সরে আসারও আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, যেহেতু বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই এবং জাতীয় সংসদে সেই অর্থে কোনো বিরোধী দল নেই, সেহেতু এসব চুক্তি জনগণের মতামত ছাড়া বাস্তবায়ন করা উচিত নয়।
বেশির ভাগ বক্তাই অভিযোগ তোলেন, ভারত সরকারের সমর্থনের বিনিময়ে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত বিষয় বাদ দিয়ে ভারতের সব চাহিদা একে একে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘মোদির বাংলাদেশ সফর: ২২ দফা চুক্তি ও জাতীয় স্বার্থ’ শীর্ষক ওই সভা থেকে দেশে গণতন্ত্রের সংকট নিয়ে সবাই বক্তব্য দেন। এর পাশাপাশি গণতন্ত্র উদ্ধারে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।
সভায় শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের শাসক দুর্বল হওয়ায় নতজানু হয়ে আছে। রাষ্ট্র জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। আমাদের প্রতিরোধের জাতীয়তাবাদ হারিয়ে গেছে।’ এমন পরিস্থিতিতে যুব সমাজ বিপথগামী হয়, ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে এবং মাদকাসক্তি, সন্ত্রাস ও হানাহানি বেড়ে যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি। ২২ বছরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার কথা উল্লেখ করে ওই শিক্ষাবিদ বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলেও এটা কল্পনাতীত ব্যাপার ছিল।
অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, সংস্কৃতি হচ্ছে জনগোষ্ঠীর মেরুদণ্ড। হিন্দির আগ্রাসনে সেই মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, মোদির সফরের সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বার্থ তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি সমাধান করা গেল না। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে মনমোহন সিংহের সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বাধা দিয়েছিলেন, এবারও বাধা দিলেন। তাঁর আসায় আবেগের প্রকাশ ছাড়া আর কোনো অর্জন দেখছি না।’
আকমল হোসেন বলেন, ‘আমাদের শাসকেরা জনগণের ওপর চেপে বসে আছেন। তাই তারাও জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রকৃতপক্ষে শাসকদের পরিকল্পনা ভারতকে তুষ্ট রাখা।’
তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘মোদি ঢাকা সফরে এসেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করার কথা বললেন। আমি খুবই আশাবাদী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে না।’
ফরাসি তিনটি ব্যাংক এই প্রকল্প থেকে তহবিল প্রত্যাহার করায় পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় তাদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে শেখ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বিদেশিরা আমাদের পরিবেশ ও সুন্দরবন নিয়ে ভাবতে পারে, আমরা পারছি না।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি রহমতউল্লাহ বিদ্যুৎ চুক্তির ফলে ভারত কীভাবে লাভবান হবে এবং বাংলাদেশকে কীভাবে বেশি টাকায় বিদ্যুৎ কিনতে হবে এবং বিদ্যুতের দামও কীভাবে বেড়ে যাবে, সে বিষয়টি তুলে ধরেন।
প্রকৌশলী ম এনামুল হক বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করা দরকার। কথা বলতে পারলেও গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। তাই চুপ করে বসে থাকব না, আবার অস্ত্রের মুখে বুক পেতে দেব না।
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, নদীর পানি দেওয়া-নেওয়ার বিষয় নয়। পানি পাওয়াটা ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অধিকার যা ভারত ক্ষুণ্ন করছে।
সভার সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু বলেন, মোদির ঢাকা সফরের সময়ে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার তুলে ধরে তা সমাধানে সরকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
সভায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতাদের মধ্যে আরও বক্তৃতা দেন মবিনুল হায়দার চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন নান্নু, হামিদুল হক, আবদুস সালাম প্রমুখ। সভার সঞ্চালক ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
No comments