ভারতের কাছে পার্লামেন্টারি রীতি শিখতে চায় পাকিস্তান!

আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে পার্লামেন্টারি প্রক্রিয়া আরো জোরদার করতে চায় পাকিস্তান। সে জন্য ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছে পাকিস্তান। এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ নেওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করেছে তারা। পাকিস্তান সফর শেষে দেশে ফিরে এ কথা জানিয়েছেন ভারতের স্পিকার মীরা কুমার।


পাকিস্তানের তিন দিনের সফর শেষে গত বুধবার দেশে ফিরেছেন লোকসভার স্পিকার মীরা কুমার।
দেশে ফেরার পর মীরা জানান, সফরকালে পাকিস্তানের স্পিকার ফাহমিদা মির্জার সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের সঙ্গেও নৈশভোজে যোগ দিয়েছেন তিনি। ঘরোয়াভাবে ভারতীয় স্পিকারের কাছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতারা আক্ষেপ করে বলেছেন, তাঁদের বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা ও সামরিক কাঠামো যতটা শক্ত, সে তুলনায় পার্লামেন্টারি ব্যবস্থা ততটাই দুর্বল। নির্বাচনের আগে জারদারি সরকারের লক্ষ্য পার্লামেন্টারি প্রক্রিয়া জোরদার করা। সেই লক্ষ্য পূরণে তারা বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছে। মীরা কুমারকে জানানো হয়েছে, ভারতের কাছ থেকে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ নিতে চান তারা।
যদিও ভারতের পার্লামেন্ট অধিবেশন তার নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৭০ শতাংশই বন্ধ থাকে। এতে অপচয় হয় কোটি কোটি রুপি। রুপির থলে নিয়ে লোকসভায় ঢুকে পড়েন এমপিরা। তা সত্ত্বেও দুটি অধিবেশনের মধ্যবর্তী সময়ে যেভাবে বিলের খসড়া তৈরি হয়, বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যেভাবে কাজ করে_সেটাই মনে ধরেছে ইসলামাবাদের। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই।
মীরা কুমার জানান, তাঁর কাছে ভারতীয় পার্লামেন্টারি ব্যবস্থার প্রশংসা করে পাকিস্তানের নেতারা জানিয়েছেন, বিলের খসড়া তৈরি থেকে শুরু করে পার্লামেন্টারি রীতিনীতি_সব কিছু তাঁরা শিখতে চান। ভারতের ব্যুরো অব পার্লামেন্টারি স্টাডিজের মতো গড়তে চান পাকিস্তানে একটি সংস্থা।
এর আগে একাধিকবার পাকিস্তানি এমপিদের প্রতিনিধিদল ভারত সফর করেছে। ঘুরে দেখেছেন পার্লামেন্ট। কিন্তু পার্লামেন্টারি প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। মীরা কুমার জানান, ফাহমিদা মির্জা এবার তাঁকে জানিয়েছেন, শিগগিইর বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তাঁদের।
ভারতও এ ব্যাপারে সাহায্য করতে রাজি আছে বলে জানিয়েছেন মীরা কুমার। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে ভিসা-সংক্রান্ত চুক্তি হওয়ার পর কিছুটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং একাধিকবার পাকিস্তানের নেতাদের কাছে বার্তা দিয়েছেন, মতপার্থক্যের বিষয়গুলো আলাদা করে রেখে যেসব ক্ষেত্রে একসঙ্গে এগোনো সম্ভব, সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করা হোক। দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়টির ওপর বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে ভারত। সূত্র : আনন্দবাজার।

No comments

Powered by Blogger.