আরব বিপ্লবের পালক পিতা by জামান সরদার
১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী আরব তরুণরা কীভাবে তাদের বয়সের চেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা একনায়কদের একের পর এক উৎখাত করছে_ এটা এখন অনেকের কাছে বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। আর চোখের সামনে তিউনিসিয়া, মিসর ও লিবিয়ার 'লৌহমানব'দের পরিণতি দেখার পর আরব বিশ্বের আতঙ্কিত শাসকদের কাছে তো সেটা জীবন-মরণ প্রশ্ন।
এর একটা সহজ উত্তরও আছে_ ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ প্রযুক্তিই আচ্ছন্ন আরবের প্রজ্জ্বলিত প্রজন্মের মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এক অর্থে ঠিক। কে না জানে যে, ফেসবুক ও টুইটারের মাধ্যমেই তরুণরা পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ করেছে, কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, আগুনঝরা ছবি, স্লোগান ছড়িয়ে দিয়েছে। এগুলো কি নিছক স্বতঃস্ফূর্ততা? নাকি নেপথ্যে কোনো সংগঠিত নেতৃত্ব আছে?
না, এখন পর্যন্ত এসব আন্দোলনের পেছনে সংগঠিত ও একক কোনো গোষ্ঠী খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে কারণে তিউনিসিয়ায় শেষ পর্যন্ত বেন আলির ঘনিষ্ঠ লোকজনই ক্ষমতায় রয়েছে। মিসরেও মোবারকের বিদায়ের পর তার অনুগত সেনাবাহিনী শাসনভার গ্রহণ করেছে। অনেকে বলছেন, লিবিয়াতেও এর পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে অন্য কথা_ আরবের দেশে দেশে এমন বিপ্লবের নেপথ্য নায়ক আসলে অবসরপ্রাপ্ত এক আমেরিকান অধ্যাপক ও একটিভিস্ট। তার নাম জেনে শার্প। ৮৩ বছর বয়সী ওই অধ্যাপক বোস্টনের এক সাদামাটা বাড়িতে থাকেন। আলবার্ট আইনস্টাইন ইনস্টিটিউট নামে তার একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তার কাজ হচ্ছে কীভাবে একনায়কদের তাড়াতে হয়, সে ব্যাপারে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং লেখালেখি করে ডজন ডজন ভাষায় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া। 'ফ্রম ডিকটেটরশিপ টু ডেমোক্রেসি' নামে তার একটি হ্যান্ডবুক রয়েছে। বিশ্বব্যাপী মুক্তিকামী তরুণদের মধ্যে সেটা খুবই জনপ্রিয়। মিয়ানমার ও ইরানে কিছুদিন আগে যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়ে গেল, তাতে ওই বই দেখা গেছে অনেক তরুণের হাতে। শার্পের আরেকটি বই 'সিভিলিয়ান-বেজড ডিফেন্স'ও নব্বই দশকের গোড়ায় পূর্ব ইউরোপে বেশ জনপ্রিয় ছিল। এখন জানা যাচ্ছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের কবল থেকে মুক্তির জন্য লিথুনিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়ায় সরকারিভাবেই ওই বইয়ের অনুবাদ সাধারণ মানুষের মধ্যে সরবরাহ করা হতো। তার আরেকটি বই হচ্ছে, 'অহিংস আন্দোলনের ১৯৮ উপায়'। বছর কয়েক আগে মধ্য ইউরোপের 'অরেঞ্জ বিপ্লব' ও এবারের মধ্যপ্রাচ্যে সংঘটিত 'জেসমিন বিপ্লবে' ওই বই খুব কাজে দিয়েছে বলে বলা হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, যে কারণে দুই আন্দোলনের মধ্যে পদ্ধতিগত মিলও অনেক। সিবিএস টেলিভিশনের 'বিপ্লবের ব্যবচ্ছেদ' নামে প্রামাণ্য চিত্রে কয়েকজন তরুণ বলেছেন, তারা কীভাবে জেনে শার্পের হ্যান্ডবুক পাঠ ও ব্যবহার করেছেন। পূর্ব ও মধ্য ইউরোপের মতো মধ্যপ্রাচ্যেও দেখা গেছে, তরুণরা রাস্তায় নেমে এসে অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিক্ষোভ দেখিয়েছে; কিন্তু সহিংস হয়ে ওঠেনি। অনেক সময় উস্কানি সত্ত্বেও মাথা ঠাণ্ডা রেখে নিজেদের দাবির পক্ষে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়েছে_ জেনে শার্পের বাতলে দেওয়া ১৯৮ উপায়ের মধ্যে এটা হচ্ছে প্রধান কর্তব্য।
আরও নানা মিল মিলিয়ে দেখা যেতে পারে। জেনে শার্প উপদেশ দেন, স্বৈরাচার হটাতে যত বেশি সম্ভব প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থাকতে হবে। প্রয়োজনে তাঁবু গেড়ে। নিজেদের চাঙ্গা রাখতে কেবল বিক্ষোভ নয়। মাঝে মধ্যে গান, নাচ, ঠাট্টা-তামাশা চালিয়ে যেতে হবে। বলাবাহুল্য, মধ্যপ্রাচ্যের আন্দোলনে এর সবকিছুই চোখে পড়ছে। তাহলে কি জেনে শার্পই মধ্যপ্রাচ্যের আন্দোলনের পালক পিতা?
না, এখন পর্যন্ত এসব আন্দোলনের পেছনে সংগঠিত ও একক কোনো গোষ্ঠী খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে কারণে তিউনিসিয়ায় শেষ পর্যন্ত বেন আলির ঘনিষ্ঠ লোকজনই ক্ষমতায় রয়েছে। মিসরেও মোবারকের বিদায়ের পর তার অনুগত সেনাবাহিনী শাসনভার গ্রহণ করেছে। অনেকে বলছেন, লিবিয়াতেও এর পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে অন্য কথা_ আরবের দেশে দেশে এমন বিপ্লবের নেপথ্য নায়ক আসলে অবসরপ্রাপ্ত এক আমেরিকান অধ্যাপক ও একটিভিস্ট। তার নাম জেনে শার্প। ৮৩ বছর বয়সী ওই অধ্যাপক বোস্টনের এক সাদামাটা বাড়িতে থাকেন। আলবার্ট আইনস্টাইন ইনস্টিটিউট নামে তার একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তার কাজ হচ্ছে কীভাবে একনায়কদের তাড়াতে হয়, সে ব্যাপারে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং লেখালেখি করে ডজন ডজন ভাষায় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া। 'ফ্রম ডিকটেটরশিপ টু ডেমোক্রেসি' নামে তার একটি হ্যান্ডবুক রয়েছে। বিশ্বব্যাপী মুক্তিকামী তরুণদের মধ্যে সেটা খুবই জনপ্রিয়। মিয়ানমার ও ইরানে কিছুদিন আগে যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়ে গেল, তাতে ওই বই দেখা গেছে অনেক তরুণের হাতে। শার্পের আরেকটি বই 'সিভিলিয়ান-বেজড ডিফেন্স'ও নব্বই দশকের গোড়ায় পূর্ব ইউরোপে বেশ জনপ্রিয় ছিল। এখন জানা যাচ্ছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের কবল থেকে মুক্তির জন্য লিথুনিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়ায় সরকারিভাবেই ওই বইয়ের অনুবাদ সাধারণ মানুষের মধ্যে সরবরাহ করা হতো। তার আরেকটি বই হচ্ছে, 'অহিংস আন্দোলনের ১৯৮ উপায়'। বছর কয়েক আগে মধ্য ইউরোপের 'অরেঞ্জ বিপ্লব' ও এবারের মধ্যপ্রাচ্যে সংঘটিত 'জেসমিন বিপ্লবে' ওই বই খুব কাজে দিয়েছে বলে বলা হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, যে কারণে দুই আন্দোলনের মধ্যে পদ্ধতিগত মিলও অনেক। সিবিএস টেলিভিশনের 'বিপ্লবের ব্যবচ্ছেদ' নামে প্রামাণ্য চিত্রে কয়েকজন তরুণ বলেছেন, তারা কীভাবে জেনে শার্পের হ্যান্ডবুক পাঠ ও ব্যবহার করেছেন। পূর্ব ও মধ্য ইউরোপের মতো মধ্যপ্রাচ্যেও দেখা গেছে, তরুণরা রাস্তায় নেমে এসে অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিক্ষোভ দেখিয়েছে; কিন্তু সহিংস হয়ে ওঠেনি। অনেক সময় উস্কানি সত্ত্বেও মাথা ঠাণ্ডা রেখে নিজেদের দাবির পক্ষে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়েছে_ জেনে শার্পের বাতলে দেওয়া ১৯৮ উপায়ের মধ্যে এটা হচ্ছে প্রধান কর্তব্য।
আরও নানা মিল মিলিয়ে দেখা যেতে পারে। জেনে শার্প উপদেশ দেন, স্বৈরাচার হটাতে যত বেশি সম্ভব প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থাকতে হবে। প্রয়োজনে তাঁবু গেড়ে। নিজেদের চাঙ্গা রাখতে কেবল বিক্ষোভ নয়। মাঝে মধ্যে গান, নাচ, ঠাট্টা-তামাশা চালিয়ে যেতে হবে। বলাবাহুল্য, মধ্যপ্রাচ্যের আন্দোলনে এর সবকিছুই চোখে পড়ছে। তাহলে কি জেনে শার্পই মধ্যপ্রাচ্যের আন্দোলনের পালক পিতা?
No comments